যাবেন নাকি প্রকৃতির সান্নিধ্যে? ছবি: সংগৃহীত।
কেরলের দম্পতি পলসন ও এলজা দু’জনেই প্রকৃতিপ্রেমী। চিরকালই তাঁদের ইচ্ছা ছিল প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকার। স্বপ্নকে সত্যি করতে জঙ্গলের মধ্যেই গাছের উপর বাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করলেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পলসন বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন দুবাইতে কাটানোর পর আমি আর আমার বৌ ভারতে ফিরে আসতে চেয়েছিলাম। আমরা ভারতে যে সময়টা কাটিয়েছিলাম, সেটা যেন আমাদের সন্তানরাও উপভোগ করতে পারে। সেটাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। তার সঙ্গে প্রকৃতির সান্নিধ্যেও থাকতে চেয়েছিলাম আমরা।’’ এলজা বললেন, ‘‘দুবাইতে আমরা ভালই ছিলাম কিন্তু ভারতের মতো সবুজে ঘেরা প্রান্তর নেই। তাই প্রায়ই আমরা আলোচনা করতাম মুন্নারের ফিরে আসার কথা।’’
পলসন ও এলজার চার সন্তান। তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা সকলেই প্রকৃতির বিষয়ে বেশ সচেতন। বহু বছর আগে মুন্নারের খুব কাছে দবগিরি নামক জায়গায় একটা জমি কিনেছিলেন। দুবাই থেকে ফিরে সেই জমিতেই ‘ট্রি হাউ়জ়’ বানানোর পরিকল্পনা করেন দম্পতি। পলসন বলেন, ‘‘আমার দাদু জমিটি কিনে সেখানকার একটা গাছও কাটেননি। সেখানে তিনি চাষবাস শুরু করেন। তিনিও তাঁর আমলে গাছের উপর একটি ওয়াচটাওয়ার তৈরি করেন, যাতে কোনও বন্যপ্রাণী গাছের ক্ষতি না করতে পারে। সেই ওয়াচ টাওয়ারে উঠে আমরা কতই না মজা করতাম। আমিও দাদুর মতোই ট্রি হাউজ় বানাতে চেয়েছিলাম। তবে শুধু নিজের বাচ্চাদের জন্যই নয়, সকলের জন্য।’’ এলজার বলে উঠলেন, ‘‘২০১২ সালে যখন আমরা দুবাই থেকে মুন্নারে এলাম, তখন থেকেই ভ্রমণের জায়গা হিসাবে বেশ পরিচিতি লাভ করছিল। সকলেই গাছ কেটে বড় বড় হোটেল তৈরি করার কাজ শুরু করছিলেন। আমরাও ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছিলাম বটে। তবে কখনওই গাছ কেটে নয়। সেখান থেকেই ট্রি হাউজ় বানানোর কথা আমাদের মাথায় আসে।’’
ট্রি হাউজ়টি তৈরি করতে তাঁরা নানা গবেষণা করেন। তার পর ৪০০ বছর পুরোনো একটি কালোজামের গাছ বেছে নেন। ১০ ফুট উঁচু দোতলা বাড়িটিতে আছে ৪টি ঘর, সব ক’টা ঘরের সঙ্গেই আলাদা স্নানঘর আছে। বাড়িটি তৈরি করতে কোনও কৃত্রিম জিনিস ব্যবহার করা হয়নি। বাড়ির চারপাশের জমিতেই তাঁরা চাষবাস শুরু করেছেন। বাড়ির একতলা থেকে চোখে পড়ে সুদূর বৃস্তিত চাষের জমি আর দোতলা থেকে দেখা যায়, পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য। পলসন বলেন, ‘‘যে কোনও পরিবেশপ্রেমী আমাদের বাড়িতে এসে থাকতে পারেন। জঙ্গলের মাঝেই বাড়িতে বানানো খাবারের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। আমরা চারপাশটা ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থাও করে থাকি। সবুজে ঘেরা চারপাশ দেখলে মন ভাল হবেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy