দক্ষিণবঙ্গের তিন চিড়িয়াখানা ঘুুরে নিতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতার মানুষের কাছে চিড়িয়াখানা বলতেই প্রথমেই মাথায় আসে আলিপুর চিড়িয়াখানার কথা। বহু পুরনো এই চিড়িয়াখানার ব্যপ্তিও অনেক। বাঘ, সিংহ, হরিণ, সজারু-সহ অসংখ্য পাখি, সরীসৃপ সহ বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু রয়েছে এখানে। তবে, আলিপুর চিড়িয়াখানা ছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে ছোটখাটো চিড়িয়াখানা। এক একটি চিড়িয়াখানায় এক এক ধরনের বন্যপ্রাণ। শালগাছে ঘেরা ঝাড়গ্রামের চিড়িয়াখানায় গেলে দেখা মেলে চিতাবাঘের। গড়চুমুকের জ়ুলজিক্যাল গার্ডেনে দেখা মেলে বাঘরোলের। এক দিনের ছুটিতে ঘুরে আসতেই পারেন এই জায়গাগুলি থেকে। মোটেই নিরাশ হবেন না।
জঙ্গলমহল জ়ুলজিক্যাল পার্ক
ঝাড়গ্রাম শহরের পূর্বপ্রান্তে বনভূমির মধ্যে রয়েছে জঙ্গলমহল জ়ুলজিক্যাল গার্ডেন। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই পরিচিত। শালগাছে ঘেরা জঙ্গলে বিভিন্ন খাঁচায় রয়েছে বেশ কিছু জীবজন্তু। সাপ, গন্ধগোকুল, বাঁদর, হনুমান, মদনটাক পাখি, বন-মুরগি, ময়ূর, কালিজ ও গোল্ডেন ফিজ়্যান্ট, চিতাবাঘ রয়েছে এখানে। এ ছাড়াও রয়েছে নীলগাই, সম্বর। দেখা মেলে বনবিড়ালেরও। ২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে তৈরি চিড়িয়াখানাটি। এখানে ঘুরতে এলে বাড়তি পাওনা প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য।
সম্প্রতি পর্যটক আকর্ষণে ঝাড়গ্রামে ৬৪ একর জায়গায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে টাইগার সাফারি করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে ভবিষ্যতে টাইগার সাফারিরও সুযোগ মিলবে ঝাড়গ্রামেই।
কী ভাবে আসবেন
হাওড়া থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রামে আসতে পারেন। সেখান থেকে গাড়ি করে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, কনকদুর্গা মন্দিরের পাশাপাশি চিড়িয়াখানাটিও ঘুরে নিতে পারেন। শীতে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় চিড়িয়াখানায়। তবে বর্ষাতে সবুজ প্রকৃতির সান্নিধ্য ভালই লাগবে। ঝাড়গ্রামে থাকার একাধিক ছোট-বড় হোটেল রয়েছে।
বর্ধমান জ়ুলজিক্যাল পার্ক
১৪.৩১ হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছে বর্ধমান জ়ুলজিক্যাল গার্ডেন। এখানে চারটি চিতাবাঘ, সাদা শজারু (রাজ্যের আর কোনও চিড়িয়াখানায় নেই), ভালুক, বার্কিং ডিয়ার, স্পটেড ডিয়ার মিলিয়ে ১১৫টি হরিণ রয়েছে। রয়েছে কুমির, ময়ূর ও বাজ। উদ্ধার হওয়া বেশ কয়েকটি বাঁদরও আছে এখানে। ছায়াঘেরা জঙ্গলপথে বর্ধমান জ়ুলজিক্যাল পার্ক ঘুরে দেখার আনন্দই আলাদা। এই চিড়িয়াখানাটিকেও আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়।
কী ভাবে আসবেন
বর্ধমান স্টেশন থেকে মোটামুটি ৪ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে চিড়িয়াখানাটি। স্টেশনে নেমে অটো বা টোটো ভাড়া করে যাওয়া যায়। কলকাতা থেকে গিয়ে এক দিনে ঘুরেই ফিরে আসা যায়। চাইলে বর্ধমানে হোটেল পেয়ে যাবেন।
গড়চুমুক ডিয়ার পার্ক
হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় রয়েছে গড়চুমুক ডিয়ার পার্ক। পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ। ৫৮ গেটের কাছে গড়চুমুক ডিয়ার পার্কটি ক্রমশ পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে দেখা মেলে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণী বাঘরোল (ফিশিং ক্যাট)-এর। বাঘরোলের কৃত্রিম প্রজননক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে জায়গাটিকে। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে হিমালয়ান সজারু, কুমির, হরিণ -সহ অসংখ্য পাখি ও অন্যান্য জীবজন্তু। ৯.১ হেক্টর জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা এই পার্কে আরও জীবজন্তু আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
কী ভাবে যাবেন?
ট্রেনে উলুবেড়িয়া স্টেশনে এসে, সেখান থেকে কোনও গাড়ি ধরে বা বাসে পৌঁছে যাওয়া যায় ডিয়ার পার্কে। ধর্মতলা থেকে বাসেও আসা যায়। গাড়িতেও আসতে পারেন। গড়চুমুকে থাকার একাধিক জায়গা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy