ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে ভারতকে ৪-০-য় সিরিজ হারানোর লক্ষ্যে শুক্রবার নামলেও ম্যাকালামরা কিন্তু আগেই ‘হেরে’ বসে আছেন নিজেদের জাতীয় দলের কাছেই। তবে সেটা রাগবি। এক সপ্তাহ পরেই রাগবি সেভেনস্ ওয়ার্ল্ড সিরিজের ঝড় আছড়ে পড়বে ওয়েলিংটনে। এখন সেই উৎসবেই মাতোয়ারা শহর। তাই শুক্রবার ভারত খালি হাতে সিরিজ শেষ করতে বাধ্য হবে কি না, তা নিয়ে এই শহরে কারও মাথাব্যথা নেই।
ভারতীয় শিবিরের থিম-এর সঙ্গে এই পরিবেশটা অবশ্য মানানসই হওয়ার মতোই। ভারতীয়রা এখন পরিবেশের চাপ কাটিয়ে শেষ ম্যাচে জিততে মরিয়া। রবীন্দ্র জাডেজা যে ভাবে সাংবাদিক বৈঠকে এসে শোনালেন, “আমাদের প্যানিক দূরে সরিয়ে রেখে মাঠে নামতে হবে। তা হলেই পজিটিভ রেজাল্ট পাব”, তাতে এটা পরিষ্কার যে, এটা শুধু তাঁর নয়, গোটা দলেরই ভাবনা। ক্যাপ্টেন ধোনি আগের ম্যাচের পর বলেছিলেন, “পেসাররা এ বার একটু মাথা খাটিয়ে বল করুক।” বৃহস্পতিবার তাঁর দলের ‘স্যর’ যোগ করলেন ‘প্যানিক’ দূরে সরিয়ে রাখার শর্তও। কিন্তু যে দল ০-৩ পিছিয়ে ইতিমধ্যেই সিরিজ হেরে বসে আছে, তাদের কাছে এই কাজটা যে কতটা কঠিন, তা এখন ভাল মতোই টের পাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা।
পেসারদের কাঠগড়ায় তোলা হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মতোই এখানে ব্যাটসম্যানদের শর্ট বল খেলার ব্যর্থতাও চোখে পড়েছে বারবার। কিন্তু এই দুর্বলতা ঢাকতে ধোনি পুল মারার প্রবণতাকেই তাঁর দলের ব্যাটসম্যানদের স্বাভাবিক খেলা বলছেন। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু অনেকেই তা মানতে রাজি নন। যেমন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন পেসার সাইমন ডুল। তাঁর মন্তব্য, “নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে অনেকেই তাকে স্বাভাবিক খেলা বলে থাকে। কিন্তু ‘আমি এ ভাবে খেলি বা ও ভাবে দলকে ব্যাট করতে বলি’ এমন কথা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বলা যায় না। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করতে হয়। পরিবেশ বিচার করে খেলতে হয়। নিউজিল্যান্ডের মাঠে শুধু পুল করার প্রবণতা নিয়ে ব্যাট করাটা ভুল।”
কোচ ডানকান ফ্লেচারকে দেখে আবার মনে হচ্ছে প্রায় হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছেন। বৃহস্পতিবার বেসিন রিজার্ভে নেট চলার সময়ই তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল। ধোনি যাঁদের নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন, সেই পেস বোলারদের ছেড়ে কোচ ফ্লেচার বেশ খানিকক্ষণ রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে হাত-পা নেড়ে অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করলেন। অশ্বিনের ‘ক্লাস’ শেষ করে তিনি গেলেন বিপন্ন ব্যাটসম্যান সুরেশ রায়নার দিকে। পেসাররা কিন্তু নেটে নিজেদের মতোই বল করে গেলেন।
জাডেজার কাছে যে জয়ের ফর্মুলা পাওয়া গেল, তা হল, “দুটো দলের মধ্যে বিরাট কোনও পার্থক্য নেই। আসলে ছোটখাটো ব্যাপারগুলো ফারাক গড়ে দিচ্ছে। আসলে ওয়ান ডে ক্রিকেটে দু-তিনটে ওভারই সব কিছু বদলে দিতে পারে। বাড়তি কিছু রান হজম করার পরে পাল্টা যথেষ্ট রান করতে না পারলেই সমস্যা। আমাদের এই সমস্যাটাই দূর করতে হবে।” সাইমন ডুল অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁর মতে, “নিউজিল্যান্ড একটা নির্দিষ্ট প্ল্যান অনুযায়ী খেলছে। উইলিয়ামসন এবং রস টেলরকে মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট বাঁচিয়ে রান তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভারতের ব্যাটিংয়ে কিন্তু এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও পারেনি ওরা। রোহিত শর্মা শুরু থেকেই ক্লান্ত। ধবন ফর্মে নেই। সব সময় বিরাট কোহলিই রান করে যাবে, এমন আশা করা অন্যায়। দু’দলের তফাতটা এখানেই।”
ইডেন পার্কে অশ্বিনের সঙ্গে সাহসী পার্টনারশিপ ও ম্যাচ টাইয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর হ্যামিল্টনেও তাঁর দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরির মাধ্যমে ফর্মে ফিরে এসেছেন জাডেজা। ফর্মে ফেরা নিয়ে এ দিন বললেন, “প্রথম দু’ম্যাচে রান বা উইকেট না পাওয়ার পর নিজের ভুলগুলোকে যথাসম্ভব ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করলাম। খাটলামও। এ ভাবেই নিজেকে মোটিভেট করি।” আর জাডেজা যেন এখন ভারতীয় শিবিরে মোটিভেটরের ভূমিকায়। যিনি তাঁর সতীর্থদের বলছেন, “আমাদের পজিটিভ হতে হবে এবং টেস্ট সিরিজের জন্য সঠিক মানসিকতা ধরে রাখতে হবে। একশো শতাংশ উজাড় করে দিয়ে এই ম্যাচটা জিততেই হবে।” এক নম্বরের মুকুট আগেই হারিয়েছেন ধোনিরা। শুক্রবার কি লজ্জা বাঁচানো যাবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy