Advertisement
০৬ জানুয়ারি ২০২৫

নতুনরা যোগ্যতা দেখিয়েছে বলেই আমরা আজ এখানে

খেলা শেষের পর ম্যাচ রেফারির সঙ্গে ক্যাপ্টেনদের বৈঠক, সাংবাদিক সম্মেলন সেরে কলকাতায় ফেরার বিমান ধরতে যাওয়ার তাড়া। এরই মাঝে আনন্দবাজার-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি এমন অনেক কথা বললেন, যা আগে কখনও বলেননি।খেলা শেষের পর ম্যাচ রেফারির সঙ্গে ক্যাপ্টেনদের বৈঠক, সাংবাদিক সম্মেলন সেরে কলকাতায় ফেরার বিমান ধরতে যাওয়ার তাড়া। এরই মাঝে আনন্দবাজার-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি এমন অনেক কথা বললেন, যা আগে কখনও বলেননি।

ম্যাচ শেষে টিম বাংলা। শুক্রবার গুয়াহাটিতে। ছবি: উজ্জ্বল দেব।

ম্যাচ শেষে টিম বাংলা। শুক্রবার গুয়াহাটিতে। ছবি: উজ্জ্বল দেব।

রাজীব ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

প্রশ্ন: এই মরসুমে সাতজন ক্রিকেটারের রঞ্জি অভিষেক হয়েছে। বাংলার ক্রিকেটকে নতুন প্রজন্মের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনাটা কি আগেই ছিল?

মনোজ: না ছিল না। আসলে পরিস্থিতি যে রকম এসেছে, সে রকমই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) খুব সাহায্য করেছে। ভরসা জুগিয়েছে। সারা মরসুমে কী ভাবে এগোতে হবে আমাদের তার কৌশলও ঠিক করে দিয়েছিল দাদি। আমাদের সামনে ছবিটা পরিষ্কার ছিল। শ্রীলঙ্কা সফরের আগেই জেনে যাই যে, আমাকেই ক্যাপ্টেনসি করতে হবে। দাদির এই সাপোর্টটা না পেলে আমরা এই জায়গায় আসতে পারতাম না।

প্রশ্ন: নেতৃত্বের দায়িত্ব আসছে জানার পর কি বিশেষ কোনও পরিকল্পনা করেছিলেন?

মনোজ: তার জন্য যথেষ্ট সময় পেলাম কোথায়? শুধু অতীতে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাই ছিল সম্বল। সেটাই কাজে লাগিয়েছি। পরে অবশ্য নিজেকে ডেভেলপ করেছি। নিজেই নিজের ক্যাপ্টেনসি নিয়ে অনেক ভাবনাচিন্তা করেছি। বিশেষ করে ম্যান ম্যানেজমেন্ট নিয়ে। কী করে দলের সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। তাদের চরিত্র, মানসিকতা অনুযায়ী কী ভাবে তাদের হ্যান্ডল করতে হবে। মানসিক ভাবে নিজেকে আরও শক্তিশালী আর ফ্লেক্সিবল করার চেষ্টা করেছি। পুরোটাই মনস্তাত্বিক উন্নতি।

প্রশ্ন: এই ব্যাপারে বিশেষ কারও কাছে কোনও সাহায্য পেয়েছেন?

মনোজ: না, সে রকম কারও না। নিজেই এগুলো নিয়ে ভেবেছি। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। বদলেছি। মাঝে মাঝে দাদির সঙ্গে ক্যাপ্টেনসি নিয়ে আলোচনা করি।

প্রশ্ন: দলের সতীর্থদের কাছ থেকে কী রকম সাহায্য পাচ্ছেন?

মনোজ: খুব ভাল। সবাই ভাল রেসপন্ড করেছে। পারফরম্যান্সও করে দেখিয়েছে সবাই। ঋদ্ধিমান, ওঝা, দিন্দার মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে নতুনরা ভাল মিশে গিয়েছে। তরুণরা খুব খাটে। ওদের জন্য আমাদের ফিল্ডিং এখন ভাল হচ্ছে। সে জন্যই তো নক আউটে উঠতে পারলাম।

প্রশ্ন: বাংলার ক্রিকেটে গত কুড়ি-পঁচিশ বছরে এতগুলো ক্রিকেটার একসঙ্গে প্রথম রঞ্জি ট্রফি খেলেছে বলে কারও মনে পড়ে না। প্রজন্মের পরিবর্তনই কি এ বারের এই সাফল্যের প্রধান রহস্য?

মনোজ: আসলে কী জানেন, ওদের যোগ্যতা আছে। কিন্তু তাদের সঠিক রাস্তাটা দেখানো দরকার, যা আমরা পারছিলাম না। সাইরাজ বাহুতুলে এসে সেটা শুরু করেছে। জয়দীপদা, রণদেবদাও সাহায্য করছে।

প্রশ্ন: এই দলটার মধ্যে কী এমন এসেছে, যা আগে ছিল না?

মনোজ: অনেক কিছু। মানসিকতা। পরিকল্পনা। নিজেদের এবং বিপক্ষকে ভাল ভাবে জানা এবং সেই অনুযায়ী কৌশল তৈরি করা। নিজেদের ক্ষমতার উপর ভরসা করার মাইন্ডসেট তৈরি হয়ে গিয়েছে। গত বার স্ট্র্যাটেজি ঠিক হয়নি। কর্নাটকের সঙ্গে যেমন গ্রিনটপে খেলা ঠিক হয়নি, তেমনই জম্মু-কাশ্মীর ম্যাচে ঠিক সময় ডিক্লেয়ার করার সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ, নিজেরা কতটা কী পারব, তার স্পষ্ট ধারণাই ছিল না। হোমওয়ার্কটা এ বার খুব ভাল হচ্ছে। বিপক্ষের প্লাস-মাইনাসগুলো আমরা খুব ভাল করে বুঝতে পারছি ও সেগুলো কাজে লাগাতে আমাদের কী কী করতে হবে, তার কনসেপ্ট সব সময় আমাদের কাছে পরিষ্কার থাকছে। গত বার এ সব কিছুই ছিল না। অনেক ভুল করেছি, যা এ বার করিনি।

প্রশ্ন: এত নতুন ছেলে। ওদের ম্যানেজ করাটা কঠিন না? অনেকেরই তো এই স্তরের ক্রিকেট খেলার ম্যাচিওরিটি আসেনি।

মনোজ: না, তেমন কঠিন হয়নি। আসলে ওদের কনফিডেন্স লেভেল কম ছিল। সেটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ক এথিক বাড়ানো হয়েছে। বেসিকটা আরও ভাল তৈরি করা হচ্ছে, যা প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খুব দরকার। কী ভাবে বিভিন্ন পরিস্থিতি সামলাতে হবে, তাও ওদের ভাল করে শেখানো হয়। এ জন্য আমাদের কোচিং টিমকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।

প্রশ্ন: যা শেখানো হচ্ছে নতুনদের, তা ওরা কেমন নিচ্ছে?

মনোজ: খুব ভাল ভাবে নিচ্ছে। আসলে ওরা উপলব্ধি করতে পারছে যে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলাটা কতটা স্পেশাল ব্যাপার। বুঝেছে বলেই ভাল খেলছে। এই স্তরে সুযোগ পাওয়া যে কঠিন, তাও বুঝেছে। সায়নশেখর মন্ডলের কামব্যাকটা ধরুন। প্রচুর নিন্দা সত্ত্বেও তো ঘুরে দাঁড়াল। অভিমন্যু, সুদীপ, গনি কত ভাল খেলছে। কোচরা রোজ ওদের বোঝাচ্ছে, যা খেলেছ, খেলেছ। ফের নতুন করে শুরু করো। এগুলোই বাংলাকে বদলে দিয়েছে।

প্রশ্ন: এ বার তো অন্য খেলা। ওয়ান ডে। অথচ হাতে মাত্র পাঁচ দিন।

মনোজ: মাত্র দু’দিন সময় পাব। এর মধ্যে আবার স্পনসরদের জন্য গোটা একটা দিন শুটিং। মানসিক ভাবে তৈরি হতে হবে। পজিটিভ থাকতে হবে। ব্যাটিং রোটেট করাটা গুরুত্বপূর্ণ আর বোলিংয়ে নতুন বলটাকে ঠিকমতো ব্যবহার করা। এগুলো ওদের বোঝাতে হবে। আশা করি ওরা মানিয়ে নিতে পারবে। আমাদের কোচিং স্টাফরা জানে কী করে এ রকম পরিস্থিতি সামলাতে হয়। ঠিক সামলে নেব, দেখবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy