আশা শেষ। অকল্যান্ডে বোল্ড ধোনি। ছবি: রয়টার্স।
সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল। শুধু রবিবার দিনের শেষ দিকে দুই ‘আর’-এর ফিরে যাওয়াতেই ম্যাচ হারতে হল ভারতকে। নিউজিল্যান্ডে প্রথম টেস্ট হেরে তার এমনই ব্যাখ্যা দিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
রোহিত শর্মা ও অজিঙ্ক রাহানেকে ফিরিয়ে দিয়েই ভারতকে জয় থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন ম্যাকালামরা, বলছেন ক্যাপ্টেন কুল। বিদেশে তাঁর নেতৃত্বে শেষ ১৩টির মধ্যে দশ নম্বর টেস্ট হারের পরও ঠান্ডা ধোনি। বরং এই হার থেকেও ইতিবাচক দিক খুঁজে চলেছেন। ভারত অধিনায়ক অবশ্য অভিযোগের তির ছুড়লেন আম্পায়ারের দিকেও। তাঁর বক্তব্য, ব্যাটের ভিতরের কানায় বল লাগা সত্ত্বেও রাহানেকে লেগ বিফোর দেন আম্পায়ার। এই সিদ্ধান্তটাই নাকি তাঁদের শেষ করে দিল!
ইডেন পার্কে রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে কী বললেন ধোনি?
তাঁর বক্তব্য, “আশি ওভারের পর পরপর দুটো উইকেট খোয়ালাম। তার মধ্যে একটা গোলমেলে সিদ্ধান্ত। তখনই আমাদের হাতে ৩০-৩৫ রান কম। ওই আউট দুটোই আমাদের জিততে দিল না।” এই ব্যর্থতার মধ্যেও অবশ্য ইতিবাচক দিক তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ভারত অধিনায়ক। বললেন, “এ রকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই থেকে একসঙ্গে তিন-চারটে টেস্টের অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। টার্গেটকে কী ভাবে প্রতিটি সেশনে ভাগ করে নেওয়া উচিত, সেটাই শেখা গেল। আশা করি আমাদের দলের অনেকেই এই ম্যাচটা থেকে এগুলো শিখেছে।” এই সফরে যে খুব কম সময়ই তাঁরা সুবিধাজনক জায়াগায় ছিলেন, এই ধারণা প্রায় উড়িয়ে দিয়ে ধোনি বলেন, “আমরা এই সিরিজে বহুবারই ভাল জায়গায় ছিলাম। ওয়ান ডে-তেও। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারিনি। হয়তো আমাদের এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। দ্বিতীয় টেস্টে এ রকম অবস্থায় পড়লে তা নিশ্চয়ই কাজে লাগাতে পারব।”
ক্রিজে জমে গিয়েও খারাপ স্ট্রোক খেলে বিরাট কোহলির আউটের প্রসঙ্গ ওঠায় ভবিষ্যতের ক্যাপ্টেনকে আড়াল করেই ধোনি বলেন, “ওর উইকেটের গুরুত্ব আমরা সবাই জানি। কিন্তু শুধু ওর আউট নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। ৮০ ওভারের পর থেকে তো আমাদের নিয়মিত উইকেট পড়েছে। দ্বিতীয় নতুন বল প্রথম পাঁচ-ছ’ওভার বেশ মুভ করছিল। আমরা যদি ওই সময়ে ও ভাবে উইকেট ছুড়ে দিয়ে না আসতাম, তা হলে বাকি ৪০ রানও তুলে ফেলতাম। তা ছাড়া ঠিক ওই সময় আম্পায়ারের একটা বাজে সিদ্ধান্তেরও শিকার হতে হল। তখন অনেক কিছু আমাদের বিরুদ্ধে গেল।”
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে বেশ খুশি ভারতীয় দলের অধিনায়ক। বলেন, “প্রথম ইনিংসে আমাদের বোলিং ভাল হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ওরা যা করে দেখাল, তা গত দু-তিন বছরে সেরা। বিশেষ করে এই রকম উইকেটে, যেখানে ওদের সাহায্য পাওয়ার কিছু নেই। বোলাররাই এই ম্যাচে আমাদের ফিরিয়ে এনেছিল। রানটা তাড়া করে জিততেও পারতাম।” প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা নিয়ে ধোনি বললেন, “অনেক লুজ বল দিয়েছি আমরা। দু’জন ব্যাটসম্যান ক্রিজে জমে গেলে এই উইকেটে বড় রান না করার কিছু নেই। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কী করল, তা তো দেখলেনই।” প্রশংসা করেন ভারতীয়দের মধ্যে একমাত্র সেঞ্চুরিকারী শিখর ধবনেরও। “এই ইনিংসের পর ওর আত্মবিশ্বাস নিশ্চয়ই বাড়বে,” আশা অধিনায়কের।
হাতে গোটা একটা দিন পড়ে থাকা সত্ত্বেও এ দিন শেষ দিকে তাঁর ও রবীন্দ্র জাডেজার অল আউট আক্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে ধোনি বলেন, “ওই সময়ে নিউজিল্যান্ড ছন্দ পেয়ে গিয়েছিল। আমাদের এ ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না। উইকেট পাটা হয়ে গিয়েছিল, বলের পালিশও ছিল। কিন্তু ওদের মাথায় চড়তে দেওয়া যাবে না, তখন এটাই ছিল আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। আমরা দ্রুত বেশ কিছু রানও পেয়ে যাই। ঠিক করি, এ ভাবে আরও ২৫-৩০ রান তুলে ফেলতে পারলে তার পর গতি কমিয়ে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকব। কিন্তু জাডেজা হঠাৎ আউট হয়ে যাওয়ায় সব গণ্ডগোল হয়ে গেল। টেলএন্ডারদের পক্ষে এই কাজটা সহজ নয়। চল্লিশ রানটা তখন অনেক।”
পরবর্তী টেস্টের জন্য ওয়েলিংটনে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাচ্ছে তাঁর দল, দাবি ধোনির। কিন্তু চিন্তা একটা ব্যাপারেই, উইকেট। “সবুজ উইকেট পেলে তো আমাদের পেসাররা ভাল বল করবে। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা?” প্রশ্ন ধোনির। আগামী কয়েক দিন এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজতে হবে তাঁকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy