ব্যাটসম্যানদের বোধহয় একটু বেশিই দোষারোপ করা হচ্ছে। মানছি ওরা ঠিক সময়ে বড় লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না। ওপেনাররা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, তাও মানছি। চার নম্বর জায়গাটা নিয়ে যে সংশয় এখনও কাটেনি, তাও অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু ওরা তো প্রতি ম্যাচেই ৫০ ওভারে ২৭৫-এর উপর রান তুলছে! তা হলে? আসলে গোলমালটা অন্য জায়গায় এবং সে জন্য বোলারদের দিকে আঙুল তুলতেই হবে।
ধোনি সে দিন হ্যামিল্টনের ম্যাচের পর দলের পেসারদের নিয়ে তার ক্ষোভটা উগরে না দিয়ে আর পারল না। স্পিনাররা সে যাত্রায় পার পেয়ে গেলেও ওদের কাছে কিন্তু এটা সাময়িক স্বস্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। পুরো বোলিং বিভাগকেই এই দোষের বড় অংশীদার হতে হবে। তারা উৎসাহব্যঞ্জক কিছু না করা সত্ত্বেও হয়তো এক ডজন তরুণ ভারতীয় পেসারের নামের তালিকা মেলে ধরে অনেকে প্রশ্ন তুলবেন, এদের কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? যা অবস্থা, তাতে যে-ই দলে আসুক না কেন, ফল এ রকমই হবে।
ব্যাপারটা একটু তলিয়ে ভাবা দরকার। ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভারতের বোলিং কোনও দিনই খুব একটা ভাল ছিল না। ধোনি দলের রক্ষণাত্মক কৌশল তৈরি করার সময় বরাবর তার বোলারদের জন্য আলাদা এবং নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে দিয়েছে এবং এই পরিকল্পনার মধ্যে প্রচুর খুঁটিনাটি বলে দেওয়া থাকে। তাতে বিপক্ষ বেশি উইকেট খোয়ায়নি ঠিকই, কিন্তু রানও তেমন পায়নি। সে জন্যই ভারত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে। নিউজিল্যান্ডে ভারতীয় বোলাররা যে রকম সমানে ওয়াইড ও শর্ট বল করে চলেছে এবং স্টাম্পের দু’দিকেই বল করে চলেছে, তাতে আক্রমণাত্মক বা রক্ষণাত্মকযে কোনও রকম ফিল্ডিংই সাজানো কঠিন। ভারতীয় বোলিংয়ের হাল এখন এ রকমই। আত্মবিশ্বাসও তলানিতে ঠেকেছে ওদের। তাও এমন একটা সময়ে, যখন সাড়ে তিনশো রান নিয়েও ওয়ান ডে ম্যাচ জেতা যায় কি না, এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। গত বছর মোহালিতে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটা মনে নেই? (প্রথমে ৩০৩ করেও ভারত চার উইকেটে হেরে যায়।)
এখন সামনে একটাই রাস্তা। ভাল স্ট্রাইক বোলার খুঁজে বের করো। একঝাঁক প্রতিভাবান স্ট্রাইক বোলার, যাদের বেছে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে হবে। ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টির ‘ইকোনমি বোলিং’-এর থিওরিকে দূরে সরিয়ে রেখে এদের গড়ে তোলা দরকার। এ ক্ষেত্রে চটজলদি সমাধান কিন্তু মোটেই কাজে আসবে না। বরং এর ফলে মহম্মদ শামির মতো টগবগে ঘোড়ারা নিজেদের ঠিক রাস্তায় রাখতে বাধ্য হবে। কয়েক দিন পরেই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিতে পারবে না। নিঃসন্দেহে, অনেক সময় লাগবে এর জন্য। এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নেওয়াই এর প্রথম ধাপ। যেটা করে ধোনি প্রথম পদক্ষেপটা অন্তত নিয়েছে।
সমস্যা আছে দলের ব্যাটিংয়েও। চেতেশ্বর পূজারাকে আনা হচ্ছে না কেন? ওকে ওয়ান ডে দলে না নেওয়ার যুক্তিটা কিন্তু বেশ দূর্বল। বরং ওকে খেলানোর কারণগুলোই এ ক্ষেত্রে অনেক বেশি যুক্তিপূর্ণ। পরবর্তী বিশ্বকাপে যদি ও ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে ওঠে, তা হলে আমি অবাক হব না। কোহলির মতো ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপে আর একজন ‘টেকনিশিয়ান’ প্রয়োজন, যে সারা ইনিংস ব্যাট করে যেতে পারে। পূজারা সেই ধরনেরই ব্যাটসম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy