পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বলতে শুনলাম সিরিজ জেতার পর ভারত ম্যাচটা হালকা ভাবে নিয়েছিল, যার দাম চুকোতে হল হেডিংলেতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটা টিম যদি নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সের চেয়ে দু’শতাংশও কম দেয়, হেরে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
ইংল্যান্ড যে ভাবে খেলল, তাতে ওদের বাহবা দিতেই হবে। স্কোরবোর্ডে ২৯৪ তুলে দিয়ে ভারতকে ওরা চাপে ফেলে দিতে পেরেছিল, যা কি না আগের ম্যাচগুলোয় ওরা পারেনি। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ভারতও ভাল বল করেনি। যার সুবিধেটা রুট আর বাটলার পুরোপুরি নিয়ে গেল। ওরা দু’জন দেখলাম খুব সহজে ফাস্ট বোলার আর স্পিনারদের খেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে-র সময়। পুরো গ্রীষ্ম জুড়ে রুট ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানে না যে, সিরিজের আগে এই গ্রীষ্মে ও সাদা বলে ম্যাচ খেলেছে মোটে একটা।
মর্গ্যান ফর্মে না থাকায় ইংল্যান্ডের জন্য বাটলারের ভূমিকাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাটলারের সিরিজটা ভাল না গেলেও ও এমন একটা প্লেয়ার যে কি না শেষ পনেরো ওভারে মাঠের যে কোনও জায়গায় বোলারকে ফেলে দিতে পারে। মাঝের ওভারগুলোয় ইংল্যান্ডের বাটলারের মতো প্লেয়ারদের দরকার। তবে সিরিজ বেঁচে থাকা অবস্থায় ওদের জ্বলে উঠতে হবে। ডেড রাবারে নয়।
ভারতীয় ব্যাটিংকেও বেশ ভঙ্গুর দেখাল। ওদের উচিত ছিল শেষ দশ ওভারের জন্য উইকেট হাতে রাখা। যেহেতু দু’টো টিমই ডেথ বোলিং নিয়ে ভোগে। কিন্তু রায়ডু আর জাডেজা বাদে কাউকে দেখলাম না সময় নিয়ে ব্যাট করতে। রায়ডু নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরিটা করল। ব্যাটিং ভালই করেছে, যদিও বেশ কয়েকটা শট মারতে দেখলাম যা কি না কপিবুকের বাইরে। অতিরিক্ত টি-টোয়েন্টি খেলার ফল ওটা। জাডেজার দুর্ভাগ্য যে ও সেঞ্চুরি পেল না। টেস্ট ক্রিকেটে ওর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু ওয়ান ডে ক্রিকেটে আমার তালিকায় জাডেজা কিন্তু উপরের দিকেই থাকবে। ওয়ান ডে-তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উইকেটসংখ্যায় ও ইতিমধ্যেই ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ। আসলে ভারতের একটা ম্যাচ জেতা না জেতা নির্ভর করে চেন্নাই চতুুর্ভুজের উপর। মানে, রায়না-ধোনি-জাডেজা-অশ্বিন কেমন করে, তার উপর।
ওয়ান ডে সিরিজে ভারতের ৩-১ জেতা, আর টেস্টে ইংল্যান্ডের একই ফলে জেতা থেকে বোঝা যাচ্ছে দু’টো সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটকে কী ভাবে দেখছে দুটো দেশ। ইংল্যান্ড সীমিত ওভারের চেয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, ভারত পছন্দ করছে উল্টোটা। বিশেষ করে দেশের বাইরে। টেস্ট আর ওয়ান ডে সিরিজ তাই দু’টো টিমকেই তাদের দুর্বলতা নিয়ে বার্তা দিয়ে রাখল। ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে আমি একমত। ও বলেছিল, ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের উচিত ভারতীয় উইকেটে আরও বেশি খেলা। সত্যি, ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের শেখা উচিত কী ভাবে শুরু থেকে বলকে আক্রমণ করতে হয়। আইপিএল একটু খেললে ওদের সুবিধেই হবে বলে মনে হয়। ঠিক তেমনই পূজারা-রাহানেরা যদি কাউন্টি ক্রিকেট খেলে তা হলে টেস্টে কী ভাবে কী করতে হবে, তার অভিজ্ঞতা ওদের হয়ে থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy