যেন বিশ্বকাপটা হাতের মুঠোয়। সোমবার নেলসনে
আয়ারল্যান্ড নামটা খেলার মাঠে উঠলে দশের মধ্যে হয়তো সাত জনের মনে আসবে রয় কিন-এর কথা। প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ক্যাপ্টেন। ইপিএল-সহ যাঁর নেতৃত্বে এক সময় ইউরোপিয়ান ফুটবল কাঁপিয়েছে বিখ্যাত ম্যান ইউ। কিংবা বড়জোর মনে পড়বে রাগবিতে আইরিশ জাতীয় দলের দাপট।
সেখানে আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট অনেক দূরের গ্রহ। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বকাপ এলেই সেই পুঁচকে গ্রহ যেন হয়ে ওঠে সূর্যের মতো মহানক্ষত্র! নইলে কেন আয়ারল্যান্ডের কাছে কোনও বিশ্বকাপে ধূলিস্যাৎ হবে পাকিস্তানের গর্ব! কিংবা কোনও বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের গর্ব!
কিংবা আজকের মতো ধূলিস্যাৎ হবে ক্যারিবিয়ান গর্ব! যারা প্রথম দুই বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। এই মুহূর্তে পুরোপুরি না হোক, একটা সময়ের ক্রিকেটীয় মহাশক্তি তো বটেই। আর ক্রিকেট-আভিজাত্যের বিচারে তো এখনও ক্রিস গেইল-মার্লন স্যামুয়েলস-ডারেন স্যামি-আন্দ্রে রাসেলরা কোনও জন মুনি-ম্যাক্স সোরেনসেন-পল স্টার্লিংয়ের সামনে এক একজন গোলিয়াথই। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের মেরেকেটে ছ’হাজার সিটের অদ্ভুত সুন্দর নতুন স্টেডিয়ামে ২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথম অঘটন ঘটালেন আয়ারল্যান্ড-ডেভিডরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিনশোর বেশি টার্গেটকে সফল তাড়া করা এডি জয়েসরা তখন নেলসন গ্রাউন্ডের মতোই সুন্দর!
গেইলরা বোধহয় ভাবতেও পারেননি তাঁদের বিশ্বকাপ অভিযান এমন বেখাপ্পা ভাবে শুরু হবে। লজ্জার হারে আপাত-সহজ কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা কণ্টকিত হয়ে উঠবে। অথচ টপ অর্ডারের বিপর্যয় (৮৭-৫) সামলে টিমকে ৫০ ওভারে ৩০৪-৭-এ পৌঁছে দেন লেন্ডল সিমন্স (১০২) আর স্যামি (৮৯)। কে জানত, প্রাক্তন তারকা ক্যারিবিয়ান ওপেনার ফিল সিমন্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আয়ারল্যান্ড রানটা সহজে তুলে দেবে হাতে চার ওভারের বেশি রেখে! ছ’টা উইকেট হারিয়ে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বড় টিমের ঘাড় মটকানো নতুন কিছু নয়। ২০০৭-এ তারা পাকিস্তানের ছুটি করে দিয়েছিল গ্রুপ লিগেই। চার বছর আগে উপমহাদেশে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে কেভিন ও’ব্রায়েনের বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির সৌজন্যে আয়ারল্যান্ড হারিয়ে ক্রিকেটবিশ্বকে বুঝিয়েছিল, পাকিস্তান ম্যাচটা ফ্লুক ছিল না। আর আজ তারা নিজেদের ‘জায়ান্ট কিলার’ তকমাকেই পালিশ করে আরও ঝলমলে করল। সোমবার কেভিন ও’ব্রায়েন পারেননি। কিন্তু তাঁর ভাই নিল ও’ব্রায়েন (৬০ বলে অপরাজিত ৭৯) পেরেছেন। পল স্টার্লিং (৮৪ বলে ৯২) পেরেছেন। এডি জয়েস (৬৭ বলে ৮৪) পেরেছেন। যা মাঠের ভেতরে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করার পর ক্ষুব্ধ স্যামি কোনও রাখঢাক না রেখে বলে দিয়েছেন, “এই যদি দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দেশের খেলা হয়, তা হলে নিশ্চিত আমরা এখানে বেশি দিন থাকব না। তবে আসল কথা বোধহয়, ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে প্রায় সব কিছুই এখন যে রকম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে চলেছে, তাতে এখানে আমাদের বেশি দিন থাকাটা ন্যায্যও নয়!” অন্য দিকে গর্বিত আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড আজই ভবিষ্যদ্বাণী করে দিয়েছেন, “আমার বিশ্বাস আয়ার্ল্যান্ড এ বার কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে।”
তাই কী! তা হলে তো আয়ারল্যান্ডের রূপকথা এখানেই শেষ নয়! স্রেফ শুরু!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy