গলের কার পার্কে শ্রীমতি সঙ্গকারা। ছবি দেবাশিস সেন।
প্রশ্ন: সঙ্গকারার বিশেষ নামাঙ্কিত বক্সে ভিড় করে আপনারা বসছিলেন। আপনি আর পরিবারের বন্ধুরা। ওঁর ইনিংস যে হাফসেঞ্চুরির আগেই শেষ হয়ে গেল, এটা কতটা ধাক্কা দিয়েছে?
ইয়াহালি: খারাপ লেগেছে তো নিশ্চয়ই। আমরা আজ একটা বড় রানের আশায় বসেছিলাম। কিন্তু এটাই ক্রিকেট। সব সময় অনিশ্চিত। তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়।
প্র: কিন্তু তার চেয়েও হৃদয়বিদারক তো নিশ্চয়ই খেলা ছাড়াটা। এই যে এক ম্যাচ পরেই চিরতরে চলে যেতে হবে!
ইয়াহালি: এক দিন না এক দিন তো কোথাও না কোথাও মানুষকে দাঁড়ি টানতেই হয়। এখনই সেই মুহূর্তটা এসেছে। তা-ও এই মুহূর্তে পৌঁছনো হয়েছে অনেক ভাবনাচিন্তার পর। হুটহাট করে নয়।
প্র: পারিবারিক কোনও চাপ ছিল যে, অনেক খেলছ এ বার একটু দোকানপাট, সংসার দেখো?
ইয়াহালি: না, পরিবার কিছু ওর ঘাড়ে চাপায়নি। একান্তই সঙ্গার সিদ্ধান্ত। পরিবার ভেবে দেখেছে ওর কথা ঠিকই যে আর কত খেলবে। টানতে টানতে, টানারও তো একটা সীমা আছে।
প্র: কিন্তু সঙ্গা তো এখনও ভাল খেলছেন। নিয়মিত রান করছেন।
ইয়াহালি: ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, ইউ মাস্ট গো হোয়েন দ্য গোয়িং ইজ গুড। এই যে সবাই আঁকড়াতে চাইছে, বোর্ড বলছে যেও না, প্লেয়াররা বলছে আরও খেলো, এটাই সম্মানের সঙ্গে চলে যাওয়ার সেরা সময়।
প্র: সচিনের অবসর নেওয়া টিভিতে দেখেছিলেন। কেমন চোখে জল এসে গিয়েছিল ওঁর বিদায়বেলায়। কলম্বো টেস্টেও লোকে অনুমান করছে তেমনই আবেগঘন কিছু ঘটবে।
ইয়াহালি: সচিনেরটা আমি টিভিতে দেখিনি। কাগজে পড়েছি। তবে আমার মনে হয় সঙ্গার সঙ্গে সচিনের একটা তফাত হবে। সঙ্গা অনেক ধাপে ধাপে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। সচিনেরটা ছিল কম সময়ে নেওয়া। তাই সেখানে হয়তো ইমোশনটা বেশি ছিল।
প্র: তাঁর বিদায় নিয়ে বেশি মাতামাতি হওয়াটা নাকি সঙ্গার পছন্দ নয়?
ইয়াহালি: না। ও মনে করে এতে টিমের ভাল খেলার লক্ষ্য থেকে ফোকাসটা নড়ে যেতে পারে।
প্র: মাহেলার শেষ ম্যাচ আপনি দেখেছিলেন?
ইয়াহালি: অফকোর্স। মাহেলার ওয়াইফ আমার খুব বন্ধু। আমরা চার জন ভীষণ ক্লোজ। মাহেলা তো আসছে।
প্র: কোথায়?
ইয়াহালি: সঙ্গার লাস্ট ম্যাচ দেখতে ইংল্যান্ড থেকে উড়ে আসছে। এতটাই গভীর ওদের সম্পর্ক।
প্র: তা হলে তো কলম্বোয় বিশাল পার্টি দিতে হবে আপনাকে। সব ক্রিকেট উৎসব গিয়ে শেষ হবে ওখানে।
ইয়াহালি: পার্টির কোনও চান্সই নেই।
প্র: কেন?
ইয়াহালি: সঙ্গার ম্যাচ শেষ হওয়ার পরের দিনই লন্ডনের টিকিট। সারের সঙ্গে কন্ট্র্যাক্ট অনুযায়ী ওকে দ্রুত ফিরতে হবে।
পুনশ্চ: সাক্ষাৎকার শেষ করার আগে আবার বলছিলেন ইয়াহালি, ‘‘খুব ভেবেচিন্তে প্রোগ্রামিং করে সিদ্ধান্তটা নেওয়া। তাই দাউদাউ করা আবেগ এখানে দেখা দেবে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া অবসর মানে তো মৃত্যু নয়। রিটায়ারমেন্টের ও পারেও একটা জীবন আছে।’’
এই সময় তিনি সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন দেখে পাশে হাজির হলেন এক অস্ট্রেলিয়ান সমর্থক। পিছনে আরও কিছু দাঁড়িয়ে। এই লোকটি চলে এসেছে ইয়াহালির একদম পাশে কী কথা হচ্ছে শুনতে। মিসেস সঙ্গকারা হঠাৎই তাঁকে ইন্টারভিউ করতে শুরু করে দিলেন, ‘‘কী মনে হচ্ছে?’’ লোকটি বলল, ‘‘আমি অস্ট্রেলিয়ান হয়েও বলছি সঙ্গার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। ভেরি স্যাড। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ওর ইনিংসগুলো আমি কখনও ভুলব না।’’ ইয়াহালি এ বার হেসে ফেললেন, ‘‘আমি সাংবাদিক নই কিন্তু।’’ লোকটি বলল, তা হলে আপনি কে? ‘‘আমি হলাম মিসেস সঙ্গকারা। কুমার সম্পর্কে এতক্ষণ যে ভাল ভাল কথা বললেন তার জন্য পরিবারের তরফে ধন্যবাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy