লক্ষ্য: আমিরশাহির পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তৈরি ঋদ্ধি। ফাইল চিত্র
শেষ পাঁচ মাস বেরোতে পারেননি। বাড়িতে যতটা সম্ভব ট্রেনিং করে নিজেকে ছন্দে রাখার চেষ্টা করেছেন। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি কারণ আউটডোরে অনুশীলনে অনুমতি নেই। একেবারে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে উড়ে গিয়েই নেট শুরু করবেন ঋদ্ধিমান সাহা। ২০১৪-তে মরুদেশে খেলেছেন। সেই অভিজ্ঞতা কী রকম? পিচের চরিত্র কেমন হতে পারে? করোনা অতিমারির জেরে পরিবর্তিত নিয়মে খেলা কতটা কঠিন? সব কিছু নিয়েই আনন্দবাজারের সামনে অকপট ঋদ্ধিমান সাহা। বৃহস্পতিবার নেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক যা বললেন...
প্রশ্ন: আইপিএল এ বার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ২০১৪ সালে সেখানে খেলেছেন। অভিজ্ঞতা কী রকম?
ঋদ্ধিমান: আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ওখানকার গরমের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। বাতাসে আর্দ্রতা কম। হাওয়া দিলে বালি ওড়ে। মাঝেমধ্যে বালি চোখে ঢুকে যেতে পারে। সে সবের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।
প্রশ্ন: গরমে দুপুরের ম্যাচ খেলতে সমস্যা হবে না?
ঋদ্ধি: প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার প্রায় এক মাস আগে যাব। এত দিন আমিরশাহিতে থাকব বলে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে। গরমে আগেও খেলেছি। রাতের ম্যাচে খুব একটা সমস্যা হয় না।
প্রশ্ন: পিচের চরিত্র কী রকম হয় আমিরশাহিতে?
ঋদ্ধি: বেশির ভাগ ম্যাচ হাই স্কোরিং হয়। ব্যাটসম্যানেরা খুব সুবিধা পায়। শুষ্ক আবহাওয়ায় পিচে কোনও আর্দ্রতা থাকে না। ফলে পেসাররা খুব একটা সাহায্য পায় না। স্পিনাররা কিছুটা সাহায্য পেলেও পেতে পারে। আমার মনে হয়, এ বারের আইপিএলে ব্যাটসম্যানেরা আরও বেশি সুবিধা পাবে।
প্রশ্ন: সমর্থকেরা মাঠে প্রবেশ করার সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। আইপিএল কি আকর্ষণ হারাবে?
ঋদ্ধি: আইপিএল মানেই উন্মাদনা। সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ইডেনের গর্জন, চেন্নাইয়ের হলুদ স্রোত। এ সব দেখা যাবে না ভেবে অবশ্যই খারাপ লাগছে। আমরা ভাল কিছু করলে দর্শকেরা যে ভাবে আমাদের সঙ্গে উৎসবে ভেসে যেতেন, তা অবশ্যই উদ্বুদ্ধ করত। কিন্তু পরিস্থিতির জন্য সব কিছুই মেনে নিতে হবে।
প্রশ্ন: জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকতে হবে আপনাদের। আগের মতো বাইরে ঘুরতে পারবেন না। বাইরে গিয়ে খেতে পারবেন না। এমনকি সবার সঙ্গে বসে ডিনারও বন্ধ। সমস্যা হবে?
ঋদ্ধি: আগের মতো স্বাধীন ভাবে ঘোরাফেরা করতে পারব না ঠিকই। কিন্তু এটাও ভেবে দেখতে হবে যে, এই পরিস্থিতিকে অন্য কোনও সময়ের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। ক্রিকেট খেলার মধ্যেই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই করতে হবে। তার জন্য সব রকম সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি। আমরা বাইরে বেরিয়ে সংক্রমণ নিয়ে ফিরলে অনেকের মধ্যেই ছড়িয়ে যেতে পারে। দলের প্রত্যেকে সমস্যায় পড়বে। কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। তা ছাড়া আমরা ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি। সেটা যাতে সুষ্ঠু ভাবে করা যায়, তার জন্যই এত নিষেধাজ্ঞা। যা আমাদের মানতেই হবে।
আরও পড়ুন: জ়িজ়ু বনাম পেপ, স্বপ্নের দ্বৈরথ
প্রশ্ন: বলা হয়েছে, ড্রেসিংরুমে বেশি সময় কাটানো যাবে না। এক বারে পোশাক পরে মাঠে এসে সোজা নেমে পড়ো। ম্যাচের দিন সমস্যা হবে না?
ঋদ্ধি: এত দিন আমরা ম্যাচের আগে ওয়ার্ম-আপ করার জন্য আলাদা সেট পরতাম। এখন কী হবে সেটাই দেখার। দুবাইয়ের গরমে যে ড্রেস পরে প্র্যাক্টিস করব, তা পরে ম্যাচ খেলা যাবে না। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না। আগে ওখানে গিয়ে সমস্ত পরিস্থিতিটা তো দেখি। তার পরে না হয় বলা যেতে পারে।
প্রশ্ন: বলে থুতু ব্যবহার করা বন্ধ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এর প্রভাব পড়বে?
ঋদ্ধি: অনেকেই আছে যারা কুড়ি ওভারের মধ্যেই থুতু ব্যবহার করে বল এমন তৈরি করে দেবে, যা রিভার্স সুইং করতে বাধ্য। সেই প্রথা বন্ধ হওয়ায় কিছুটা প্রভাব তো অবশ্যই পড়বে। টেস্টে তার প্রভাব তো দেখা যাচ্ছেই।
প্রশ্ন: সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক এ বার ডেভিড ওয়ার্নার। তাঁর নেতৃত্বে খেলতে কতটা মুখিয়ে আছেন?
ঋদ্ধি: ওয়ার্নারের নেতৃত্বে আমি আগে খেলিনি। শুনেছি দলের মধ্যে খুবই ইতিবাচক আবহাওয়া তৈরি করে। নিজের আগ্রাসন ছড়িয়ে দেয় প্রত্যেকের মধ্যে। ওর নেতৃত্বেই ২০১৬-তে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সানরাইজার্স। এ বারও সেই লক্ষ্য নিয়েই হয়তো নামবে।
প্রশ্ন: বাড়িতে বাবার সঙ্গে ট্রেনিং করেছেন। দেওয়ালে বল ছুড়েও ক্যাচ প্র্যাক্টিস করেছেন। এ ভাবে নিজেকে ছন্দে রাখা সম্ভব?
ঋদ্ধি: একেবারেই পর্যাপ্ত ট্রেনিং করার সুযোগ পাইনি। বাড়ির মধ্যে আদৌ বেশি প্র্যাক্টিস করা সম্ভব কোথায়? নেট না করলে ব্যাটিংয়ে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, বোঝা যাবে না। এত দিন ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সে রকম যোগাযোগও নেই। অবশ্য সবারই একই অবস্থা। মরুদেশে গিয়ে যতটা সময় পাব, তার মধ্যেই ম্যাচ ফিট হয়ে উঠতে হবে।
প্রশ্ন: ব্যাগ গুছানো শুরু হয়ে গিয়েছে?
ঋদ্ধি: কবে যাচ্ছি, এখনও নিশ্চিত ভাবে জানি না। অগস্টের মাঝামাঝি সম্ভবত যাব। তবে আস্তে আস্তে প্রয়োজনীয় সব কিছু কিনে রাখছি। ক্রিকেট শুরু হওয়ার একটা উত্তেজনা রয়েছে। বাড়ি থেকে এত দিন পরে বেরোনোর সুযোগও পাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ভারত জয়ের অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে চান স্মিথ
প্রশ্ন: অনভয় ও আনভিকে এত দিন ছেড়ে থাকতে খারাপ লাগবে না?
ঋদ্ধি: শেষ পাঁচ মাস বাড়িতে থেকেছি। ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে প্রচুর সময় কাটিয়েছি। এখন প্রায় ৭৫ দিন ওদের ছেড়ে থাকতে হবে। দু’দিন আগেই ছেলের অন্নপ্রাশন হল। প্রত্যেক দিনই যেন নতুন কিছু শিখছে।
প্রশ্ন: অসম ও বিহারের বন্যায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কখন ঠিক করলেন নিজের জার্সি নিলাম করবেন?
ঋদ্ধি: অসম ও বিহারের ছবি দেখে সত্যি মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। একেই এই অতিমারিতে মানুষ নাজেহাল। তার উপর এমন বন্যা। অধিনায়ক বিরাটের অনুরোধে আমরা সবাই সাহায্য করার কথা ভেবেছি। সকলকেই অনুরোধ করব, অসম ও বিহারে বন্যা প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাঁদের সাহায্য করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy