মহড়া: ব্রাজিলের অনুশীলনে নেমার। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি
মনে হচ্ছে এ বারের বিশ্বকাপে রাশিয়া থেকে কাপ নিয়ে ফেরাটা খুব সহজ। কিন্তু আসলে কাজটা খুব কঠিন। এক মাসের একটা লম্বা টুর্নামেন্ট। যেখানে পর পর ম্যাচ। গত এক মাস ধরে আশঙ্কা, উদ্বেগ, আবেগ সব কিছুই রয়েছে বিশ্বকাপে। বিশ্বসেরা বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছেন। যাদের দেশের মানুষ আশা করেছিলেন, প্রিয় ফুটবলাররা বিশ্বকাপ নিয়ে দেশে ফিরবেন। যা সত্যিই দুঃখজনক। তা সে যাই হোক, ব্রাজিলের সামনে কিন্তু এ বার কাপ জেতার দুর্দান্ত সুযোগ এসেছে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বজয়ী দলে এক সময় খেলার সুযোগ পাওয়ার জন্য।
বিশ্বকাপের শেষ আটে যাওয়ার জন্য ব্রাজিল দলের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। ব্রাজিলের সঙ্গে বিশ্বের সেরা আরও সাতটি দেশ রয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে নেই জার্মানি। নেই আর্জেন্টিনা। চার বছর আগে এই দুই দলই কিন্তু ব্রাজিলে ফাইনাল খেলেছিল। এমনকি বিশ্ব ফুটবলের আর এক শক্তিশালী দেশ নেদারল্যান্ডসও যোগ্যতা অর্জন করেনি এ বারের বিশ্বকাপে।
গত বার বিশ্বকাপে যে চার দল সেমিফাইনালে গিয়েছিল, তার মধ্যে একমাত্র ব্রাজিল রয়েছে এ বারের কোয়ার্টার ফাইনালে। তাই একজন ব্রাজিলীয় হিসেবে গর্ব হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ বার ব্রাজিলের সামনে বেলজিয়াম। এই মুহূর্তে ব্রাজিল দলের কোনও দুর্বলতা খুঁজে পাওয়াটাই কঠিন। দলে যেমন তারকা ফুটবলারের ভিড়। তেমনই রয়েছে পরিশ্রমী ফুটবলাররাও। তাঁরা জানে এই ধরনের ম্যাচের গুরুত্ব বা কী ভাবে খেলতে হয়। এই মুহূর্তে ব্রাজিলের রক্ষণ যেমন জমাট, তেমনই প্রত্যেকেই পা থেকে বল বেরিয়ে গেলেই বিপক্ষের পা থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য দৌড়াচ্ছে সবাই।
আরও পড়ুন: হ্যারি কেনের আলোয় কাপ জয়ের স্বপ্ন ইংল্যান্ডের
সবার উপরে রয়েছে নেমার। গ্রুপ লিগে যে ফর্মে ছিল। তার চেয়ে অনেক ঝকঝকে ফর্মে নেমারকে দেখা যাচ্ছে নক-আউট ফর্মে। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে নেমার খেলুক নিজের ছন্দে। অন্যদের কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই। কারণ, যাঁরা নেমারের সমালোচনা করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই দেশে ফিরে গিয়েছেন। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে নেমারের যদি মনে হয় ড্রিবল করতে ইচ্ছে হচ্ছে, তা হলে তাই করুক। বিপক্ষ ফাউল করলে যদি পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়, তা হলে সেটাই করবে। কারণ এটাই সবাই করে। নেমার তুমি বিশ্বকাপজয়ীদের দেশ থেকে এসেছ। আর এই বিশ্বকাপে আমাদের দেশের মুখ। আর সেটাই অনেকের গাত্রদাহের কারণ। সমালোচনায় কান না দিয়ে, ধারাবাহিকতার শীর্ষে থেকে মন মাতানো ফুটবল খেলে দেশকে গর্বিত করো আজ।
বেলজিয়াম দলেও প্রতিভার ছড়াছড়ি। যাদের অনেক ফুটবলারই ইউরোপের সেরা দলগুলিতে খেলে। ব্রাজিলীয় ফুটবলারদের সম্বন্ধে তাই সম্যক ধারণাও রয়েছে ওদের। টাফ ফুটবল খেলতে জানে ওরা। একই সঙ্গে জানে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা কী ভাবে করতে হয়। কাজেই বেলজিয়াম যে নেমার ও তাঁর দলের দিকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে, তা বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, ব্রাজিল এই মুহূর্তে কোনও ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়। তিতের দল এই বিশ্বকাপে খেলতে দলগত সংহতির উপর ভিত্তি করে। যদি এই ছন্দ মাঠে বজায় থাকে, তা হলে যে কোনও চ্যালেঞ্জই জিতে ফিরতে পারে এই ব্রাজিল দল।
কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ায় এই ব্রাজিল দলের কোচ তিতেকে একটা বড়সড় ধন্যবাদ দিতেই হয়। আগামী তিন ম্যাচে ব্রাজিলের সামনে ভাগ্য কী ফল নিয়ে এসে দাঁড়ায়, তার মধ্যে ঢুকছি না। কিন্তু ব্রাজিলের একজন প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে বলতে পারি, ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও, তিতে ইউরোপের যে কোনও প্রথম সারির দলের হয়ে কোচিং করাতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হল, ব্রাজিলীয় কোচেরা দেশের বাইরে বেশি কোচিং করানোর প্রস্তাব পান না। ফুটবলাররাও মনে করেন, বিশ্বজুড়ে ব্রাজিলীয় কোচদের আরও কদর করা উচিত। আজকের দিনে ইউরোপে কাজ করারও অনেক সুযোগ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy