প্রস্তুতি: ব্রাজিলের অনুশীলনে থিয়াগো সিলভা, মারকুইনোস, রবের্তো ফিরমিনো-রা। রবিবার। ছবি: গেটি ইমেজেস।
এ আপনি কী করলেন লুইস ফিলিপ স্কোলারি? ২০০২ সালে আপনার কোচিংয়েই আমরা পঞ্চম বিশ্বকাপ জিতেছিলাম। আপনার প্রতি ব্রাজিলের মানুষের শ্রদ্ধা অপরিসীম। অথচ, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচের আগে নিজের দেশের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করলেন? হতে পারে মেক্সিকোর কোচ খুয়ান কার্লোস অসরি-র সঙ্গে আপনার দারুণ সম্পর্ক, তা বলে ব্রাজিলকে হারানোর ফর্মুলা তুলে দেবেন তাঁর হাতে!
রবিবার সকাল থেকেই স্কোলারিকে নিয়ে উত্তাপ বাড়ছে ব্রাজিলে। বিশ্বকাপজয়ী কোচ যে এ রকম করতে পারেন, কেউ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিল না। অনেকের মনে হয়েছিল, পুরো ব্যাপারটাই রটনা। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, সত্যিই স্কোলারি পরামর্শ দিয়েছেন মেক্সিকো কোচকে।
স্কোলারির কাণ্ডে অবাক হলেও খুব একটা চিন্তিত নই। তিতের কোচিংয়ে এই বিশ্বকাপে ব্রাজিল যা খেলছে, নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র), ফিলিপে কুটিনহো-দের নিয়ে স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত চার বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। ব্রাজিল জিতেছে তিন বার। ড্র হয়েছে একটি ম্যাচ। ২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে। সেই ম্যাচে নেমারদের কার্যত একাই আটকে দিয়েছিলেন মেক্সিকোর গোলরক্ষক গিজেরমো ওচোয়া। সোমবারও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে তিনি থাকবেন তিন কাঠির নীচে। তাই অনেকেই দেখলাম আতঙ্কিত। আমার মতে, দুশ্চিন্তা করার
কারণ নেই।
চার বছর আগের ব্রাজিলের সঙ্গে এ বারের দলটার কোন মিল নেই। তিতে দায়িত্ব নিয়েই সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। প্রথমত, স্কোলারির কোচিংয়ে ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড ছিলেন ফ্রেড। যাঁর লক্ষ্যই থাকত প্রান্ত থেকে উড়ে আসা বল হেড করে গোলে পাঠানো। তিতের ব্রাজিলে কুটিনহো, নেমার, গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও উইলিয়ানের মতো চার দুরন্ত ফুটবলার আছেন। যাঁরা নিজেরাই বল নিয়ে রক্ষণ ভেঙে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়তে পারেন। দূর পাল্লার শটে গোল করতে পারেন। তা-ই এ বার ওচোয়ার কাজ অনেক বেশি কঠিন।
তবে এ রকম ভাবার কোনও কারণ নেই যে, সহজেই ব্রাজিল ম্যাচটা জিতে যাবে। মেক্সিকোর কোচ তিন বছর আগেই সাও পাওলোর দায়িত্বে ছিলেন। ব্রাজিল ফুটবল সম্পর্কে ওঁর অগাধ জ্ঞান। বিশ্বকাপে প্রথম বার ব্রাজিলকে হারানোর জন্য মেক্সিকো সব রকম চেষ্টা করবে। তাই মনে হয় না ওরা অন্য দলগুলোর মতো কখনওই পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলবে। মেক্সিকোর আক্রমণভাগও খুব শক্তিশালী। হাভিয়ের ফার্নান্দেজ (চিচারিতো), ইয়েরবিং লোসানো দারুণ ফর্মে রয়েছেন। জার্মানির বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেও অঙ্ক কষে খেলেছিল। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না। শোনা যাচ্ছে, স্কোলারিও নাকি কার্লোসকে বুঝিয়েছেন, শুরুতে গোল খেয়ে গেলে ব্রাজিলের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। তাই মেক্সিকোর ফুটবলারদের উচিত প্রথম থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপানো।
ব্রাজিলের এই দল গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়লে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না বলে মানতে রাজি নই। আমার তো মনে হয়, গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়লেও চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। দরকার নেই ছক পরিবর্তন করে খেলারও। যে ভাবে এই বিশ্বকাপে এত দিন খেলেছেন উইলিয়ানরা, সেটাই ধরে রাখতে হবে। দলে খুব বেশি পরিবর্তনেরও পক্ষে নই। এই কারণেই সুস্থ হয়ে ওঠা মার্সেলো ভিয়েরাকে খেলানোর পক্ষপাতী নই আমি। মার্সেলোকে খেলানোটা ঝুঁকির হয়ে যাবে। ফের যদি চোট পান, তা হলে এই বিশ্বকাপে আর মাঠেই নামতে পারবেন না। তা ছাড়া ফিলিপে লুইস তো আগের ম্যাচে দারুণ খেলেছিলেন। আমার অনুমানই ঠিক, তিতে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথম একাদশে শুরু করছেন লুইস-ই।
আমার কেন জানি না মনে হচ্ছে, সোমবার নেমার একাই পার্থক্য গড় দেবেন। ওঁকে নিয়ে নানা রকম সমালোচনা হচ্ছে। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে দুরন্ত গোল করেই তার জবাব দেবেন নেমার। জবাব দেবেন স্কোলারির বিশ্বাসঘাতকতারও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy