স্বপ্নভঙ্গ: বেলজিয়ামের কাছে হারের পর বিধ্বস্ত নেমার। ছবি: রয়টার্স
বেলজিয়াম ২ : ব্রাজিল ১
বেলজিয়ামকে হারিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে উৎসব করতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ভাবিনি অভিশপ্ত কাজ়ানে ব্রাজিলেরও বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়ে যাবে। বেলজিয়াম গোলকিপার থিবো কুর্তোয়াই কার্যত আমাদের হারিয়ে দিলেন।
কাজ়ানে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে শুরুটা কিন্তু দুর্দান্ত করেছিল ব্রাজিল। আট মিনিটে নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে থিয়াগো সিলভার পুশ ধাক্কা খায় ক্রসবারে। ব্রাজিলের আক্রমণের ঝড়ে রীতিমতো অসহায় দেখাচ্ছিল বেলজিয়াম ডিফেন্ডারদের। কে ভেবেছিল, পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিপর্যয় নেমে আসবে। এডেন অ্যাজারের কর্নার বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেবেন কার্লোস কাজিমিরোর পরিবর্তে প্রথম দলে সুযোগ পাওয়া ফের্নান্দিনহো লুইস রোসা।
দ্বিতীয় গোলটার ক্ষেত্রেও আংশিক ভাবে দায়ী ফের্নান্দিনহো। ওঁকে নামানো হয়েছিল মাঝমাঠে বেলজিয়ামের ছন্দ নষ্ট করার জন্য। কিন্তু গোল করার জন্য নিজের জায়গা ছেড়ে বারবারই উঠে যাচ্ছিলেন বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে। ফলে মাঝমাঠ ও রক্ষণের মধ্যে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছিল। ৩১ মিনিটে সেটাই দুর্দান্ত ভাবে কাজে লাগাল বেলজিয়াম। রোমেলু লুকাকু বল নিয়ে উঠে পাস দিলেন কেভিন দে ব্রুইনকে। দুরন্ত শটে গোল করতে ভুল করেননি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি মিডফিল্ডার।
দুরন্ত: বেলজিয়ামের গোলরক্ষক থিবো কুর্তোয়া।
০-২ পিছিয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু জয়ের আশা ছাড়িনি। কিন্তু এই ধরনের বড় ম্যাচে সামান্য একটা ভুলই বিপর্যয় ডেকে আনে। নেমাররা এই ম্যাচে একের পর এক ভুল করে গেলেন। কেন বারবার বেলজিয়ামের পেনাল্টি বক্সের সামনে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছিলেন উইলিয়ান, রবের্তো ফির্মিনহো-রা? অথচ ৫৭ শতাংশ বলের দখল ছিল ফিলিপে কুটিনহোদের। ৫৫৭টির মধ্যে ৪৯২টি নিখুঁত পাস। শট নিয়েছিলেন ২৬টি। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল নয়টি শট। প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে অ্যাজারেরা পুরো ম্যাচে আটটি শট নেন। লক্ষ্যে শট তিনটি। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, আধিপত্য কাদের ছিল। রেকর্ড বুকে লেখা থাকবে ব্রাজিলকে ২-১ হারিয়ে ৩২ বছর পরে সেমিফাইনালে উঠল বেলজিয়াম। কেউ মনে রাখবে না ২০১৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দুর্ধর্ষ ফুটবল খেলেছে ব্রাজিল।
হতাশ করেছেন নেমারও। প্রথমার্ধে একেবারেই ছন্দে ছিলেন না। অকারণে পায়ে বল রাখছিলেন। সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেও একই কাজ করেছিলেন। সে দিন ম্যাচ রিপোর্টে লিখেছিলাম, নেমারের উচিত, দ্রুত পাস দিয়ে জায়গা নেওয়া। পায়ে বেশি ক্ষণ বল রাখার চেষ্টা করলে ভুল করবেন। পরের তিনটি ম্যাচে নিজেকে শুধরে নিয়েছিলেন। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে নেমারের ফের বল পায়ে রাখার প্রবণতা দেখলাম।
কাজ়ানের স্টেডিয়ামে ভগ্নহৃদয় ব্রাজিল সমর্থকেরা। ছবি: এএফপি
বেলজিয়ামকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। জাপানের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে ০-২ পিছিয়ে পড়েছিল। সেই ম্যাচে ওদের রক্ষণ ও মাঝমাঠের ফুটবলারদের মধ্যে কোনও বোঝাপড়া ছিল না। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সেই ভুল শুধরে নিয়েই বাজিমাত করলেন অ্যাজারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy