বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অদিতি স্বামী। ছবি: পিটিআই।
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তিরন্দাজিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন অদিতি গোপিচন্দ স্বামী। প্রথম ভারতীয় হিসাবে এই রেকর্ড গড়লেন মহারাষ্ট্রের সাতারায় গণিত শিক্ষকের মেয়ে। শুধু তা-ই নয়, সব থেকে কম বয়সে তিরন্দাজিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বরেকর্ডও করেছেন। ব্যক্তিগত বিভাগে কম্পাউন্ড ইভেন্টে সোনা জিতেছেন অদিতি।
অদিতির পরিবার নিজেদের গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সাতারায় চলে আসে অদিতির জন্যই। সাতারাতে বিভিন্ন ধরনের খেলার অ্যাকাডেমি ছিল। অদিতির বাবা গোপিচন্দ চেয়েছিলেন, মেয়ে কোনও একটি খেলার সঙ্গে যুক্ত হোক। তিনি নিজেও খেলার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। গোপিচন্দ বলেন, “আমি গ্রাম ছেড়েছিলাম একটাই কারণে। অদিতি যাতে খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। ছোটবেলায় ও খুব রোগা ছিল। যে খেলায় শক্তির প্রয়োজন বেশি হত, সেই সব খেলা পছন্দ করত না অদিতি। আমার মনে হয় ও তিরন্দাজি এই কারণেই বেছে নিয়েছিল যে, এই খেলায় শক্তির থেকে বেশি প্রয়োজন হয় পরিকল্পনার।”
সাতারায় একটি আখের ক্ষেতে ছিল তিরন্দাজির অ্যাকাডেমি। সেখানেই বেশির ভাগ সময় কাটাতেন অদিতি। কোচ প্রবীণ সাওয়ান্তের কাছে প্রশিক্ষণ নিতেন তিনি। শনি এবং রবিবার পাঁচ ঘণ্টা করে অনুশীলন করতেন অদিতি। বাকি দিনগুলিতে তিন ঘণ্টা করে। গোপিচন্দ তাঁকে উৎসাহ দিতেন। তিরন্দাজির ভিডিয়ো দেখাতেন। গোপিচন্দ বলেন, “পেশাদার একটা ধনুকের দাম আড়াই লক্ষ টাকা। তিরের জন্য খরচ হত ৫০ হাজার। এত দাম দিয়ে তির, ধনুক কেনার ক্ষমতা আমার ছিল না। সেই প্রথম বার ধার নিতে হয়েছিল আমাকে।”
কিন্তু নতুন তির, ধনুক কেনার পরেই করোনার জন্য লকডাউন হয়ে যায়। অ্যাকাডেমি বন্ধ হয়ে যায়। তাতেও অনুশীলন থামাননি অদিতি। বাড়ির পাশেই ফাঁকা জমিতে অনুশীলন শুরু করেন তিনি। অদিতির বাবা বলেন, “এক দিনও অনুশীলন বাদ দিত না অদিতি। তিরন্দাজিকে পেশা করবে ঠিক করার পর সত্যিই এক দিনও অনুশীলন বন্ধ করেনি ও। দীপাবলিতেও অনুশীলন করে সময় বার করে।”
এই অনুশীলনই অদিতিকে পাল্টে দিয়েছে। লকডাউনের পর প্রতিযোগিতা শুরু হতেই ভাল ফল করতে শুরু করেন তিনি। তাতে গোপিচন্দের চিন্তা বাড়তে থাকে। কারণ যত বেশি প্রতিযোগিতায় অদিতি খেলে, তত বেশি টাকা খরচ হয় তাঁর যাতায়াতের জন্য। সব আধুনিক যন্ত্রও দরকার ছিল তাঁর ধনুকের জন্য। আরও ধার করতে থাকেন গোপিচন্দ। এখন প্রায় ১০ লক্ষ টাকার বেশি ধার বাকি রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, “আমার বেতনের অর্ধেক খরচ হয়ে যায় ধার মেটাতে। আমার স্ত্রীও সরকারি কর্মী। ও সাহায্য করে। তবে এই ধার মেটাতে আমার কোনও কষ্ট নেই। আমি জানি দেশের হয়ে ভাল খেলতে পারবে অদিতি। আগামী মাসে এশিয়ান গেমসেও অদিতি ভাল খেলবে বলেই আমার আশা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy