Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Rufus The Hawk

Wimbledon 2022: জোকোভিচ, নাদালদের ছাপিয়ে উইম্বলডনে নজর কাড়ছে এক বাজপাখি

খেলোয়াড় নয়, সামান্য একটি বাজপাখি। তবে তাঁকে ছাড়া সব অসম্পূর্ণ। ভাল ভাবে প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে হলে এই বাজপাখিকে ছাড়া আয়োজকদের চলবে না।

নজর কাড়ছে রুফুস দ্য হক

নজর কাড়ছে রুফুস দ্য হক ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ২১:০৭
Share: Save:

রজার ফেডেরার খেলছেন না। নেই রাশিয়া এবং বেলারুশের কোনও খেলোয়াড়ও। চোট-আঘাত থাকায় অনুপস্থিত আরও অনেক নাম। তাতে কি উইম্বলডনের আকর্ষণ কমে যায়? নোভাক জোকোভিচ, রাফায়েল নাদাল তো রয়েছেন। সেন্টার কোর্টে ভিড় জমতে সময় লাগছে না। তবে সব ছাপিয়ে হঠাৎই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে এক বাজপাখি। তার নাম ‘রুফুস দ্য হক’। কোর্টে যখন জোকোভিচ, নাদালরা খেলছেন, তখন সতর্ক দৃষ্টি নিয়ে আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে রুফুস। একটাও পায়রা যাতে কোর্টে এসে বসতে না পারে বা সেন্টার কোর্টের ধারেকাছে যেতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই তার দায়িত্ব।

এখন নয়, গত কয়েক বছর ধরেই রুফুসকে নিয়ে চর্চা হচ্ছে। জোকোভিচ, নাদালরা যতই কোর্টে খেলুন, রুফুস তার কাজের জন্য যথেষ্ট জনপ্রিয়। খেলোয়াড়রাও খুব ভালবাসেন এই বাজপাখিকে। অতীতে অ্যান্ডি মারেকে ছবি তুলতে দেখা গিয়েছে রুফুসের সঙ্গে। কয়েক বছর আগে খেলা দেখতে এসেছিলেন রানি ক্যামিলা। তিনিও রুফুসের সঙ্গে ছবি তোলেন। অর্থাৎ, কোনও খ্যাতনামীর থেকে সে যে কোনও অংশে কম নয়, সেটা বোঝা গিয়েছে বার বার।

রোজ ভোর পাঁচটা থেকে সকাল ন’টা পর্যন্ত উইম্বলডনের বিভিন্ন কোর্টের পরিচর্যা চলে। সেই সময়েই আসল কাজ রুফুসের। সেন্টার কোর্ট ছাড়াও বাকি যতগুলি কোর্ট রয়েছে, সবক’টিতেই নজর রাখার দায়িত্ব তার। ৪২ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো গ্র্যান্ড স্ল্যাম আয়োজনে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সেটার জন্যে সদাব্যস্ত সে। রুফুসের পায়ে ঘণ্টা লাগানো আছে। দেখতে না পেলেও সে যে ধারেকাছেই রয়েছে, এটা শব্দ শুনে বোঝা যায়। এ ছাড়াও শরীরে ফিট করা আছে একটি জিপিএস যন্ত্র। ফোনের মাধ্যমে সহজেই দেখা যায় তার অবস্থান।

রুফুসের জন্ম ১৫ বছর আগে নর্দ্যাম্পটনশায়ারে। শুরু থেকে যিনি তার দেখাশোনা করতেন, সেই ওয়েন ডেভিস এখনও তার চালক। ১৫ সপ্তাহ থেকে তাকে শিকারি হিসাবে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন ডেভিস। তিনি পোষ্যকে কোথাও বেঁধে রাখেন না। খোলা আকাশই রুফুসের বাসস্থান। শুধু মাত্র খিদে পেলে সে ফিরে আসে। তার পর ফের মিলিয়ে যায় আকাশে। ডেভিস অবশ্য চাইলেই তাকে ডেকে নিতে পারেন। হাতের তালুতে মাংসের টুকরো বসিয়ে হাঁক দিলেই রুফুস যেখানেই থাকুক, হাজির হয়ে যাবে।

মারের সঙ্গে রুফুস।

মারের সঙ্গে রুফুস।

ডেভিস বলেছেন, “বাজপাখিরা কুকুরের মতো নয়। ওদের সঙ্গে সম্পর্কটা আলাদা। কুকুররা মুখের আওয়াজ শুনলে চলে আসবে। বাজপাখিদের ক্ষেত্রে শরীরের সামান্য নড়াচড়া অনেক কিছু বলে দেয়। বাজপাখিরা মুক্তমনা হয়। সে ভাবেই ওদের সঙ্গে মিশতে হয়। যদি ও কোনও দিন উড়ে গিয়ে ফিরে না আসে, তা হলে আমার কিছুই করা নেই। সম্পর্কটা এতটাই ভঙ্গুর।”

উইম্বলডনে অতীতে বহু বার পায়রার হানা খেলোয়াড়দের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলা প্যাম স্রিভার বলেছেন, “অনেক বারই সার্ভ করতে গিয়ে মনঃসংযোগ নষ্ট হয়েছে। সার্ভ করার সময় হঠাৎ করে কোর্টে নেমে আসত। তখন খুব অসুবিধা হত। তবে রুফুস আসার পর কোনও অসুবিধা হয়নি।”

১১ বছর বয়স থেকে বাজপাখিদের প্রতি ভালবাসা শুরু ডেভিসের। পরে এটাকে পারিবারিক ব্যবসা বানিয়ে ফেলেন। প্রচুর বাজপাখি পুষতেন, যারা বিমানবন্দরে অন্য পাখিদের তাড়াত। পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদন কেন্দ্র, ঐতিহ্যশালী বাড়ির খেয়ালও রাখত পাখিদের তাড়িয়ে। গত ২২ বছর ধরে উইম্বলডনের পাখিদের তাড়ানোর দায়িত্বে রয়েছেন ডেভিস। বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় ড্রোন বা লেজার ব্যবহার করে পাখিদের তাড়ানো হয়। কিন্তু উইম্বলডন বাকিদের থেকে আলাদা। এখানে বাজপাখি, অর্থাৎ রুফুসই সে কাজের দায়িত্বে।

তবে রুফুসকে হয়তো আর বেশি দিন দেখা যাবে না। ডেভিস ইঙ্গিত দিয়েছেন, ১৫ বছর ধরে উইম্বলডনের খেয়াল রেখে চলা রুফুস এ বার হয়তো অবসর নেবে। আসবে নতুন কেউ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy