রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ (বাঁ দিকে), ম্যাগনাস কার্লসেন। —ফাইল চিত্র
পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনকে আগেই পাঁচ বার হারিয়েছেন রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে কি ষষ্ঠ বারের জন্য কার্লসেনকে হারাতে পারবেন তিনি? বিশ্বনাথন আনন্দের পরে দ্বিতীয় ভারতীয় দাবাড়ু হিসাবে জিততে পারবেন দাবা বিশ্বকাপ? আশা জাগাচ্ছেন ভারতের ১৮ বছর বয়সি গ্র্যান্ডমাস্টার। কারণ, কার্লসেনের বিরুদ্ধে তাঁর পরিসংখ্যান বেশ ভাল।
এখনও পর্যন্ত কার্লসেন ও প্রজ্ঞানন্দ মুখোমুখি হয়েছেন ১৯ বার। তার মধ্যে ক্লাসিক্যাল দাবায় মাত্র এক বার। সেই ম্যাচ ড্র হয়েছে। র্যাপিড দাবা ও প্রদর্শনী ম্যাচ মিলিয়ে মোট ১৮ বার মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। কার্লসেন জিতেছেন ৭টি ম্যাচ। প্রজ্ঞানন্দ ৫টি। ৬টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। এই পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকলেও কার্লসেনকে হারানোর মন্ত্র জানেন প্রজ্ঞা। তাই কার্লসেনকে হারিয়ে প্রজ্ঞা দাবা বিশ্বকাপ জিতলে তাকে অঘটন বলা যাবে না।
কার্লসেনের বিরুদ্ধে প্রজ্ঞানন্দের খেলার পদ্ধতি বাকি দাবাড়ুদের থেকে আলাদা। নরওয়ের গ্র্যান্ডমাস্টার সাধারণত আক্রমণাত্মক খেলেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে বেশির ভাগ প্রতিযোগী রক্ষণাত্মক খেলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু প্রজ্ঞা আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের নীতিতে যান। যে কয়েকটি ম্যাচে তিনি কার্লসেনকে হারিয়েছেন সেই সব ম্যাচে প্রজ্ঞার আগ্রাসনের কাছে চাপে পড়ে হারতে হয়েছে কার্লসেনকে। দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালেও কি আক্রমণের পরিকল্পনা করেই খেলতে নামবেন ভারতীয় দাবাড়ু?
দাবা বিশ্বকাপে ২০০০ ও ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন আনন্দ। তার পরে এত বছর কোনও ভারতীয় দাবাড়ু সেমিফাইনালেই উঠতে পারেননি। ২১ বছর পরে ইতিহাস গড়েছেন প্রজ্ঞা। সোমবার টাইব্রেকারে বিশ্বের তিন নম্বর আমেরিকার ফ্যাবিয়ানো কারুয়ানাকে হারিয়েছেন তিনি। প্রজ্ঞানন্দের লড়াই মোটেই সহজ ছিল না। রবিবার প্রথম দু’টি ক্লাসিক্যাল গেম ড্র হয়েছিল। ফলে সোমবার ম্যাচ গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। সেখানেই জিতে যান ভারতের খেলোয়াড়। তিনি ৩.৫-২.৫ পয়েন্টে জিতেছেন।
রবিবার সেমিফাইনালে কারুয়ানার মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রজ্ঞানন্দ। প্রথম দু’টি ক্লাসিক্যাল সিরিজ় ড্র হয় ১-১ পয়েন্টে। সোমবার ছিল টাইব্রেকার। ১৮ বছরের ভারতীয় খেলোয়াড় বুদ্ধির জেরে হারিয়ে দেন আমেরিকার গ্র্যান্ড মাস্টারকে। দুই খেলোয়াড়ের স্নায়ুর যুদ্ধই আলোচনায় উঠে এসেছিল। শেষ টাইব্রেকারের আগেই এগিয়ে গিয়েছিলেন প্রজ্ঞানন্দ। শেষ টাইব্রেকে জিততেই হত কারুয়ানাকে। সেটা তিনি পারেননি। ফলে প্রজ্ঞানন্দ পৌঁছে যান ফাইনালে।
প্রজ্ঞানন্দের ফাইনালে ওঠার খবরে উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আনন্দ। তিনি শুরু থেকেই এই খেলার দিকে নজর রাখছিলেন এবং মাঝে মাঝেই সমাজমাধ্যমে খবর জানাচ্ছিলেন। প্রজ্ঞানন্দের জয়ের পরে তাঁর টুইট, “প্রজ্ঞা ফাইনালে! টাইব্রেকারে ফ্যাবিয়ানো কারুয়ানাকে হারিয়ে এ বার ফাইনালে ম্যাগনাস কার্লসেনের মুখোমুখি। কী অসাধারণ পারফরম্যান্স!”
বিশ্বকাপ চলাকালীনই ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে প্রজ্ঞানন্দের। ফাইনালে ওঠার পথে তিনি দ্বিতীয় বাছাই হিকারু নাকামুরাকে হারিয়েছে। ঐতিহ্যশালী ক্যান্ডিডেটস দাবায় তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করেছেন তিনি। ববি ফিশার এবং ম্যাগনাস কার্লসেনের পরেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy