আইএফএ শিল্ডে নেই মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল।
করোনা অতিমারির মধ্যেও মাঠে ফিরেছে খেলা। কোথাও দর্শকশূন্য, আবার কোথাও স্বল্প দর্শক নিয়েই খেলা হচ্ছে। খেলোয়াড়দের থাকতে হচ্ছে ‘নির্বান্ধবপুরী’ বা বায়ো-সিকিয়োর বাব্লে। অস্ট্রেলিয়ায় বিরাট কোহলি-রা যেমন বর্তমানে রয়েছেন তেমন বাব্লের মধ্যে। সেই বায়ো-সিকিয়োর বাব্ল না থাকায় আইএফএ শিল্ডে খেলবে না বলেছে ইস্টবেঙ্গল।
প্রশ্ন ওঠে কী এই জৈব সুরক্ষা বলয় বা বায়ো-সিকিয়োর বাব্ল? করোনাভাইরাস মূলত ছড়ায় ড্রপলেটস অর্থাৎ হাঁচি, কাশির মাধ্যমে যে থুতু বেরিয়ে আসে তার মাধ্যমে। মাঠে খেলার সময় একে অপরের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা কঠিন। তাই এই জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করে করোনাভাইরাসকেই দূরে রাখার এক চেষ্টা করা হয়। জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকার সময় খেলোয়াড়দের সংস্পর্শে আসতে পারেন শুধু মাত্র সাপোর্ট স্টাফ এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা। এর ফলে বাইরের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে খেলোয়াড়রা সংস্পর্শে থাকছেন না। শুধু তাই নয়, এই বলয়ের মধ্যে থাকার সময় নিয়মিত তাঁদের টেস্টও করানো হয়। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার সময় শুধু প্লেয়ার আর সাপোর্ট স্টাফ নয়, মাঠকর্মী থেকে শুরু করে হোটেলকর্মী সবাইকেই মেনে চলতে হয় নিয়ম। খেলোয়াড়রা খাওয়ার সময়েও কারোও সঙ্গে দেখা করেন না। যে যার নিজেদের ঘরে বসেই খান। কোনও ঘরে নয় টিম মিটিং করতে হয় খোলা জায়গায়। যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়। পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হয় না খেলোয়াড়দের। তেমন সুরক্ষা বলয় না থাকায় আইএফএ শিল্ডে খেলতে চাইছে না ইস্টবেঙ্গল।
বর্তমান পরিস্থিতে এমন কঠিন নিয়ম মেনেই খেলতে হচ্ছে সবাইকে। ইস্টবেঙ্গলের সহকারী সচিব শান্তি রঞ্জন দাশগুপ্ত বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, “জীবন আগে। জৈব সুরক্ষা বলয় ছাড়া খেলা মানে খেলোয়াড়দের বিপদে ফেলে দেওয়া। সারা বিশ্বের খেলা এই নিয়মে চলছে, তাতেও রোনাল্ডো-সুয়ারেসদের মানের খেলোয়াড়দের করোনা সংক্রমণ আটকানো যায়নি। তাই আইএফএ শিল্ডে জৈব বলয় ছাড়া খেলার প্রশ্নই ওঠে না।”
এই ছবি দেখা যাবে না আইএফএ শিল্ডে।
এটিকে-মোহনবাগান আগেই জানিয়ে দিয়েছিল তারা এ বারের আইএফএ শিল্ডে অংশ নেবে না। মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু বুধবার বলেন, “আমাদের গোটা দলই তো গোয়ায়। জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকা খেলোয়াড়রা আইএসএল খেলতে খেলতে আইএফএ শিল্ড খেলবে কী ভাবে?” তিনি মনে করেন এত তাড়াহুড়ো না করে আরও একটু পরে শিল্ডের আয়োজন করতে পারতো আইএফএ, অথবা অনূর্ধ্ব-২১ দলের শিল্ড করতে পারত। তা হলে হয়তো মোহনবাগান অংশ নিতেও পারত। প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আইএফএ শিল্ড হবে বলে শোনা যাচ্ছে। আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখার্জি যদিও বলছেন এখনও অবধি সরকারি ভাবে লাল-হলুদ খেলবে না বলে তিনি জানেন না। তিনি বলেন, “এখনও চিঠি পাইনি ইস্টবেঙ্গল খেলবে না বলে। জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করে দিলেই যে করোনা সংক্রমণ হবে না, তেমনটা আমার জানা নেই। তবে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান যদি বলে তাদের জন্য জৈব বলয় তৈরি করে দিলে তারা খেলবে, তবে তার জন্য আমরা রাজি।”
আরও পড়ুন: ব্যাট হাতে নেটে ঋদ্ধি, টেস্টের আগেই সুস্থ হওয়ার আশা
সারা বিশ্বের ক্রীড়ামহল যখন জৈব সুরক্ষা বলয়ের ওপর জোড় দিচ্ছে তখন আইএফএ-এর এমন সিদ্ধান্তে বেশ অবাক কলকাতার দুই বড় ক্লাবের কর্তারা। এমন অতিমারির পরিস্থিতে খেলার সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শকে প্রাধান্য দেওয়াও প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। জৈব সুরক্ষা বলয় বাদ দিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া কতটা সুরক্ষিত হবে, সে বিষয়েও চিন্তা থাকছে বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: ৮৯ বছরে সবচেয়ে খারাপ হার, স্পেনীয় আর্মাডায় বিধ্বস্ত জার্মান প্রাচীর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy