গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ভারতের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ তিনি। খেলোয়াড় জীবনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নেমে দেশকে ১৮টি সোনা, ১৩টি রুপো ও ৩টি ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছেন। অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে অলিম্পিক্স পদক। খেলা ছাড়ার পরে তৈরি করেছেন অ্যাকাডেমি। এখন রাজ্যসভার সাংসদ তিনি। পাশাপাশি ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান। কিন্তু পিটি ঊষার নামের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে বিতর্ক। কেন তাঁকে নিয়ে এত ক্ষোভ? কেন বার বার বিতর্কের কেন্দ্রে তিনি? যা জানা গেল, তাতে এক কথায় বলা যেতে পারে খেলোয়াড় হিসাবে যতটা ভাল, অন্য ক্ষেত্রে তার ধারেকাছেও নন ঊষা। তিনি বরাবর ক্ষমতার সঙ্গে থেকেছেন, ক্ষমতাশালীদের সঙ্গে আপস করেছেন। ক্ষমতা বদল হলে তিনিও নিজেকে রাতারাতি বদলে ফেলেছেন। যে কয়েক সেকেন্ডে দৌড় শেষ করতেন, তার থেকে কম সময়ে নিজেকে বদলেছেন। এক বার নয়, বার বার।
কুস্তি আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন বিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়ারা। ব্রিজভূষণের অপসারণ ও গ্রেফতারির দাবিতে যন্তর মন্তরের সামনে ধর্না দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান ঊষা জানিয়েছিলেন, কুস্তিগিরদের উচিত ছিল তাঁদের কাছে যাওয়া। তিনি বলেছিলেন, “ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থায় যৌন নিগ্রহের ঘটনায় তদন্তের জন্য কমিটি রয়েছে। তাই রাস্তায় নামার আগে ওদের উচিত ছিল আমাদের কাছে আশা। কিন্তু ওরা আসেনি। এ ভাবে রাস্তায় প্রতিবাদ করলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এতে ভারতের অপমান হয়।”
ঊষার এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেননি বিনেশ, সাক্ষী, বজরঙেরা। তাঁরা ঊষার সমালোচনা করেছিলেন। সমালোচনা হয়েছিল বিভিন্ন মহল থেকে। তখন পরিস্থিতি সামলাতে নেমেছিলেন ঊষা। কুস্তিগিরদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাতেও সমালোচনা কমেনি।
অলিম্পিক্স সংস্থায় সিইও নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক
নিজের সংস্থাতেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন ঊষা। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার সিইও হিসাবে রঘু আয়ারকে নির্বাচিত করেন তিনি। কিন্তু সংস্থার এগজিকিউটিভ কমিটির ১৫ সদস্যের মধ্যে ১২ জন অভিযোগ করেন, জোর করে রঘুকে নির্বাচিত করা হয়েছে। বৈঠকের আগে জানানো হয়নি যে এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হবে। হঠাৎ করে রঘুর প্রসঙ্গ তোলেন ঊষা। তিনি নাকি সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন, যাতে কেউ রঘুর বিরুদ্ধে না যান। তাঁরা পরবর্তীতে এই বিষয়ে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন। যদিও ঊষা সব অভিযোগ উড়িয়ে জানান, নিয়ম মেনেই রঘুকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
রঘুর বেতন নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। এগজিকিউটিভ কমিটির ১২ জন সদস্যের অভিযোগ, ঊষা নিজেই জানান, মাসে ২০ লক্ষ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে রঘুকে। বাকি সব সুবিধা মিলিয়ে বছরে ৩ কোটি টাকা পাবেন তিনি। বাকি কারও সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেননি তিনি। রঘু ২০১৩ সালে রাজস্থান রয়্যালসের সিইও ছিলেন। সেই সময়ই ম্যাচ গড়াপেটায় জড়ায় রাজস্থান। এই রকম বিতর্কিত ব্যক্তিকে ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার সিইও করার ক্ষেত্রে ঊষা সংবিধান মানেননি বলেই অভিযোগ করেছেন সদস্যেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ঊষা তাঁদের ভয় দেখিয়েছিলেন যে সিইও নিযুক্ত করা না হলে অলিম্পিক্স সংস্থাকে নিলম্বিত করা হতে পারে। তাঁদের ভাবার সময় পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। রঘুকে নির্বাচিত করার আগে সাত থেকে ১০ দিন সময় চেয়েছিলেন সদস্যেরা। সেই সময়ও তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ এখনও চলছে।
অলিম্পিক্সে বিনেশ-বিতর্ক
প্যারিস অলিম্পিক্সে মহিলাদের কুস্তিতে ৫০ কেজি বিভাগের ফাইনালে ওঠেন বিনেশ ফোগাট। কিন্তু ফাইনালের দিন সকালে ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় তাঁকে বাতিল করা হয়। প্রথমে এই বিষয়ে বিনেশ ও তাঁর দলের উপরেই যাবতীয় অভিযোগ চাপান ঊষা। একটি বিবৃতিতে তিনি বলেন, “কুস্তি, ভারোত্তোলন, বক্সিং, জুডোর মতো খেলায় কোনও খেলোয়াড়ের ওজন কমানো বা বাড়ানোর দায় পুরোপুরি তার ও তার কোচিং দলের। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার নিযুক্ত চিফ মেডিক্যাল অফিসার দীনশ পারদিওয়ালা ও তাঁর দলের কোনও ভূমিকা এতে নেই। তাই পারদিওয়ালা ও তাঁর দলকে যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে সকলের উচিত একটু ভেবে দেখা।”
ঊষা আরও জানান, প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিজস্ব কোচ ও সাপোর্ট স্টাফ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই দায় তাঁদেরই নিতে হবে। তিনি বলেন, “প্যারিসে প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের কোচ ও সাপোর্ট স্টাফ পেয়েছেন। এই সব কোচ ও সাপোর্ট স্টাফ দীর্ঘ দিন তাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রতিযোগিতার কয়েক মাস আগে অলিম্পিক্স সংস্থা একটি মেডিক্যাল দল গঠন করেছিল। তাদের কাজ ছিল খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত কোচ ও সাপোর্ট স্টাফকে বাইরে থেকে সাহায্য করা। তা ছাড়া যে কয়েক জন খেলোয়াড়ের নিজস্ব কোচ বা পুষ্টিবিদ ছিল না তাঁদের দিকে খেয়াল রাখছিল এই দল। তার বাইরে তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না।”
অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিনেশকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান ঊষা। বিনেশের পাশে দাঁড়িয়ে ছবিও তোলেন। পরে দেশে ফিরে বিনেশ অভিযোগ করেন, সবটাই লোক দেখানো করেছেন ঊষা। তিনি বলেন, “জানি না অলিম্পিক্সে আদৌ আমাকে কতটা সমর্থন করা হয়েছিল। পিটি ঊষা ম্যাডাম হাসপাতালে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। একটা ছবি তোলা হয়েছিল। দরজার পিছনে অনেক রাজনৈতিক খেলাই হয়ে থাকে। একই ভাবে, ওখানেও (প্যারিস) রাজনীতি হয়েছে। তাই জন্য ভেঙে পড়েছিলাম। অনেকেই আমাকে বলেছে কুস্তি না ছাড়তে। কিন্তু কেন খেলা চালিয়ে যাব বলতে পারেন? চারদিকে রাজনীতি।”
ঊষার সঙ্গে তোলা সেই ছবির প্রসঙ্গে বিনেশ জানিয়েছেন, তাঁর অজ্ঞাতে ছবিটি তোলা হয়েছিল এবং স্রেফ দেখানোর জন্য সেই কাজ করা হয়েছিল। বিনেশ বলেন, “হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আপনি জানতেও পারেন না বাইরে কী চলছে। জীবনের কঠিনতম পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই সময়ে স্রেফ দেখানোর জন্য আমার পাশে গিয়ে দাঁড়ানো হয়েছিল। কিছু না বলেই ছবি তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ওরা নাকি আমার পাশে রয়েছে। এ ভাবে সমর্থন করা যায় না। লোক দেখানো যায়।”
পদকের দাবিতে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিনেশ। সেখানে হেরে যান তিনি। তবে আইনি লড়াইয়ে ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার কাছ থেকে কোনও সাহায্য তাঁরা পাননি বলে দাবি করেন বিনেশের আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি বলেন, ‘‘শুরুর দিকে সমন্বয় এবং সংহতির অভাব ছিল। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা যে আইনি সংস্থাকে নিযুক্ত করেছিল, তাদের দিক থেকে সমন্বয়ের অভাব ছিল। সেই সংস্থার আইনজীবীদের কয়েক জন আমাকে কোনও নথি দিতে রাজি হননি। পরে যখন প্রয়োজনীয় সব কিছু পাই, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।’’
অলিম্পিক্সে ভারতের খারাপ পারফরম্যান্স
অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার আগে ঊষা দাবি করেছিলেন, এ বার ভারতের পারফরম্যান্স অনেক ভাল হবে। কারণ হিসাবে দু’টি বিষয়ের কথা তুলে এনেছিলেন তিনি। এক, এ বার প্রতিযোগীদের জন্য ৩৩ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে, যা গত বারের দ্বিগুণ। দুই, ১১৭ জন ক্রীড়াবিদের জন্য ১৪০ জন কোচ ও সাপোর্ট স্টাফ পাঠানো হয়েছে। ক্রীড়াবিদেরা কোচ হিসাবে যাঁদের চেয়েছেন তাঁদেরকেই পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভারতের পারফরম্যান্স ভাল হয়নি। টোকিয়োয় সাতটি পদক জিতেছিল ভারত। একটি সোনা, দুটি রুপো ও চারটি ব্রোঞ্জ। সেই জায়গায় প্যারিসে এসেছে ছ’টি পদক। একটি রুপো ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ। এ বার আর সোনা আসেনি। যেখানে প্যারালিম্পিক্সে ২৯টি পদক ভারত জিতেছে সেখানে অলিম্পিক্সে দেশের এই খারাপ পারফরম্যান্সের দায় ঊষার উপরেই চাপাচ্ছেন অনেকে। অলিম্পিক্স শেষ হওয়ার পরে ঊষা কিন্তু এই বিষয়ে চুপ।
অলিম্পিক্স সংস্থায় গৃহযুদ্ধ
নিজের সংস্থাতে এগজিকিউডিভ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ঊষার বিরোধ বেড়েই চলেছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার পাঁচ সদস্যকে নোটিস পাঠিয়েছিলেন ঊষা। তাঁর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে পদে রয়েছেন সেই পাঁচ সদস্য। এ বার সেই পাঁচ জনের মধ্যে এক জন রাজলক্ষ্মী সিংহ দেও পাল্টা অভিযোগ করেছেন। পাঁচ জনের হয়েই চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁদের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ঊষা নিজেই। ঊষাকে লেখা চিঠিতে রাজলক্ষ্মী লিখেছেন, “আপনি হয়তো জানেন যে সভাপতি পদের জন্য যিনি আপনার নাম প্রস্তাব করেছিলেন ও যিনি সমর্থন করেছিলেন, তাঁদের দু’জনকে অলিম্পিক্স সংস্থার জেনারেল বডি মান্যতা দেয়নি। তাই আপনার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।” এই প্রসঙ্গে সংস্থার সংবিধানের ধারার উল্লেখ করেছেন রাজলক্ষ্মী। ঊষার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয়কেও চিঠি লিখেছেন রাজলক্ষ্মী। ঊষার জবাব দাবি করেছেন তিনি।
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান নির্বাচিত হন ঊষা। তার পর থেকেই সংস্থার অন্দরে সমস্যা চলছে। প্যারিস অলিম্পিক্স চলাকালীনও সংস্থার সদস্যেরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ১০ সেপ্টেম্বর রাজলক্ষ্মী সিংহ দেও, অজয় পটেল, সহদেব যাদব, ভুপিন্দর সিংহ বাজওয়া ও অলকনন্দা অশোককে নোটিস পাঠান ঊষা। ‘স্পোর্টস কোড’-এর নিয়ম ভেঙে তাঁরা পদে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই অভিযোগের পাল্টা অভিযোগ এসেছে ঊষার বিরুদ্ধে।
যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ঊষা অভিযোগ করেছেন তাঁদের মধ্যে দু’জনের নাম উল্লেখযোগ্য। অজয় পটেল ও ভুপিন্দর সিংহ বাজওয়া। অজয় গুজরাত স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ও আমদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান। গুজরাতের দাবা সংস্থার সভাপতি ও ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতির পদ সামলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ তিনি। অপর দিকে ভারতীয় কুস্তি সংস্থার কাজকর্ম পরিচালনার জন্য কেন্দ্র যে অ্যাডহক কমিটি তৈরি করেছিল তার মাথায় ছিলেন বাজওয়া। অর্থাৎ, তিনিও বিজেপি-ঘনিষ্ঠ।
এখানেই বিতর্ক আরও বাড়ছে। ঊষা নিজে রাজ্যসভার সাংসদ। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার প্রধান হয়েছেন ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন না থাকলে এত বড় দায়িত্ব পাওয়া অসম্ভব। সেই ঊষা তা হলে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কেন চিঠি দিচ্ছেন? বিনেশ কংগ্রেসের টিকিটে হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে লড়বেন। তাই তিনি যে ঊষার বিরুদ্ধে যাবেন, তা স্পষ্ট। কিন্তু বিজেপি-ঘনিষ্ঠ কর্তাদের মধ্যে কেন কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে?
ঊষার অতীত ঘিরেও বিতর্ক
এই বিতর্কে উঠে আসছে ঊষার অতীতের বেশ কয়েকটি ঘটনা। অ্যাথলিট জীবন শেষ করার পর নিজের অ্যাকাডেমি তৈরি করেছেন ঊষা। ২০০২ সাল থেকে কেরলের বালুসেরিতে অ্যাথলিট গড়ার কাজ করছেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান। এই অ্যাকাডেমির জমি তিনি পেয়েছিলেন কেরলে সিপিএম সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন। তাঁকে জমি লিজ দিয়েছিল কেরল স্টেট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। তাঁর অ্যাকাডেমি তৈরি হয়েছিল কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন। গত বছর কিছু দুষ্কৃতী তাঁর জমি দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ঊষা। কেরলের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সিপিএমের পিনারাই বিজয়নের কাছে সাহায্য চান তিনি।
কেরলের রাজনীতিতে সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। বর্তমান বিজয়ন সরকার অবশ্য পর পর দু’বার ক্ষমতায় এসেছে। নিন্দকেরা বলেন, ঊষার কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শ নেই। কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতাও নেই। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক থাকে। সেই দলের কাছ থেকে নিজের কাজ বুঝে নেন তিনি। সেই কারণে, সিপিএম সরকার জমি লিজ় দেয়। পরে কংগ্রেস আমলে অ্যাকাডেমি তৈরি হয়। কেরলের কোয়িলান্দিতে আরও একটি অ্যাকাডেমি রয়েছে ঊষার। তার জন্য ৩০ একর জমি তিনি সরকারের কাছ থেকে পেয়েছেন। পাশাপাশি অ্যাকাডেমি তৈরির জন্য ১৫ লক্ষ টাকা অনুদানও পেয়েছেন।
ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার অধীনেই কাজ করে বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থা। সত্যিই কি ঊষা মানুষ হিসাবে এ রকম? যখন যে ক্ষমতায় তার কাছে সুবিধা নেন? এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থার সভাপতি বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থার কিছু কর্তা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ঊষা সব সময় ক্ষমতার সঙ্গেই থাকেন। নইলে কী ভাবে এত বড় পদে থাকতে পারেন? তাঁদের মতে, ক্রীড়াবিদ হিসাবে ঊষা অনেক বড় নাম। তবে তিনি কতটা দক্ষ প্রশাসক তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সেই কারণেই হয়তো বার বার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সমালোচনা হয়। অনেক সময় পরিস্থিতি সামলাতে পারেন। অনেক সময় পারেন না। তখন বিতর্ক চলতেই থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy