—প্রতীকী চিত্র।
সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার নির্বাচিত কমিটিকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। সংস্থার প্রতি দিনের কাজ পরিচালনা করছে সরকারের তৈরি করে দেওয়া অ্যাড হক কমিটি। তবে সংস্থার নির্বাচিত সভাপতি সঞ্জয় সিংহের দাবি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ক্ষমতায় ফিরবেন। একই সঙ্গে সঞ্জয়ের দাবি, পুণেতে তাঁদের আয়োজিত জাতীয় প্রতিযোগিতার বিজয়ীরাই শুধু আগামী অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ সিংহের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত সঞ্জয়। ২০০৮ সাল থেকে তিনি কুস্তির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেছেন, ‘‘সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি সমস্যা মিটে যাবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত কমিটি ক্ষমতা ফিরে পাবে।’’ অ্যাড হক কমিটি জয়পুরে যে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করেছিল, তা যথাযথ ভাবে হয়নি বলে দাবি সঞ্জয়ের। তাই পুণেতে তাঁরা আবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে চলেছেন। এই প্রতিযোগিতায় আবার দেশের প্রথম সারির কুস্তিগিরদের প্রায় কেউই অংশগ্রহণ করছেন না। পাশাপাশি, প্রতিযোগিতা এখনও ক্রীড়া মন্ত্রকের অনুমোদন পায়নি। তা হলে কেন এই উদ্যোগ? সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘জয়পুরের প্রতিযোগিতায় পদ্ধতিগত কিছু ভুল ছিল। বিষয়টা আমরা ক্রীড়া মন্ত্রকের কর্তাদের বুঝিয়েছি। আশা করি তাঁরা আমাদের যুক্তি মেনে নেবেন। অলিম্পিক্সের এখনও দু’টি যোগ্যতা অর্জন পর্ব প্রতিযোগিতা বাকি রয়েছে। পুণের প্রতিযোগিতায় ২৫টি রাজ্যের কুস্তিগিরেরা অংশ নেবে। আশা করি আমাদের আরও চার-পাঁচ জন কুস্তিগির প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে। অন্তিম পাঙ্ঘাল আগেই যোগ্যতা অর্জন করেছে।’’
পুণের প্রতিযোগিতা নিয়ে সঞ্জয়ের বক্তব্য, ‘‘২৫টি রাজ্যের কুস্তিগিরেরা অংশ নেবে। তাদের অনেকেরই চাকরি প্রয়োজন। সে জন্য আমাদের দেওয়া শংসাপত্র দরকার হবে ওদের। যে কুস্তিগিরেরা আগেই রেল বা সার্ভিসেসে চাকরি পেয়ে গিয়েছে, তাদের হয়তো এই প্রতিযোগিতা নিয়ে আগ্রহ নেই। আমরা চাই না কুস্তিগিরেরা কোনও ভাবে বঞ্চিত হোক। একটা কথা পরিষ্কারই বলছি, অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন পর্বে শুধু তারাই অংশ নিতে পারবে, যারা পুণের প্রতিযোগিতায় জিতবে।’’
অ্যাড হক কমিটিকে তো ক্রীড়া মন্ত্রক নিয়োগ করেছে? আপনারা তাদের প্রতিযোগিতাকে কী ভাবে অগ্রাহ্য করছেন? সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘অ্যাড হক কমিটি বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কুস্তির নিয়ম না মেনে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেগুলোয় ফেডারেশন অনুমোদন দিতে পারে না। আমরা খোলা মনে সব কুস্তিগিরকে পুণেতে অংশ নিতে বলছি। যারা জয়পুরে অংশ নিয়েছিল, তারাও এখানে নামতে পারে। কারণ এখন ট্রায়াল নেওয়ার সময় নেই। শুধু জয়ীরা দেশের জন্য কোটা নিয়ে আসতে পারে।’’
ব্রিজভূষণের সময় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রচুর অভিযোগ ছিল কুস্তিগিরদের। বিশেষ করে সাপোর্ট স্টাফ নিয়ে মহিলা কুস্তিগিরেরা খুশি ছিলেন না। সারা বিশ্বের কুস্তি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এগিয়ে গেলেও আমাদের দেশের কুস্তি পুরনো ধারণা নিয়েই চলছে। সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘আমরাও আধুনিকতার কথা ভেবেছি। কুস্তিগিরদের জন্য বিশেষ ফিজিয়ো নিয়োগ করা হয়েছে। মহিলা কুস্তিগিরদের জন্য মহিলা সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হয়েছে। কয়েক জন বিদেশি কোচের সঙ্গে কথা চলছে। অলিম্পিক্সের প্রস্তুতির জন্য কুস্তিগিরদের আমরা চার মাসের জন্য বিদেশেও পাঠাব। দেখুন, ঘটনা যাই ঘটুক কুস্তি থেমে থাকতে পারে না। আইনি সংঘাত ছাড়াই আমরা সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছি। সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে আমাদের। অলিম্পিক্সে আপনাদের হতাশ হতে হবে না।’’
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদেরও কুস্তি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সঞ্জয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওদের বলব নেতা হয়ে কোনও লাভ নেই। ওরা বরং আমাদের সঙ্গে কাজ করুক। অভিজ্ঞতা দিয়ে জুনিয়রদের সাহায্য করুক। দেশের কুস্তিকে নেতৃত্ব দিক। সবাইকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। চাইলে ওরা আবার অনুশীলন শুরু করতে পারে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে। আশ্বাস দিচ্ছি, সবাই স্বচ্ছ বিচার পাবে।’’ সঞ্জয়ের আশা, প্যারিস অলিম্পিক্সে কুস্তিতে ভারত চারটি পদক জিততে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy