লক্ষ্যপূরণ: টেস্ট সিরিজ জয়ের পরে উল্লসিত ভারতীয় দল। ট্রফি হাতে হনুমা বিহারী (মাঝখানে)। এএফপি
জামাইকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৭ রানে উড়িয়ে দিয়ে ভারত শুধু ২-০ ফলে সিরিজই জিতে নিল না, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির রেকর্ডও ভেঙে দিলেন বিরাট কোহালি। এত দিন ভারত অধিনায়ক হিসেবে সব চেয়ে বেশি টেস্ট জয়ের রেকর্ড ছিল ধোনির দখলে। ৬০ টেস্টে ২৭টি জয় ছিল ধোনির। জামাইকা জয়ের পরে ৪৮ টেস্টে অধিনায়ক কোহালির জয়ের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮। টেস্ট এবং সিরিজ জিতে উঠে সাংবাদিক বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যা বলে গেলেন কোহালি...
অধিনায়কত্ব ও রেকর্ড
আমার কাছে ক্যাপ্টেন্সি মানে নামের আগে স্রেফ একটা ‘সি’ অক্ষর থাকা। সফল হতে গেলে সব চেয়ে আগে দরকার দলগত সংহতি, দলগত প্রচেষ্টা। আমাদের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে এই দারুণ দলটা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের সময় আমাদের বোলারদের চেষ্টাটা এক বার দেখুন। চতুর্থ দিনে মহম্মদ শামির স্পেলটার কথা বলতেই হবে। যশপ্রীত বুমরার হাল্কা একটা চোট ছিল। ইশান্ত শর্মা সব কিছু উজাড় করে বল করল। রবীন্দ্র জাডেজা টানা একটা লম্বা স্পেল করে গেল। বোলাররাই ম্যাচ জেতায়। আমাদের হাতে যদি এ রকম বোলার না থাকত, তা হলে এই ফলও পেতাম না।
বিধ্বংসী বুমরার দাপট
ব্যাটসম্যানকে গতি, সুইং আর অ্যাঙ্গলে বিভ্রান্ত করে দেয় বুমরা। বিশ্ব ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বুমরার চেয়ে পরিপূর্ণ কোনও বোলার আছে বলে আমার মনে হয় না। কেরিয়ারের শুরুতে বুমরাকে বলা হত টি-টোয়েন্টির বিশেষজ্ঞ বোলার। তার পরে বুমরা ওয়ান ডে-তে দাপট দেখাতে শুরু করল। এখন ও টেস্ট ক্রিকেটও শাসন করছে। যারা মনে করে, এক এক ফর্ম্যাটের জন্য এক এক ধরনের বোলার দরকার, তাদের ভুল প্রমাণ করেছে বুমরা। বিশ্বের সেরা বোলার হওয়াই লক্ষ্য ওর। নিজের জীবনটাকে ও সেই লক্ষ্যেই গড়ে নিয়েছে। ওর শৃঙ্খলা, ওর পরিশ্রম ওকে ওই লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ট্রেনিং, ডায়েট, সব কিছুর উপরেই ওর নিয়ন্ত্রণ আছে। বুমরার বোলিং নিয়ে আর কী-ই বা বলব। শুধু এইটুকু বলতে চাই, ভাগ্য খুব ভাল যে, বুমরা আমাদের দলে খেলছে। এক বার ছন্দ পেয়ে গেলে নতুন বলে ৫-৬ ওভারেই ও কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, তা জামাইকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে দেখিয়ে দিয়েছে বুমরা। ও রকম ভয়ঙ্কর স্পেল আমি আগে দেখিনি। স্লিপে দাঁড়িয়ে ব্যাটসম্যানদের জন্য আমার দুঃখই হচ্ছিল।
গর্বিত: অধিনায়ক এবং তাঁর সেরা অস্ত্র। জামাইকায় টেস্ট সিরিজ জিতে বুুমরার সঙ্গে কোহালি। এএফপি
ভরসার নাম জাডেজা
জাডেজার হাতে বল তুলে দিলে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যায়। ও নিখুঁত লাইন-লেংথে বল করে যাবে। জাডেজা সম্ভবত আমাদের সব চেয়ে নিখুঁত আর ধারাবাহিক বোলার। যে কারণে ও নিয়মিত প্রথম একাদশে জায়গা পাচ্ছে। মাঝে মাঝে এমন হয়, উইকেট থেকে বোলাররা সাহায্য পাচ্ছে না। সে সময় জাডেজা থাকা মানে ম্যাচের উপরে নিয়ন্ত্রণ থাকা। জাডেজা সব সময় ম্যাচের মধ্যে থাকে। আর সেটাই হল ওর সব চেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট। ব্যাট, বল আর ফিল্ডিংয়ে ওর চেয়ে বিশ্বে আর ভাল কেউ নেই। ও সব সময় দলের হয়ে কিছু করতে চায়।
বিহারী-রাহানের ফর্ম
জামাইকার কঠিন উইকেটে হনুমা বিহারী যে ভাবে ব্যাট করল, তাতে বোঝা যাচ্ছে ওর দক্ষতা কতটা। হনুমার মানসিকতা এবং টেকনিক দুর্দান্ত। বিপক্ষ ওর দিকে যা গোলাগুলি ছুড়েছে, ও সব সামলে দিয়েছে। হনুমা যে ভাবে এই সিরিজে উঠে এল, তা প্রশংসাযোগ্য। একই সঙ্গে অজিঙ্ক রাহানের কথাও বলতে হবে। বছরের পর বছর ধরে রাহানে আমাদের অন্যতম সেরা টেস্ট ক্রিকেটার।
২-০ সিরিজ জয়
আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটি থেকে ২-০ ফলে জিতেছি মানে এই নয় যে, সিরিজটা একেবারে এক তরফা হয়েছে। কয়েক বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। বিশেষ করে যখন আমরা ব্যাট করছিলাম। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে ফিরে এসেছি। চাপটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। অপেক্ষা করেছি কখন পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে আসবে। আর তার পরে রান করেছি। এটাই হল টেস্ট ক্রিকেট। চাপ থাকবে আবার সেই চাপ কাটিয়ে বেরোতেও হবে।
কংকাশন পরিবর্ত
আমার মনে হয়, এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। টেস্ট ক্রিকেট সম্পূর্ণ অন্য ধরনের খেলা। একটা দিন আপনি হয়তো চোট নিয়ে খেলে দিলেন। কিন্তু পরের দিন পরিস্থিতিটা সম্পূর্ণ অন্য রকম হয়ে যেতে পারে। এই যেমন আইপিএলে বুমরার বলে এবি ডিভিলিয়ার্সের চোট লেগেছিল। ম্যাচে ব্যাট করার সময় ওর সমস্যা হয়নি। কিন্তু পরের দিন সকালে উঠে মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে। কংকাশনের ক্ষেত্রে এ রকম হতেই পারে। একটু পরে ব্যাপারটা বোঝা যায়। তাই কংকাশন বিকল্প একেবারে ঠিক সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy