জয়ী: ফরাসি ওপেনের ফাইনালে ওঠার পথে টুর্নামেন্টের তৃতীয় বাছাই স্ট্যানিস্লাস ওয়ারিঙ্কা (বাঁ-দিকে)। ছবি: গেটি ইমেজেস। দাপট: থিয়েমকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর নাদাল। ছবি: রয়টার্স।
ক্লে কোর্টের সম্রাট রাফায়েল নাদাল আর ‘লা ডেসিমা’র মধ্যে আর শুধু একটা ম্যাচ। রবিবারের ফাইনাল।
শুক্রবার নোভাক জকোভিচের ঘাতক ডমিনিক থিয়েমের বিরুদ্ধে যে দাপটে নাদাল জিতলেন তাতে একটা বার্তা খুব স্পষ্ট— ফাইনালে তাঁকে হারাতে গেলে অঘটন ঘটাতে হবে স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কাকে। স্ট্রেট সেটে জিতলেন স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন। ৬-৩, ৬-৪, ৬-০।
পরিসংখ্যান বলছে রোলঁ গ্যারোজের ফাইনালে নাদাল কখনও হারেননি। ওয়ারিঙ্কার সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়েও নাদাল এগিয়ে ১৫-৩। ক্লে কোর্টে সংখ্যাটা নাদালের পক্ষে ৫-১। ৩০ বছরের স্প্যানিশ সুপারস্টারকে গত দু’সপ্তাহে ক্লে কোর্টে অপরাজেয় মনে হয়েছে। ছ’টা ম্যাচে একটাও সেট হারেননি। গেম হেরেছেন মাত্র ২৯টা। ওপেন যুগে গ্র্যান্ড স্ল্যামে এর চেয়ে কম গেম হারানোর রেকর্ড শুধু একজনেরই— বিয়র্ন বর্গ।
এ দিকে নাদালের ফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বীও কিন্তু কম যান না। রোলঁ গ্যারোজে অনেকেই তাঁকে ‘গ্রঁ-প্যর’ বা দাদু ডাকতে শুরু করলে কী হবে, রজার ফেডেরারের দেশের আর এক তারকা ওয়ারিঙ্কা কিন্তু তাঁর দেশের সেরা তারকার পথেই চলেছেন। সবচেয়ে বেশি বয়সের ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালিস্ট হয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, বয়স কোনও ব্যাপার নয়। মনে ইচ্ছা ও বুকে সাহস থাকলে যে কোনও লড়াই লড়ে নেওয়া যায়।
স্বপ্নভঙ্গ: ফরাসি ওপেন থেকে বিদায় নিলেন বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা অ্যান্ডি মারে। ছবি: গেটি ইমেজেস।
শুক্রবার যেমন রোলঁ গ্যারোজে সেমিফাইনালে ৩২ বছর ৭৫ দিন বয়সের ওয়ারিঙ্কা বিশ্বের এক নম্বর অ্যান্ডি মারের সঙ্গে লড়লেন চার ঘণ্টা ৩৪ মিনিট। পাঁচ সেটের এই মহাযুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মারেকে যে ভাবে মুখ থুবরে পড়তে হল, তাতে মনে হওয়াই স্বাভাবিক, ওয়ারিঙ্কা নন, তিনিই বিশ্বের তিন নম্বর। শেষ সেট সুইস তারকা জিতে নিলেন ৬-১-এ। যখন মারের দম পুরোপুরি শেষ।
রোলঁ গ্যারোজে তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সের পুরুষ ফাইনালিস্ট। আগে ছিলেন নিকোলা পিলিচ। আগে মানে ৪৪ বছর আগে, ১৯৭৩-এ।
পাঁচ সেটে ৬-৭ (৬-৮), ৬-৩, ৫-৭, ৭-৬ (৭-৩), ৬-১ জয়ের পর যখন টিভিতে বলছিলেন, ‘‘আজ সেরা ফর্মে ছিলাম বলেই শেষ পর্যন্ত লড়ে গেলাম’’, তখনও জোরে জোরে নিঃশ্বাস পড়ছিল ওয়ারিঙ্কার। অ্যান্ডি মারে বলে গেলেন, ‘‘দমে ওকে হারাবে কে? অফুরান শক্তি ওর। অবিশ্বাস্য। জয়টা স্ট্যানেরই প্রাপ্য ছিল।’’ আর সুইস তারকা শেষ করলেন, ‘‘বুঝতে পারছিলাম, শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে পারলে আমিই জিতব’’, এই বলে।
শুধু জয় না, বদলাও নেওয়া হল ওয়ারিঙ্কার। গত বছর তো এখানে সেমিফাইনালেই মারের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। ফাইনালে মারে হেরে যান জকোভিচের কাছে।
যদিও প্যারিসের সুরকির কোর্টে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা ওয়ারিঙ্কার এই প্রথম নয়। ২০১৫-য় ফাইনালে খেলেছিলেন এবং জিতেওছিলেন। এ বার জিতলে তিনি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জয়ে মারেকে পিছনে ফেলে দেবেন।
আগ্রাসী শটই এ দিন সুইস তারকাকে কষ্টার্জিত জয় এনে দিল। এ দিন ৮৭টা উইনার মেরেছেন তিনি। যার মধ্যে ৪৫টাই ফোরহ্যান্ড। মারের রক্ষণাত্মক টেনিসে ইতি টেনে দেয় তাঁর এই আগ্রাসনই। অসুস্থতা ও চোটের জন্য মরশুমের বেশ কিছু সময় কোর্টের বাইরে থাকা মারে একসময় জয় থেকে চার পয়েন্ট ব্যবধানে এসেও গিয়েছিলেন। কিন্তু সারা ম্যাচে ওয়ারিঙ্কা তাঁকে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দৌড় করানোয় শেষ পর্যন্ত নিজেকে সেই রাস্তায় ধরে রাখতে পারেননি মারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy