মুখোমুখি: সে যুগের রাজা, এ যুগের রাজা। অ্যান্টিগায় ভিভের শহরে তাঁর সাক্ষাৎকার নিলেন কোহালি। দু’জনে পাশাপাশি বসে মেতে উঠলেন অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায়। সৌজন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড
কিং কোহালি ও কিং রিচার্ডস। দুই রাজার কথোপকথনের দ্বিতীয় কিস্তি। অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টের আগের দিন ভারতীয় বোর্ডের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয় দুই কিংবদন্তির আড্ডা। যার প্রথম অংশে দেখা গিয়েছে বিরাটকে ভিভ বলছেন, ‘‘তোমার মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজে পাই।’’ কেন রিচার্ডস এই মন্তব্য করেছেন, তার অন্যতম কারণ তুলে ধরা হল দ্বিতীয় কিস্তিতে।
বিরাট: একটি প্রশ্ন অনেক দিন ধরেই ভাবছি। আপনি যখন গতিময় উইকেটে অনুশীলন করতে যেতেন, তখন আপনি ঠিক কী মনোভাব নিয়ে নেটে ঢুকতেন? নিশ্চয়ই ‘ব্যাট করতে হচ্ছে তাই যাচ্ছি’ মনোভাব নিয়ে যেতেন না। কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে নিশ্চয়ই নেট করতেন? আমি যেমন, নিজেদের বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলার চেষ্টা করি। আউট হওয়ার কথা তো ভাবিই না। এমনকি ব্যাটের কানায় বল লাগলেও মনে হয় অপরাধ
করে ফেললাম।
ভিভ: আমিও এই মনোভাব নিয়েই নেটে ঢুকতাম। কী করে আউট হওয়ার সুযোগ কমানো যায়, সেটাই খুঁজতাম। কিন্তু কখনওই নেটে ব্যাট করতে পছন্দ করতাম না। কেন জানি না, আমার খুব দমবন্ধ লাগত। কখনওই স্বচ্ছন্দবোধ করিনি।
বিরাট: সময় আমারও ঠিক একই অনুভূতি হয়। প্রচণ্ড দমবন্ধ করা পরিবেশ। তার চেয়ে নেট সরিয়ে ফিল্ডার সাজিয়ে অনুশীলন করার ফল অবশ্যই ভাল হয়। ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এটাই হয়তো আদর্শ প্র্যাক্টিস। কোহালি জানিয়েছেন, ‘সিমিউলেশন ট্রেনিং’ (পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া)-এর সঙ্গে বিষয়টি কল্পনা করাও গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে এ ভাবেই নিজেকে তৈরি করেন কোহালি।
বিরাট: ২০১৪-র ইংল্যান্ড সফর খুব খারাপ গিয়েছিল। তার পরের সফর আরও ভয়ঙ্কর ছিল। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে খেলা কতটা কঠিন তা আপনি জানেন। সফরের তিন মাস আগে থেকে আমি কল্পনা করতে শুরু করি যে, বিপক্ষ পেস ব্যাটারিকে আমিই শাসন করছি। ওদের বিরুদ্ধে নিজের সেরা ইনিংস খেলছি। সেই অনুভূতি আমাকে আরও উদ্বুদ্ধ করে। ইংল্যান্ড সফরে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই।
ভিভ: যত দূর মনে পড়ে তুমি চারটি সেঞ্চুরি করেছিলে। তখন আমিও অস্ট্রেলিয়ায় ছিলাম। বিগ ব্যাশ কভার করতে গিয়েছিলাম। এমনিতে অস্ট্রেলীয়রা প্রচণ্ড আগ্রাসী। কিন্তু কখনও এত বেশি কথা বলে যে, নিজেরাই বুঝতে পারে না কখন থামা উচিত। তুমি কিন্তু ওদের মুখের উপরে জবাব দিয়েছিলে। শুধু ফিরিয়েই দাওনি, সুদে-আসলে ফিরিয়ে দিয়েছিলে চারটি সেঞ্চুরি করে।
বিরাট: জীবনে সাফল্যের অন্যতম কারণ অবশ্যই বিপক্ষকে আগে থেকেই কল্পনা করে নেওয়া। আরও একটি কারণ অবশ্যই আমার স্ত্রী। ও বরাবর আমার পাশে থাকে। ভাল সময়, খারাপ সময় ওকে পাশে পাই। আসলে ও নিজেও একজন পেশাদার। ও জানে একজন পেশাদারের জীবন কী রকম হয়। ক্রিকেট জীবনে উন্নতি করার জন্য যে সময়টা আমার প্রয়োজন তা দেওয়ার অবকাশ করে দেয়। সব সময় ঠিক উপদেশটি দেওয়ার চেষ্টা করে।
ভিভ: বিবাহিত জীবন তোমাকে কী শিক্ষা দিল?
বিরাট: একসঙ্গে থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। সব চেয়ে বড় শিক্ষা অবশ্যই কঠিন কাজ থেকে পিছিয়ে না যাওয়া। কোনও কঠিন মুহূর্ত থেকে পিছিয়ে গেলে অথবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ব্যক্তিত্ব তৈরি হয় না। মাঠেও তার প্রভাব পড়তে পারে। অনুষ্কার সঙ্গে থেকে এটাই বেশি শিখেছি, যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি এলে তার মুখোমুখি হতে হবে। এড়িয়ে গেলে চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy