২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে ৫৯৩ রান করেন কোহালি। ছবি: এএফপি।
২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফর দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছিল বিরাট কোহালির। পাঁচ টেস্টের সিরিজে ১০ ইনিংসে করেছিলেন মাত্র ১৩৪ রান। সুইংয়ের সামনে অসহায় দেখিয়েছিল তাঁকে। সেই সিরিজ টেস্টে তাঁর যোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল বলে জানালেন স্বয়ং কোহালি।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের ওয়েবসাইটে ময়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিরাট কোহালি বলেছেন, “২০১৪ সাল আমার কেরিয়ারে মাইলস্টোন। অধিকাংশ মানুষই ভাল সফরকে মাইলস্টোন বলে মনে করে। কিন্তু আমার কাছে ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর মাইলস্টোন। তখন বুঝতে পারি যে পরিস্থিতি আমার পক্ষে আরও খারাপ হতে পারে। কারণ, সামনেই অস্ট্রেলিয়া সফর ছিল। যে ভাবে ক্রিকেট খেলছিলাম, তা পাল্টাতে হয়েছিল আমাকে। আরও নির্ভীক হয়ে উঠি আমি। সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাপারটা তুলনায় সহজ। পরিস্থিতি বোঝা যায়। সেই মতো প্রস্তুতি থাকে, উদ্দীপ্ত থাকা যায়। কিন্তু, টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে ঠিক রাখা একজন ক্রিকেটারের পক্ষে বড্ড কঠিন। আমাকে সেটাতেই উন্নতি করতে হত।”
আরও পড়ুন: বিপুল আর্থিক ক্ষতি এড়াতেই আইপিএল আয়োজনে সবুজ সঙ্কেত
আরও পড়ুন: ভারতের হয়ে একটানা সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছেন এই তারকারা
কোহালির কথায়, “যদি ইংল্যান্ডের সেই সফর না ঘটত, তবে হয়তো একই ভাবে খেলে চলতাম। উন্নতির পথে চলতাম না। সেই সফর আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল নিজের কেরিয়ার নিয়ে। যে বলগুলে ভিতরে আসছিল তা নিয়ে বড্ড বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। তার ফলে যে বলগুলো বেরিয়ে যাচ্ছিল, তাতে আউট হচ্ছিলাম। বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিলাম না কিছুতেই। লোকে আমার সম্পর্কে কী ভাবে তা নিয়ে আগে ভাবিনি। কিন্তু, ২০১৪ সালে তা অবশ্যই আমাকে সমস্যায় ফেলেছিল। এক মাসের মধ্যে ক্রিকেটার হিসেবে আমার যোগ্যতা চলে গিয়েছিল। মনে হয়েছিল যে আমি কী তা তো জানিই, বড্ড বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি লোকে কী বলছে তা নিয়ে। আর তার ফলেই হতাশা আসছিল। তার পর থেকে লোকে কী বলল তা নিয়ে ভাবা বন্ধ করি।”
দেশে ফিরে আসার পর সচিন তেন্ডুলকরের পরামর্শ নেন কোহালি। কী বলেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার? কোহালি বলেছেন, “মুম্বইয়ে সচিন পাজির সঙ্গে কয়েকটা সেশন করেছিলাম। জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে পা বাড়িয়ে খেলার গুরুত্বের কথা আমাকে বুঝিয়েছিলেন। যে মুহূর্তে আমি সেটা করতে থাকলাম, সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাস বাড়তে লাগল।”
ইংল্যান্ডে সফরের সময় জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর ছিলেন রবি শাস্ত্রী। একবার নিজের ঘরে ডেকে কোহালিকে টিপস দিয়েছিলেন। কী বলেছিলেন শাস্ত্রী? কোহালির কথায়, “ওঁর কথায় আমি ক্রিজের বাইরে দাঁড়াতে থাকলাম। উনি বলেছিলেন, ‘‘বোলারদের আউট করার সুযোগ দিও না, ক্রিজের বাইরে দাঁড়ালে আউট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।’’ অস্ট্রেলিয়া সফরে আমি সেটাই করি। আর অবিশ্বাস্য ফল আসে। উনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমি শর্ট বলকে ভয় পাই কি না। আমি বলি, না।”
২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরের আগে কোহালিকে সেই পরামর্শের কথা ফের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন দলের প্রধান কোচ শাস্ত্রী। কোহালি বলেছেন, ‘‘ট্যুর ম্যাচের আগে রবি ভাই ফের জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কেন ক্রিজের বাইরে দাঁড়াচ্ছো না? আমি নেটে সঙ্গে সঙ্গে ৪০ মিনিটের মতো ক্রিজের বাইরে দাঁড়াই। তার পর ব্যাপারটা সহজ হয়ে ওঠে।” ২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের ১০ ইনিংসে কোহালির ব্যাটে আসে ৫৯৩ রান। যার মধ্যে ছিল দুটো সেঞ্চুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy