সফল: প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়েছেন সাইনি। ফাইল চিত্র
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি অভিষেকেই দুরন্ত বোলিং করে নজর কেড়েছেন নবদীপ সাইনি। চার ওভারে মাত্র ১৭ রানে তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট। স্বয়ং অধিনায়ক বিরাট কোহালিও মুগ্ধ এই পেসারের গতি এবং মানসিকতায়। আর সাইনি নিজে বলছেন, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ এসেছে।
ফ্লরিডায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেটে দলকে জেতানোর পথে ম্যাচের সেরা হয়েছেন সাইনি। পরে সতীর্থ ভুবনেশ্বর কুমারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইনি বলেছেন, ‘‘শনিবার সকালে আমি যখন ভারতের টুপিটা পাই, বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে, এত দিনকার স্বপ্নটা সত্যি হতে চলেছে।’’
হরিয়ানার এক ছোট শহর থেকে উত্থান সাইনির। ছেঁড়া জুতো পরে দিল্লিতে গৌতম গম্ভীরদের নেটে যে ছেলেটা বল হাতে দৌড় শুরু করেছিলেন, তিনি আজ অনেকটা পথ পার হয়ে এসেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে আইপিএল। ‘এ’ দল থেকে বিদেশ সফরে ভারতের নেট বোলারের দায়িত্ব পালন। দুরন্ত গতির জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ২৬ বছরের এই তরুণ। শনিবারের ম্যাচের পরে স্বয়ং কোহালি বলে দিয়েছেন, ‘‘নবদীপ হল সেই বোলারদের এক জন, যে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। এত জোরে বল করতে পারে, এ রকম বোলার খুব কমই আছে। ও বেশ ফিটও। সাইনি কিন্তু নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। ওর সাফল্যের খিদেটাও খুব বেশি। আশা করব, এই সুযোগ ও কাজে লাগাতে পারবে।’’ কোহালির চেয়ে আর কে-ই বা বেশি চিনবেন এই ফাস্ট বোলারকে। এই বছরের আইপিএলে কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে খেলেই শিরোনামে উঠে আসেন সাইনি। তার পিছনে রয়েছে অবশ্যই সেই দুরন্ত গতির কাহিনি। আইপিএলের অনেক ম্যাচেই দেখা গিয়েছে, ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করছেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সাইনি প্রথমে পরপর দু’বলে ফিরিয়ে দেন নিকোলাস পুরান এবং শিমরন হেটমায়ারকে। অভিষেক ম্যাচেই এ রকম কাণ্ড ঘটিয়ে কী রকম লাগছিল? বিসিসিআই টিভি-তে পোস্ট করা ভিডিয়োয় ভুবনেশ্বরের এই প্রশ্নের জবাবে সাইনি বলেন, ‘‘প্রথম দিকে আমার আত্মবিশ্বাসে একটু ঘাটতি ছিল। অভিষেক ম্যাচ বলে একটু চাপের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু প্রথম উইকেটটা ওই চাপ কমিয়ে দেয়। দ্বিতীয় উইকেটটা নেওয়ার পরে মনে হচ্ছিল, এটা আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই একটা খেলা।’’ হ্যাটট্রিক ডেলিভারি করতে আসার সময় কী ভাবছিলেন? সাইনির জবাব, ‘‘মনে হচ্ছিল, এই রকম ঘটনা আমি অন্যদের সঙ্গে ঘটতে দেখেছি। এ বার নিজের জীবনেও ঘটছে। তার পরে মনোযোগ দিই কী ভাবে উইকেটটা তোলা যায়।’’ সাইনি অবশ্য হ্যাটট্রিক পাননি রভম্যান পাওয়েল অফস্টাম্পের বাইরে বলটা ছেড়ে দেওয়ায়। সাইনির শেষ শিকার কায়রন পোলার্ড। আম্পায়ার প্রথমে এলবিডব্লিউ দেননি। তার পরে উইকেটকিপার ঋষভ পন্থ বলায় ডিআরএস নেওয়া হয়। ওই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাইনি বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম, ওটা নট আউট। আম্পায়ারও আউট দেননি। কিন্তু বিরাট পাজি রিভিউ নেন। ক্যাপ্টেন বলেন, ‘একটা রিভিউ তো বাকি আছে। তা হলে কেন সেটা নষ্ট করব।’ আমি নিশ্চিত ছিলাম না, উইকেট পাব কি না।’’
সাইনির বাঁ হাতে একটা নেকড়ে বাঘের ট্যাটু অনেকেরই নজরে এসেছে। সেই ট্যাটু-রহস্য এ বার ফাঁস করলেন এই ফাস্ট বোলার নিজেই। বলে দিলেন, ‘‘ছোটবেলায় আমি আর আমার বড় ভাই খুব নেকড়ের সিনেমা দেখতাম। তা ছাড়া নেকড়ে কিন্তু সার্কাসে খেলা দেখায় না। যে কারণে নেকড়ে আমার এত ভাল লাগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy