Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Virat Kohli

সূচি নিয়ে কোহালির বার্তা, মতামত নাও ক্রিকেটারদের

সে দিক দিয়ে কোহালির এমন ভাবে মুখ খোলা নতুন করে ক্রিকেটারদের সংগঠনের প্রসঙ্গটি তুলে ধরতে পারে।

চনমনে: টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে জয়ের পরে ওয়ান ডে সিরিজের জন্য প্রস্তুতি চলছে রোহিত শর্মার।

চনমনে: টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে জয়ের পরে ওয়ান ডে সিরিজের জন্য প্রস্তুতি চলছে রোহিত শর্মার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ০৭:০১
Share: Save:

ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি এ বার খেলোয়াড়দের শক্তি জোরাল করার তর্ক উস্কে দিলেন। নতুন বার্তা দিলেন ক্রিকেট প্রশাসকদের উদ্দেশে। বলে দিলেন, সারা বছরের আন্তর্জাতিক সূচি তৈরি করার ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। বিশ্বের অনেক ক্রিকেট খেলিয়ে দেশে খেলোয়াড়দের সংগঠন শক্তিশালী এবং সক্রিয়। ভারতেই ক্রিকেটারদের সংগঠন জন্ম নিয়েও প্রভাবশালী হতে পারেনি। তার জন্য তারকা ক্রিকেটারদের সক্রিয়তার অভাবই প্রধান কারণ।


সে দিক দিয়ে কোহালির এমন ভাবে মুখ খোলা নতুন করে ক্রিকেটারদের সংগঠনের প্রসঙ্গটি তুলে ধরতে পারে। কী বলছেন ভারত অধিনায়ক? করোনা পরিস্থিতিতে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে টানা থাকতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। সেই সঙ্গে ম্যাচ খেলার ধকল। বিরাট মনে করেন, জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকার ফলে দ্রুত ফুরিয়ে আসতে পারে এক জন খেলোয়াড়ের জীবন। তাই তিনি সতর্কবার্তা জারি করছেন।
অতিমারির মধ্যেও টানা খেলে যেতে হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। যেমন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে দীর্ঘ আইপিএল খেলে সেখান থেকেই তাঁদের চলে যেতে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। লাল বল, সাদা বল মিলিয়ে প্রায় আড়াই মাসের সফর করতে হয়েছিল। কোহালি যদিও পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে প্রথম টেস্টের পরেই চলে এসেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া থেকেই ফিরেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে ঘরের মাঠে চার টেস্ট, পাঁচটি টি-টোয়েন্টি এবং তিনটি ওয়ান ডে ম্যাচের দীর্ঘ সিরিজ। সেই দ্বৈরথ শেষ করে উঠতে না উঠতেই ঢুকে পড়তে হবে আসন্ন আইপিএলের জৈব সুরক্ষা বলয়ে। এমন নিংড়ে নেওয়া সূচি যে চিন্তার কারণ, সে দিকেই ইঙ্গিত করছেন কোহালি। তাঁর মতে, শারীরিক ধকলের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ধকল সামলানো। টানা বলয়ের মধ্যে থেকে ম্যাচ খেলার পরে মানসিক ভাবে ভঙুর হয়ে পড়তে পারেন যে কেউ।


২০২১ সালে ভারতীয় দলের কাছে ওয়ান ডে ক্রিকেটের গুরুত্ব সে ভাবে নেই। কারণ, এপ্রিলে আইপিএল। জুনে টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এমনই একটি বছরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ খেলার কী প্রয়োজন ছিল? এমন প্রশ্ন উছঠে পড়ছে। বিরাটকেও এ দিন একই প্রশ্ন করা হয়। ভারত অধিনায়কের জবাব, ‘‘ক্রীড়া সূচি তৈরি করা আমাদের হাতে নেই। আমার মনে হয়, কতটা ক্রিকেট খেলছি, সেটা মাথায় রাখা খুব দরকার। এবং, এখনকার এই পরিস্থিতিতে শুধু শারীরিক দিকটা দেখলে হবে না, মানসিক ধকলটাও মাথায় রাখতে হবে।’’ এখানেই না থেমে তিনি বলে চলেন, ‘‘সূচি তৈরি করার ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়া উচিত। না হলে ব্যাপারটা এ রকম হয়ে দাঁড়ায় যে, ঠাসা সূচির সঙ্গে মানিয়ে নিতেই পারলেই তুমি থাকতে পারবে। যে পারবে না, তাকে বেরিয়ে যেতে হবে। তা হলে তার জায়গা অন্য কেউ নেবে।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার মনে হয় না সেটা ক্রিকেট সংস্কৃতির পক্ষে খুব মঙ্গলজনক। আমরা ক্রিকেট সংস্কৃতিকে দিনে-দিনে আরও শক্তিশালীই তো করে তুলতে চাই।’’ অতিমারির মধ্যে ক্রিকেট চালু হলেও কয়েক জন খেলোয়াড় মাঝপথে সিরিজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন মানসিক ধকল সামলাতে না পেরে।


আগ্রাসী অধিনায়কের মতোই বিরাট বিশ্বের ক্রিকেটারমহলের হয়ে প্রশাসকদের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন, সূচি তৈরির সময় ধকলের কথাটা অবশ্যই ভাবা দরকার। ‘‘বিশেষ করে এই সময়, যখন কেউ জানে না কখন বিধিনিষেধ চালু হয়ে যাবে,’’ ধরিয়ে দিচ্ছেন তিনি। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে খেলতে গিয়ে দিনের পর দিন হোটেলের মধ্যে বন্দি হয়ে কাটাতে হচ্ছে খেলোয়াড়দের। তাতে মানসিক চাপ বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞদেরও মত। গত অগস্ট-সেপ্টেম্বর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যেই আটকে রয়েছেন। একটা বলয় থেকে বেরিয়ে তাঁরা আর একটা বলয়ে ঢুকে পড়ছেন। কোহালি যদিও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের টেস্টের সময় তৈরি করা বিতর্কিত রোটেশন প্রথা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। টেস্ট জেতানোর পরেও জিমি অ্যান্ডারসনকে বিশ্রাম দিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর নীতিতে। বিরাট অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন এই বলে যে, ‘‘এটা ওদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Virat Kohli rohit sharma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE