সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি।—ছবি এপি।
বিশ্বকাপে অপ্রত্যাশিত সেমিফাইনালে হারের পরে সোশ্যাল মিডিয়া ও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহালির অন্তর্দ্বন্দ্বের খবর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ উড়ে যাওয়ার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, তাঁর ও সহ-অধিনায়ক রোহিতের মধ্যে কোনও তিক্ততার সম্পর্ক ছিল না এবং তৈরিই হয়নি।
সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ উড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট বললেন, ‘‘সমর্থকদের বিভ্রান্ত করে দেওয়ার মতো খবর। যখন প্রত্যেকে দলকে বিশ্বের এক নম্বর করে তোলার চেষ্টা করছে, তখন এ ধরনের মিথ্যে রটিয়ে তাঁদের কাজকে অসম্মান করা হচ্ছে।’’
কোহালি আরও বলেন, ‘‘যে কোনও অনুষ্ঠানে গেলে সমর্থকেরা সব সময় বলেন, বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফর্ম করেছেন। কিন্তু এক সময় মনে হয় সবই মিথ্যে। ভালো কাজকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। নজর দেওয়া হচ্ছে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত জীবনে। আকর্ষণীয় গল্প তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে যা কখনও ঘটেইনি। আর এটা অনেক দিন ধরেই ঘটতে দেখছি। যা খুবই অসম্মানজনক।’’
সহ-অধিনায়কের সঙ্গে বিশ্বকাপে একাধিক পার্টনারশিপ গড়ে দলকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত তুলে দিয়েছেন কোহালি। সেই জুটি ব্যর্থ হলে ভারতীয় দলের কী হাল হতে পারে তার উদাহরণ দেখা গিয়েছে শেষ চারের ম্যাচেই। তবুও তাঁদের কাজকে কি যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হচ্ছে? বিরাটের আরও বক্তব্য, ‘‘আমি ও রোহিত দশ বছরের বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলছি। বহু দিন একসঙ্গে খেলেছি। ওর ব্যাটিংয়ের প্রশংসা বরাবর করি। কারণ, ও প্রশংসার যোগ্য। সে রকমই ব্যাটিং করে ও।’’
কোহালি জানতে চেয়েছেন, দলের পরিবেশ ভাল না হলে ভারতের পারফরম্যান্স আদৌ এত ভাল হত? তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গত দু-তিন বছরে ভারতীয় ক্রিকেটের পারফরম্যান্স কী রকম, তা সবাই দেখেছে। টেস্টে সাত নম্বর থেকে এক নম্বরে ওঠার যাত্রা এদের হাত ধরেই। যদি দলের মধ্যে এত সমস্যাই থাকত, তা হলে তার প্রভাব কি পারফরম্যান্সে পড়ত না?’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘সাফল্যের একটি কারণ যদি পারফরম্যান্স হয়ে থাকে, তা হলে অন্যতম কারণ অবশ্যই ড্রেসিংরুমের পরিবেশ। সতীর্থদের উপর আস্থা রাখতে না পারলে তার প্রভাব পারফরম্যান্সে পড়তে বাধ্য।’’
আরও পড়ুন: রসগোল্লা-যুদ্ধে বঙ্গের সঙ্গে ম্যাচ ড্র ওড়িশার
ভারতীয় দলের হেড কোচও কোহালির সুরেই সুর মেলালেন। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘এই দলটির খেলা দেখলে একটি বিষয়ে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া যায় যে, দলের চেয়ে ব্যক্তির প্রাধান্য বেশি নয়। দল জিতলে যেমন প্রত্যেকের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করা হয়, তেমনই দল হারলেও তার দায় নিতে হয় সবাইকে।’’
শেষ তিন বছরে ভারতীয় দল যে রকম ধারাবাহিক ভাবে খেলে গিয়েছে তার উদাহরণ টেনে শাস্ত্রী বললেন, ‘‘প্রত্যেকে দলের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে খেলে। না হলে এ ধরনের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স পাওয়া সম্ভব নয়। যে দলের মধ্যে বিচ্ছেদ থাকবে, কখনওই তারা টানা ম্যাচ জিততে পারবে না।’’
শাস্ত্রীর কথা ধরেই কোহালি বলেন, ‘‘আমি যে ধরনের চরিত্রের মানুষ, কারও সঙ্গে কলহ থাকলে তা আমার মুখেই ফুটে ওঠে। সব কিছু এত জটিল ভাবে দেখতে পারি না। তা ছাড়া রোহিতের সঙ্গে বরাবর আমার সম্পর্ক ভাল। দু’জনেই দু’জনের সাফল্যে খুশি হই। বছরের পর বছর একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করার পরে এ ধরনের অসম্মানজনক কোনও খবর পড়তে হবে, ভাবতেও পারিনি।’’
বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরে অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিশ্রাম নেবেন ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু সোমবার কোহালি জানিয়ে দিলেন, আসন্ন সফরে তিনি আদৌ যেতে চান কি না তা নিয়ে কিছুই জিজ্ঞাসা করা হয়নি। বিরাট বলছিলেন, ‘‘ওয়ার্কলোড বা বিশ্রাম সম্পর্কে নির্বাচকদের কী জানানো হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই। আমার বিশ্রাম নেওয়া উচিত কি না তারও কোনও নির্দেশ পাইনি।’’
এ দিন ফের প্রশ্ন ওঠে ভারতের মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা নিয়ে। কোহালির সাফ বার্তা, ‘‘বলা হয় আমাদের টপ অর্ডার প্রচণ্ড শক্তিশালী। তার মানে মিডল অর্ডার সে রকম সুযোগ পায় না। যদিও এক-দু’টি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ হয়, তাকে ব্যর্থতা বলা যায় না। কিন্তু দিনের পর দিন টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডার সুযোগ পায়। ফলে আমার মনে হয় না, এতটা সমালোচনা ওদের প্রাপ্য। আমরা সেই ক্রিকেটারদের চাই, যারা ধারাবাহিক ভাবে নিজের কাজ করতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy