ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তিনি সাতপাকে বাঁধা পড়লেন দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা নেহা খেড়েকরের সঙ্গে। বছরের শুরুতেই তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাধ সাধে অতিমারি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
হতাশ হয়ে এক সময় ছেড়ে দেন ক্রিকেট। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে আর্কিটেক্ট হিসেবে চাকরিও নিয়ে নেন। কিন্তু মন বসেনি সেই কাজে। চাকরি ছেড়ে তিনি ফের ফিরে আসেন বাইশ গজে। পদবি দেখে বাঙালি ভেবে ভুল করেন অনেকেই। লেগস্পিনার বরুণ চক্রবর্তী কিন্তু আদতে তামিলনাড়ুর।
০২১৭
তাঁদের পরিবারের শিকড় তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরে থাকলেও বরুণের জন্ম কর্নাটকের বিদারে। ১৯৯১ সালের ২৯ অগস্ট। তাঁর বাবা সি ভি বিনোদ চক্রবর্তী বিএসএনএলের কর্মী। মা, মালিনী গৃহবধূ। বোন বন্দিতার সঙ্গে বরুণের বেড়ে ওঠা বিদারেই।
০৩১৭
ক্রিকেট খেলার শুরু ১৩ বছর বয়সে। সে সময় তিনি ছিলেন মূলত উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। পরে ক্রমবেস্ট ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মিডিয়াম পেসার হিসেবে খেলতে শুরু করেন। সে সময় হাঁটুতে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন ৬ মাস।
০৪১৭
চোট সারিয়ে ফিরে এসে তিনি কেরিয়ার শুরু করেন লেগস্পিনার হিসেবে। খেলতেন ফোর্থ ভিভিশনে জুবিলি ক্রিকেট ক্লাবে। সুযোগ পান তামিলনাড়ুর করাইকুড়ি কলাই দলে। কিন্তু খেলার সুযোগ আসেনি।
০৫১৭
২০১৮ সালে তিনি খেলেন তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে। এর পর বিজয় হজারে ট্রফির লিস্ট এ ম্যাচে তাঁর অভিষেক হয় গুজরাতের বিরুদ্ধে। ২০১৮-১৯ মরসুমে বিজয় হজারে ট্রফিতে ৯ ম্যাচে ২২ উইকেট নেন তিনি।
০৬১৭
কেরিয়ারের প্রথম দিতে সাফল্যের মাঝেও তাঁকে হতাশা গ্রাস করে। ক্রিকেট থেকে সরে আসেন বরুণ। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লক্ষ্যে পড়াশোনা শুরু করেন। আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরে ২ বছর চাকরি করেন। তার পর ফিরে আসেন ক্রিকেটেই। তাঁকে ক্রিকেটে ফিরে আসতে সাহায্য করেছিল দিনেশ কার্তিকের পরামর্শ।
০৭১৭
এ বার তাঁর স্পিনরহস্য ক্রমেই দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের কাছে। তিনি বলেন তাঁর আস্তিনে লুকিয়ে রাখা আছে অফব্রেক, লেগব্রেক, গুগলি, ক্যারম বল, স্লাইডার, ফ্লিপার এবং টপস্পিন।
০৮১৭
২০১৯ আইপিএল মরসুমের জন্য কিংস ইলেভেন পঞ্জাব কিনে নেয় ৮.৪ কোটি টাকায়। কিন্তু তাঁর প্রথম আইপিএল অভিযান সুখকর ছিল না। জীবনের প্রথম আইপিএল ম্যাচের প্রথম ওভারে তিনি ২৫ রান দিয়েছিলেন। যা এখনও অবধি আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
০৯১৭
সে বার ওই একটি ম্যাচেই খেলেছিলেন তিনি। মোট ৩৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছিলেন।
১০১৭
চলতি বছর বরুণ আইপিএল-এ খেলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। ১৩টি ম্যাচে ৩৫৬ রানের বিনিময়ে মোট ১৭টি উইকেট পান। সেরা বোলিং ২০ রানে ৫ উইকেট।
১১১৭
আইপিএল-এ দুরন্ত পারফরম্যান্সের জেরে বরুণ নির্বাচিত হন অস্ট্রেলিয়াগামী ভারতীয় দলের টি-২০ স্কোয়াডে। কিন্তু শেষ অবধি অস্ট্রেলিয়ার বিমানে পা রাখা হয়ে ওঠেনি বরুণের।
১২১৭
কাঁধে চোটের জন্য তিনি ছিটকে যান টি টোয়েন্টি স্কোয়াড থেকে। তাঁর পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজের ভারতীয় স্কোয়াডে আসেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বাঁ হাতি পেসার টি নটরাজন।
১৩১৭
জানা গিয়েছে, আইপিএলের আগে থেকেই বরুণের ডান কাঁধে চোট ছিল। চোট সারানোর জন্য অস্ত্রোপচারের দরকার ছিল। কিন্তু আইপিএলে খেলার জন্য অস্ত্রোপচার করাননি বরুণ।
১৪১৭
সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, বরুণের এই আঘাতের কথা নির্বাচকরা জানতেন না। আইপিএল থেকে দল ছিটকে যাওয়ার পরে তাঁর চোটের কথা প্রকাশ্যে আনে কেকেআর।
১৫১৭
আইপিএল-এ দুরন্ত পারফরম্যান্সের পাশাপাশি এ বছর প্রথম বার জাতীয় দলেও খেলা হয়ে যেত বরুণের। কিন্তু সেটা না হলেও আরও এক দিয়ে দিয়ে অতিমারির বছর স্মরণীয় হয়ে থাকল বরুণের কাছে।
১৬১৭
ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তিনি সাতপাকে বাঁধা পড়লেন দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা নেহা খেড়েকরের সঙ্গে। বছরের শুরুতেই তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাধ সাধে অতিমারি।
১৭১৭
দীর্ঘ লকডাউনে নেহা ছিলেন মুম্বইয়ে। বরুণ আটকে পড়েছিলেন চেন্নাইয়ের এক কনটেনমেন্ট জোনে। সব বাধা কাটিয়ে অবশেষে এক হল তাঁদের চার হাত। বরুণের কেরিয়ার বিয়ের পর কোন পথে এগোয়, দেখার অপেক্ষায় অনুরাগীরা।