আশা: স্বপ্নের উড়ান থেমে যাবে না তো, চিন্তায় বুলবুল। নিজস্ব চিত্র।
আর্থিক সমস্যায় আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ভাঙড়ের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় শাজাহান বুলবুলের।
১৪ নভেম্বর থেকে আফ্রিকার উগান্ডার কাম্পালা শহরে শুরু হচ্ছে ‘প্যারা ব্যাডমিন্টন ইন্টারন্যাশনাল’। এর আগে পেরু ওপেন ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন বিশেষ ভাবে সক্ষম খেলোয়াড় বুলবুল। কিন্তু আপাতত তাঁকে ভাবাচ্ছে আর্থিক সঙ্কট। সব মিলিয়ে খরচ প্রায় সওয়া ১ লক্ষ টাকা। তা জোগাড়ের জন্য তিনি এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে এখন দরবার করছেন বুলবুল।
ভাঙড় ২ ব্লকের ভগবানপুর এলাকায় বাড়ি তাঁর। দুই সন্তানের বাবা বুলবুলের বাম পা পোলিয়ো আক্রান্ত হয়ে অকেজো হয়ে যায়। সংসার সামলানোর জন্য ডেলিভারি বয়ের কাজ বেছে নিয়েছেন। কোনও মতে সংসার চলে। আর্থিক অনটনের মধ্যেও তিনি স্বপ্ন দেখেন, ২০২২ সালে এশিয়ান গেমস থেকে দেশকে সোনা এনে দেবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে উগান্ডায় আয়োজিত প্রতিযোগিতায় যোগ দিতেই হবে। ওই প্রতিযোগিতায় নির্দিষ্ট র্যাঙ্ক করতে পারলে পরবর্তী ক্ষেত্রে এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
শাজাহান ২০১৫ সালে লাতিন আমেরিকায় পেরু ওপেন ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে যোগদান করে ডব্লিউএইচ-২ ক্যাটাগরিতে মেন্স সিঙ্গেলস, মেন্স ডবলসে তৃতীয় স্থান হয়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন। ওই বছরই তিনি রাজ্য সরকারের থেকে ‘খেল সম্মান অ্যাওয়ার্ড’ পান। তার আগে ২০১৩ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ‘ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন’ টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যান। ২০১৪ সালেও ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন।
এর আগে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা পেয়েছেন বুলবুল। স্পনসরও পেয়েছিলেন। কিন্তু এ বার পড়েছেন সমস্যায়। তিনি বলেন, ‘‘দেশে এই মুহূর্তে আমার র্যাঙ্ক ৩। কিন্তু যা আর্থিক অবস্থা, তাতে আমার পক্ষে ব্যক্তিগত খরচে উগান্ডা যাওয়া সম্ভব নয়। বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজ্য ক্রীড়া মন্ত্রকের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। আমার স্বপ্ন, ২০২২ সালে এশিয়ান গেমসে যোগদান করে দেশকে সোনা এনে দেব। সে ক্ষেত্রে আমার উগান্ডায় ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়া প্রয়োজন।’’ বুলবুল জানান, কিছু টাকা ব্যক্তিগত উদ্যোগে জোগাড় করতে পারলেও এখনও খরচের সমস্ত টাকা জোগাড় হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে টাকার জোগাড় না হলে স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।
বুলবুলের কোচ ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমসের মতো প্রতিযোগিতায় যোগদান করতে গেলে উগান্ডায় এই ধরনের প্রতিযোগিতায় খেলা জরুরি। ও খুবই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মনের জোরে এই সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু এখন ভোগাচ্ছে আর্থিক সমস্যা। আমরাও ওর পাশে থেকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।’’
ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনিক ভাবে ওর হাতে বেশ কিছু টাকা তুলে দিয়েছি। এ ছাড়া, এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy