নজরে: রাশিয়ার জ়াভুর উগুয়েভের বিরুদ্ধে ফাইনালে লড়াই রবি কুমার দাহিয়ার। বৃহস্পতিবার। পিটিআই
দরকার ছিল আর একটা মাত্র জয়ের। তা হলেই মুঠোয় চলে আসত কাঙ্ক্ষিত সোনা। সেই পথে কাঁটা বিছিয়ে দিলেন রুশ প্রতিদ্বন্দ্বী জ়াভুর উগুয়েভ। ৫৭ কেজি ফ্রিস্টাইল ফাইনালে ৪-৭ হেরে রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল ২৩ বছরের রবি কুমার দাহিয়াকে।
বৃহস্পতিবারের সোনার লড়াই ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। শুরুতে রুশ প্রতিপক্ষ এগিয়ে গেলেও পাল্টা লড়াইয়ে সোনার দৌড়ে ফিরে এসেছিলেন হরিয়ানার নাহরি গ্রামের পালোয়ান। প্রথম রাউন্ডের শেষে ৪-২ এগিয়ে ছিলেন জ়াভুর। তবে দ্বিতীয়ার্ধের লড়াইয়ে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকেন রবি। সামান্য কৌশল পাল্টে জ়াভুর ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁর হাত থেকে। তার পরেও একটা সময় ফল ছিল ৪-৭। এর পরে আর পাল্লা দিতে পারেননি ভারতীয় কুস্তিগির। অভিষেক অলিম্পিক্সের সমাপ্তি রুপোতে।
পরিসংখ্যান বলছে, সুশীল কুমারের পরে দ্বিতীয় কুস্তিগির হিসেবে অলিম্পিক্স থেকে রুপো জয় করলেন রবি। কিন্তু তথ্যে বিশ্বাসী নন মহাবলী সতপাল সিংহের ছাত্র। সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “এটাই কী চেয়েছিলাম? রুপো পেলাম বটে কিন্তু লক্ষ্যে তো পৌঁছতে পারলাম না।” যোগ করেছেন, “বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, টোকিয়ো থেকে সোনা নিয়ে গ্রামে ফিরব। গতকালও বাবা বারবার করে বলে দিয়েছিলেন সোনা নিয়ে ফিরিস বেটা। পারলাম না বাবা। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে কথাও দিচ্ছি, পরের অলিম্পিক্সে এই রুপোকে সোনায় বদলে দেব।”
ভারতীয় কুস্তির নতুন তারার সেই প্রত্যয়ী ঘোষণাকে স্বাগতই জানিয়েছেন পূর্বসুরি যোগেশ্বর দত্ত, যিনি ন’বছর আগে লন্ডন অলিম্পিক্স থেকে নিয়ে এসেছিলেন ব্রোঞ্জ। তিনি বলছেন, “আমি তো হতাশ হওয়ার কোনও কারণই দেখছি না। রবির বয়স এখন মাত্র ২৩। তিন বছর পরে প্যারিস থেকে ও নিশ্চিত ভাবে সোনা নিয়ে ফিরবে। জীবনের প্রথম অলিম্পিক্সে রবি যে সমস্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে এনেছে, তাতে এই রুপো প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে অসাধারণ। বরং আমি মনে করি, ভারতীয় কুস্তিতে নতুন এক দিগন্তে উন্মোচন হল রবির এই সাফল্যে।”
পদকজয়ী ভারতের নতুন পালোয়ান কী বলছেন? “আমি তো বরাবর বলে এসেছি, রুপো জেতার জন্য টোকিয়োয় আসিনি। তবে ফাইনালে হারের পরে মনে হচ্ছে, যা শিখেছি এত দিন ধরে তাতে হয়তো রুপো জয়ই নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু সেটা আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না,” বলেছেন রবি। যোগ করেছেন, “দেশবাসী যে ভাবে আমার সাফল্যের জন্য অবিরত প্রার্থনায় মগ্ন ছিলেন, তার যথার্থ মূল্যটা দিতে পারলাম না। তবে কথা দিচ্ছি, যে ঘাটতির কারণে সোনা অধরা রয়ে গেল, তা পরের অলিম্পিক্সে ছিনিয়ে নেব।”
ফাইনালে কোন জায়গায় তিনি পিছিয়ে পড়লেন? রবির অকপট স্বীকারোক্তি, “ওর লড়াইয়ের ধরনটা একটু অন্য রকমের। বিশেষ করে, রক্ষণটা খুবই জমাট। ফলে কী ভাবে ওকে প্যাঁচে ফেলব, সেটা বুঝেই উঠতে পারিনি। আশা করব, এই ঘাটতি পূরণ করে নিজেকে নিখুঁত করে তুলতে পারব।” যদিও সতপাল বলেছেন, “জ়াভুর সোনা জিতেছে ঠিকই কিন্তু ওকে হারানো যায় না সেটা মানতে রাজি নই। রবি ওর চেয়ে অনেক ভাল কুস্তি লড়ে। আমি মনে করি, সোনা জয়ের সুবর্ণ সুযোগই এ বার হাতছাড়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy