Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Indian Bowling

Tokyo Olympics: ব্রোঞ্জ জয়ী লভলিনার সোনা না পাওয়ার কারণ খুঁজে বের করলেন আলি কামার

টোকিয়ো অলিম্পিক্সের এই সফরটা মোটেও সহজ ছিল না লভলিনাদের জন্য। গত বছর থেকে করোনার জন্য মহিলা দলের অনুশীলনে ব্যাঘাত ঘটেছিল।

সেমিফাইনালে হারলেও ব্রোঞ্জের সঙ্গে সবার মনও জিতলেন লভলিনা।

সেমিফাইনালে হারলেও ব্রোঞ্জের সঙ্গে সবার মনও জিতলেন লভলিনা। ছবি - টুইটার

সব্যসাচী বাগচী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ১৬:৩৬
Share: Save:

অসমের মেয়েটার সোনা জেতা হল না। তুরস্কের বুসেনাজ সুরমেনেলির কাছে ০-৫ ব্যবধানে হেরে ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল লভলিনা বড়গোহাঁইকে। তবে জাতীয় দলের মুখ্য প্রশিক্ষক আলি কামার ছাত্রীর সাফল্যে গর্বিত। তিনি মনে করেন বিপক্ষের আক্রমণাত্মক মেজাজের কাছেই হার মানলেন লভলিনা। তাই তিনি মোটেও হতাশ নন। বরং চলতি টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ছাত্রীর লড়াই ও জেদের জন্য আলি গর্বিত।

ম্যাচের পর টোকিয়ো থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে সেটাই জানালেন। আলি বলছিলেন, “সোনা জেতার লক্ষ্য নিয়ে লভলিনা রিংয়ে নেমেছিল। তবে প্রতিপক্ষ যে শীর্ষ বাছাই সেটাও তো স্বীকার করতে হবে। আসলে আমাদের পরিকল্পনা এ দিন কাজে লাগেনি। প্রথম রাউন্ডে লভলিনা সফল হলেও দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বুসেনাজ আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে শুরু করে। লভলিনার দুর্বল জায়গায় আঘাত করার জন্য ও ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। এটাই হারের বড় কারণ। তবে সেমিফাইনালে হারলেও আমরা হতাশ নই। কারণ দেশে একটা পদক ফিরছি। অনেক প্রতিকুলতাকে জয় করে এটাই তো আমাদের বড় প্রাপ্তি।”

গত ৩০ জুলাই জোরালো কোয়ার্টার ফাইনালে চাইনিজ তাইপেইয়ের চেন নিয়েন-চিনকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। খেলার ফলাফল ছিল ৪-১। কিন্তু এ দিন তাঁর ছাত্রী কোথায় ভুল করেছিলেন সেটাও বিশ্লেষণ করলেন প্রাক্তন বক্সার। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “বুসেনাজের বডি মুভমেন্ট ও ডিফেন্স খুব ভাল। সেই জন্য ওর কাউন্টার অ্যাটাক মারাত্মক। তাই লভলিনাকে মাঝামাঝি জায়গা থেকে খেলতে বলেছিলাম। আমাদের ধারণা ছিল লভলিনা মিডিয়াম রেঞ্জ থেকে খেললে বিপক্ষ আক্রমণ করতে পারবে না। সেটা প্রথম রাউন্ডে দেখাও যায়। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে কৌশল বদল করে বুসেনাজ। ও লভলিনাকে আক্রমণ করার সুযোগ দিয়েছিল। সেই ফাঁদে পা দিয়ে লভলিনা ওর কাছাকাছি যেতেই পরপর পাঞ্চ মারতে শুরু করে দেয় বুসেনাজে। লভলিনা সেই ধাক্কা সামলাতে পারেনি।”

আলি কামারের সঙ্গে এক ফ্রেমে লভলিনা। ফাইল চিত্র

আলি কামারের সঙ্গে এক ফ্রেমে লভলিনা। ফাইল চিত্র

গত চার দিন বিপক্ষের ভিডিয়ো দেখে অনুশীলন করেছিলেন লভলিনা। ম্যাচের সময় অনুসারে আলি ও দলের হাই পারফরম্যান্স কোচ রাফায়েল বেরগামাস্কো মেয়েটার অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হল না। যদিও আক্ষেপ করছেন না আলি। বলছিলেন, “কোভিড বাধা হয়ে না দাঁড়ালে আমরা আরও ভাল ফল করতে পারতাম। করোনার জন্য ভাল ভাবে অনুশীলন করাই গেল না। আমাদের দলের একাধিক সদস্য ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। লভলিনাও রেহাই পায়নি। তবুও মনের জোর বজায় রেখে ঘর বন্দি অবস্থায় অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছে। ফিটনেসের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। আমাদের অনেকে অসুস্থ হলেও ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের সঙ্গে রোজ যোগাযোগ রেখেছি। অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার দুই মাস আগে আমাদের শিবিরের ২১ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তবুও কিন্তু লভলিনা অলিম্পিক্সের আসরে মনের জেদ হারায়নি।”

ভারতের প্রথম বক্সার হিসেবে ২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত তাঁর অলিম্পিক্সের রিংয়ে নামা হয়নি। খেলোয়াড় হিসেবে সেই আক্ষেপ বয়ে বেড়ালেও প্রশিক্ষক হিসেবে সেই জ্বালা মিটিয়ে নিলেন। অবশেষে অলিম্পিক্সে পদক জয়ের স্বাদ পেলেন বাংলার এই বক্সার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE