ফাইনালে নীরজ চোপড়া। ছবি: রয়টার্স
নীল রঙের জ্যাকেটটি খুললেন। গায়ে নীল জামা, নীল প্যান্ট। একাধিক জ্যাভলিনের মধ্যে থেকে হাতে তুলে নিলেন হলুদ রঙের জ্যাভলিন। চোখে মুখে কোনও আবেগের লেশমাত্র নেই। এমন কাজ তিনি রোজই করেন। জ্যাভলিন ট্র্যাকে দৌড় শুরু করলেন। শুরুতে ধীরে। তার পর গতি বাড়ালেন। লাইনের কাছাকাছি এসে ছুড়ে দিলেন তাঁর জ্যাভলিন। মুখ থুবড়ে পড়ে যাচ্ছিলেন, সামনে হাত রেখে নিজেকে সামলে নিয়েই উঠে দাঁড়ালেন। চোখ সরল না জ্যাভলিনের থেকে। প্রথম থ্রোয়েই জ্যাভলিন পৌঁছল ৮৮.৩৯ মিটার দূরে। সরাসরি ফাইনালে যোগ্যতা অর্জন করতে প্রয়োজন ছিল ৮৩.৫০ মিটার। কাজ শেষ মাত্র ১২ সেকেন্ডে। তার পরেও ফাইনালে নিজেকে ফেভারিট মনে করছেন না নীরজ।
শুক্রবার ভোরবেলা ভারত তাকিয়েছিল তাঁর দিকেই। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী নীরজই যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের পদক জয়ের অন্যতম আশা। ফাইনালে উঠলেন প্রথম ১২ জনের মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে। প্রথম স্থানে গ্রেনাডার অ্যান্ডারসন পিটারস। তিনি ছুড়লেন ৮৯.৯১ মিটার। গত বারের চ্যাম্পিয়ন পিটারস যে ফাইনালেও নীরজকে কঠিন পরীক্ষার সামনে ফেলবেন তা জানেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনার পদকজয়ী। সেই কারণেই ফাইনালে উঠে নীরজ বলেন, “শুরুটা ভাল হয়েছে। ফাইনালে নিজের ১০০ শতাংশ দিতে হবে। দেখা যাক কী হয়। প্রতিটা দিন আলাদা। আমি নিজের সেরাটা দেব। ওই দিন কে সব থেকে বেশি দূরে ছুড়বে তা আগে থেকে বলা কঠিন।”
যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিজের দৌড় নিয়ে খুশি হতে পারছেন না নীরজ। তিনি বলেন, “দৌড়ের সময় আমি একটু এ-দিক ও-দিক বেঁকে গিয়েছিলাম। যদিও ছোড়াটা ভাল হয়েছে। অনেকে খুব ভাল ছুড়ছে। এই বছর বেশ কয়েক জন খেলোয়াড় নিজেদের সেরা দূরত্বে ছুড়েছেন। সকলে খুব ভাল ছন্দে রয়েছে।”
নীরজের নিজের সেরা দূরত্ব ৮৯.৯৪ মিটার। এটি ভারতের জাতীয় রেকর্ডও। ২০১৭ সালে প্রথম বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন নীরজ। সে বার লন্ডনে ফাইনালে উঠতে পারেননি তিনি। ৮২.২৬ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়েছিলেন। ২০১৯ সালে দোহা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কনুইয়ের চোটের কারণে অংশ নিতে পারেননি।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো পেয়েছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের ইয়াকুব ভাদলেজ। তিনিও প্রথম থ্রোয়েই যোগ্যতা অর্জন করেন। ভাদলেজ ছোড়েন ৮৫.২৩ মিটার। গ্রুপ এ-তে দ্বিতীয় হন তিনি। ১২ জনের মধ্যে চতুর্থ স্থানে।
দোহা এবং স্টকহোম ডায়মন্ড লিগে সোনা জিতেছেন পিটারস। যিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ্যতা অর্জন পর্বে প্রথম হয়ে ফাইনালে উঠেছেন। স্টকহোমে তাঁর কাছে হেরেই রুপো পেয়েছিলেন নীরজ। জার্মানির জুলিয়ান ওয়েবেরও সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তিনি ছোড়েন ৮৭.২৮ মিটার। ১২ জনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। মোট চার জন প্রতিযোগী সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করেছেন। পাকিস্তানের আরশাদ নাদিমও ফাইনালে উঠেছেন। তিনি গ্রুপ বি-তে চতুর্থ হয়েছেন। ৮১.৭১ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়ে ১২ জনের মধ্যে নবম স্থানে তিনি।
রবিবার সকালে নীরজ সোনা জিতলে এক বিরল কীর্তি গড়বেন। তৃতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসাবে অলিম্পিক্সে সোনা জেতার পরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই সোনা জিতবেন। এর আগে নরওয়ের আন্দ্রিয়াস থরকিল্ডসেন (২০০৮-০৯) এবং চেক প্রজাতন্ত্রের জান জেলেঞ্জি (১৯৯২-৯৩ ও ২০০০-০১) এই কীর্তি অর্জন করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy