Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
West Indies

ক্রিকেটে বিপ্লব তৈরি করেছে আইপিএল, পটৌদি বক্তৃতায় বললেন ক্লাইভ লয়েড

ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়কের মুখে উঠে এল নানা কথা।

আইপিএলের উত্থান নিয়ে খুশি লয়েড।

আইপিএলের উত্থান নিয়ে খুশি লয়েড। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২১ ২১:২৩
Share: Save:

আইপিএল শুরুর অনেক আগেই তিনি ব্যাট তুলে রেখেছিলেন। কিন্তু বাকি বিশ্বের মতো এই টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার আকর্ষণ এড়াতে পারেননি। যে ভাবে আইপিএলের দেখাদেখি বাকি বিশ্বে একের পর এক দলভিত্তিক প্রতিযোগিতার সংখ্যা বেড়েছে এবং পরের পর ক্রিকেটার উঠে এসেছেন, তা দেখে অভিভূত ক্লাইভ লয়েড

বুধবার টাইগার পটৌদি স্মৃতি বক্তৃতা দেন লয়েড। সেখানেই বললেন, “আইপিএল নিয়ে বলতে গেলে সহজে থামা যাবে না। আইপিএল এক কথায় ক্রিকেটের মানচিত্রটাকেই বদলে দিয়েছে। যাঁরা ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত তাঁরা কোনও ভাবেই একথা অস্বীকার করতে পারবেন না যে, অর্থ, ফিটনেস এবং নতুন নতুন শট তৈরি হওয়ার ব্যাপারে আইপিএল দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। নতুন নতুন ক্রিকেটার উঠে আসার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছে আইপিএল। অভিজ্ঞতায় ভরপুর ক্রিকেটারদের সঙ্গে তরুণরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছে। অর্থের দিকটাও উপেক্ষা করলে চলবে না। সব দিক থেকে আইপিএল প্রচণ্ড সফল।”

কোভিড অতিমারির কারণে এ বারও এই বক্তৃতা হয়েছে অন্তর্জালের সাহায্যেই। সেখানেই কথা বলতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়কের মুখে উঠে এল নানা কথা। পটৌদির সঙ্গে তাঁর পরিচয় এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা যেমন বললেন, তেমনই নিজের দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের উঠে আসার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও ছিল। খেলাধুলোর প্রয়োজনীয়তাও উঠে এল তাঁর বক্তব্যে।

লয়েডের ক্রিকেটজীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত ভারত। এই দেশেই প্রথম টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। প্রথম বার অধিনায়কত্বও এখানে। ১৯৭৪-৭৫ মরসুমে সে বার পটৌদির ভারতের বিপক্ষেই নেমেছিলেন। ভারতেই তাঁর প্রথম সিরিজ জয় এবং টেস্টে প্রথম দ্বিশতরান। সেই লয়েড বললেন, “ভারতীয় ক্রিকেটে অন্যতম সেরা চরিত্র নিঃসন্দেহে পটৌদি। ওর উপস্থিতিই গোটা দলে আলাদা প্রভাব ফেলত। ৫৪ বছর ধরে ওকে চিনতাম। সৌভাগ্যবশত, কখনও আমাদের বিরুদ্ধে সিরিজ জিততে পারেনি। ফিল্ডার হিসেবে যেমন অসামান্য ছিল, তেমনই ছিল ওর ব্যাটিং। পায়ের নড়াচড়া অনবদ্য। তাই দারুণ শট খেলতে পারত।”

লয়েডের সংযোজন, “আইসিসি-র ম্যাচ রেফারি হওয়ার পর ওর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দু’জনে একসঙ্গে অনেক পার্টি করেছি। অনেক দেশে গিয়েছি। একসঙ্গে অনেক মজা করেছি।”

সত্তর এবং আশির দশকে দুনিয়া কাঁপিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু লয়েডের কথায়, এই সাফল্য সহজে আসেনি। অনেক ঘাম-রক্ত জড়িয়ে রয়েছে। বলেছেন, “আমাদের টানা ২৭টি টেস্ট ম্যাচ অপরাজিত থাকা নিয়ে অনেক লেখা হয়। কিন্তু এর পিছনে ইতিহাস রয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিটি দ্বীপের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জাতিগত এবং রাজনৈতিক পার্থক্য রয়েছে। তখন ট্রেড ইউনিয়নের ব্যপক রমরমা। সে সব পেরিয়ে একটা দল হয়ে ওঠার কাজ সহজ ছিল না। অনেক সময়ই সঠিক দল গড়তে হিমশিম খেতে হত আমাদের। কিন্তু পঞ্চাশের দশকে গোটা দলকে ছন্দে বাঁধেন ফ্র্যাঙ্ক ওরেল। ১৯৬২-তে ফেডারেশনের পতনের পর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে দুটো জিনিসই টিকে ছিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্রিকেট দল।”

লয়েডের সংযোজন, “১৯৫০-এ লর্ডসে ওই জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বদলে দেয়। মানুষের মধ্যে ক্রিকেট ঘিরে একটা ভালবাসা গড়ে ওঠে। একটা সময় ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা, ফিটনেস তলানিতে ঠেকেছিল। আমাদের কটাক্ষ করে ‘ক্যালিপসো’ ক্রিকেটার বলে ডাকা হত। সেই জায়গা থেকে দল ঘুরে দাঁড়ায় ওরেলের তত্ত্বাবধানে। উনি না থাকলে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোন অতলে তলিয়ে যেত কেউ জানে না।” লয়েড জানিয়েছেন, নিজে অধিনায়ক থাকাকালীনও অনুসরণ করেছেন ওরেলকে। ফলে গ্যারি সোবার্স, রোহন কানহাইরা লড়াকু ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।

বক্তৃতার শেষ দিকে লয়েডের মুখে উঠে এসেছে খেলাধুলোর গুরুত্বের কথা। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক মনে করেন, খেলাধুলোর প্রসারের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা নেওয়া উচিত সরকারের। বলেছেন, “প্রতিটি বিদ্যালয়ে খেলাধুলো চালু করা উচিত। অনেকেই জানে না যে সঠিক এরোবিক্স করলে স্মৃতিশক্তির উন্নতিতে তা অনেক সাহায্য করে। খেলাধুলোর মাধ্যমে দলগত ঐক্য তৈরি হয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Clive Lloyd West Indies tiger pataudi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy