Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Linthoi Chanambam

Linthoi Chanambam: পাড়ার ছেলেদের মেরে হাসপাতালে পাঠানো মণিপুরের ১৫ বছরের কিশোরীই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন

ছোট বয়সে লিনথোই ভাবত, বড় হয়ে সে ছেলে হবে। ছেলেদের সঙ্গেই জুডো খেলত সে। তার সঙ্গে লড়াইয়ে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই চোট পেত কেউ না কেউ।

লিনথোইয়ের চোখ এখন অলিম্পিক্সে।

লিনথোইয়ের চোখ এখন অলিম্পিক্সে। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২২ ১৩:১৫
Share: Save:

প্রথম ভারতীয় হিসাবে জুডোয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মণিপুরের লিনথোই চানাম্বাম। মহিলাদের ৫৭ কেজি বিভাগে লিনথোইয়ের কীর্তি গড়ার পিছনে রয়েছে এক মজার গল্প।

মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মায়াংয়ে বাড়ি লিনথোইয়ের। ছোট থেকেই জুডোর প্রতি আগ্রহ তার। কিন্তু মেয়েদের সঙ্গে লড়াই পছন্দ ছিল না লিনথোইয়ের। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে লড়াই করত। ছোট্ট লিনথোইয়ের সঙ্গে জুডোর লড়াইয়ে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোনও না কোনও ছেলে চোট পেত।

ছেলেদের সঙ্গে খেলা কেন পছন্দ ছিল? লিনথোই হাসতে হাসতে বলেছে, ‘‘ছোট থেকেই জুডো খেলতে ভাল লাগত। তখন ভাবতাম বড় হয়ে ছেলে হব। বড় হলেও যে মেয়েই থাকব, এটা বুঝতে পারতাম না। তাই ছেলেদের সঙ্গেই খেলতাম। আমার বন্ধুরা প্রায় সবাই ছেলে ছিল। দু’এক জন ছিল মেয়ে। সে জন্য ছেলেদের সঙ্গেই খেলতাম। অনেকেরই চোট লেগে যেত। তার পর ওদের নিয়ে বাবা-মাকে ছুটতে হত স্থানীয় হাসপাতালে।’’

ছোট থেকে যে খেলার প্রতি আকর্ষণ, সেই জুডোয় প্রথম ভারতীয় হিসাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে উচ্ছ্বসিত ১৬ বছরের কিশোরী। লিনথোই বলেছে, ‘‘দারুণ লাগছে আমার। ঠিক বলে বোঝাতে পারব না। মন থেকে যেতে চাইতাম, ঠিক সেটাই করতে পেরেছি।’’

লিনথোইয়ের লক্ষ্য ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক্সে ভাল ফল করা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলেছে, ‘‘প্যারিসে সোনা জিততে চাই। তার জন্য নিজের সেরাটাই দেব। ২০২৪ সালে যদি নাও পারি, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে সোনা জিতবই।’’

সাত বছর বয়স থেকে জুডো শুরু করে লিনথোই। বাবা কৃষিজীবী। মা সংসার সামলান। এক দিদি এবং এক বোন আছে তার। লিনথোই বলেছে, ‘‘২০১৪ সাল থেকে জুডো খেলতে শুরু করি। ২০১৭ সালে কর্নাটকের বেল্লারির ইন্সপায়ার ইন্সস্টিটিউট অব স্পোর্টসে ভর্তি হই। খেলার জন্য ছোট থেকেই সকলের খুব সাহায্য পেয়েছি। যদিও বাবাই সব থেকে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন আমায়।’’ লিনথোই আরও বলেছে, ‘‘বেল্লারির আগে বাড়ির কাছেই একটা ছোট অ্যাকাডেমিতে জুডো শিখতাম। বাবাই নিয়ে যেতেন। সারাক্ষণ থাকতেন। বক্সিং এবং ফুটবলও আমার প্রিয় খেলা। আসলে বাড়ির কাছে কয়েকটা জুডো অ্যাকাডেমি থাকায় এই খেলাটাই বেছে নিয়েছি। বাবা সব সময় আমাকে কাছে রাখতেন। যে দিন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে একা তেলঙ্গানার ট্রেনে উঠলাম, সে দিন বাবা কেঁদে ফেলেছিলেন।’’

লিনথোইয়ের কোচ মামুকা কিজিলাশিলি বলেছেন, ‘‘ওর সব কিছুই বাবা। বাবাকে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারে না লিনথোই। ওদের বাবা-মেয়ের সম্পর্ক সত্যিই দুর্দান্ত।’’ তেলঙ্গানার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেই লিনথোইকে প্রথম দেখেন তিনি। তখনই বুঝতে পারেন, মণিপুরের ছোট্ট মেয়েটার প্রতিভা রয়েছে। বলেছেন, ‘‘জুডো নিয়ে ওই বয়সে ওর আবেগ আমাকে অবাক করেছিল। ভাল অ্যাথলিট হওয়ার সব গুণই লিনথোইয়ের ছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ায় (সাই) ওকে ভর্তি নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছিলাম। সকলেই দেখতে পাচ্ছেন আমার সেই সুপারিশের ফলাফল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy