স্মৃতি: ছ’ বছর আগে মরুদেশে ধুমধাম করে এই ভাবেই হয়েছে আইপিএল। চলতি বছরে সেই আমিরশাহিতেই হতে পারে ভারতের এই টি-টোয়েন্টি লিগ।
করোনাভাইরাস অতিমারি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আইপিএল আয়োজনের প্রাথমিক নকশা তৈরি রাখছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শুক্রবার অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকের পরে যা ইঙ্গিত, তাতে এই টি-টোয়েন্টি মহাযজ্ঞ বিদেশের মাটিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বোর্ড কর্তারা চেষ্টা করছেন, যাতে একই দিনে দু’টো করে ম্যাচের সংখ্যা বাড়িয়ে যদি পুরো প্রতিযোগিতাই করা হয়। অর্থাৎ, প্রায় ৬০টি ম্যাচ। একান্তই না হলে, বিকল্প রাস্তাও তৈরি রাখা হচ্ছে। দু’টি দেশ রয়েছে আইপিএল আয়োজনের দৌড়ে। শ্রীলঙ্কা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। দু’দেশের মধ্যে আমিরশাহি যে কিছুটা হলেও এগিয়ে, তা শনিবারের আনন্দবাজারেই প্রকাশিত হয়েছে। তার কারণ, আইপিএলের বিনোদনমূলক চরিত্রের সঙ্গে আমিরশাহি বেশি মানায় বলে বোর্ড কর্তাদের একাংশের মত। মরুদেশে অতীতে আইপিএল হয়েছে, সেটাও ফেলে দেওয়ার মতো তথ্য নয়। আমিরশাহি কর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন ভারতীয় বোর্ডের প্রভাবশালী কর্তাদের সঙ্গে। এতটাই তাঁরা আগ্রহী আইপিএল করার জন্য যে, নানা রকম বন্ধুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও দিয়ে চলেছেন।
তা বলে শ্রীলঙ্কা একেবারে আলোচনা থেকে হঠে গিয়েছে, তাও কিন্তু বলা যাবে না। বোর্ডের মধ্যেই প্রভাবশালী কারও কারও মত, শ্রীলঙ্কাই বিদেশের মধ্যে সেরা বিকল্প। তার কারণগুলো এ রকম:
১) শ্রীলঙ্কা একদম হাতের কাছে। চেন্নাই থেকে চল্লিশ মিনিটের উড়ান পথে পৌঁছে যাওয়া যাবে। সেই কারণে আমিরশাহির মতো ব্যয়বহুল হবে না। ২) দুবাই বিমানবন্দর খুলে দিলে সারা বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ আসবেন, তাতে সংক্রমণের ভয়ও বেশি থাকবে। এখন যতই সেখানে করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রিত হোক, নতুন করে ফিরে আসবে না, কে বলতে পারে? ৩) দুবাই জাঁকজমকে এগিয়ে ঠিকই, কিন্তু ক্রিকেটীয় পরিকাঠামোর দিক থেকে শ্রীলঙ্কা পিছিয়ে নেই। কলম্বোতেই অন্তত তিনটি ভাল মাঠ রয়েছে। গল বা ডাম্বুলাতেও খেলা করা যেতে পারে। একই দিনে দু’টি করে ম্যাচ আয়োজন করে ছোট মেয়াদের মধ্যে আইপিএল শেষ করতে চাইলে শ্রীলঙ্কা মোটেও খারাপ বিকল্প নয়। সেই পরিকাঠামো জয়সূর্যদের দেশে মজুত রয়েছে। ৪) শ্রীলঙ্কায় করোনার প্রকোপ কম এবং নিভৃতবাসের মেয়াদ এখন থেকেই সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। এক দিনের নিভৃতবাস সেরে করোনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এলেই ছাড়। আমিরশাহি কর্তারা জানিয়েছেন, ওখানেও করোনা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে নিভৃতবাসের মেয়াদ কমে এক বা দু’দিনের হয়ে যাবে। সঙ্গে এটাও বলেছেন তাঁরা যে, সংক্রমণ আরও কমতে থাকলে ভ্রমণের জন্যও আমিরশাহিকে খুলে দেওয়া হবে। তবু চিন্তা থাকছে কারণ, দুবাইয়ে সংক্রমণ ভালই ছড়িয়েছিল এবং এখনও কেউ জানে না, কমে আসা মানে একেবারে নির্মূল হওয়া কি না।
যা দাঁড়াচ্ছে, জাঁকজমকে এগিয়ে আমিরশাহি। কিন্তু নিরাপত্তার দিকটা ভাবলে শ্রীলঙ্কাকে উপেক্ষা করা সহজ হচ্ছে না। আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা চালু রেখেছেন বোর্ডের কর্তারা। তাঁদের পছন্দ কী, সেটাও দেখা হচ্ছে। অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকে যদিও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, জয় শাহরা একমত হন যে, প্রথমে ভারতেই আইপিএল করার চেষ্টা করতে হবে। যদি সম্ভব না হয়, তবেই বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হবে। কিন্তু তাঁরা যতই বলুন, ভারতে কোথায় আইপিএল হবে? কেউ জোর দিয়ে বলতে পারছে না। একটি জায়গাতে করতে হলে সেরা পছন্দ হতে পারত মুম্বই। কারণ, একই শহরে ওয়াংখেড়ে, ব্রেবোর্ন, ডিওয়াই পাটিল মিলিয়ে তিনটি বড় মাঠ রয়েছে। পাশেই রয়েছে পুণে। কিন্তু একে মুম্বইয়ে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ, তার উপরে পুণেতেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। কোনও আশাই নেই। আইপিএলের আটটি দলের মধ্যে অন্তত পাঁচটি শহরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, হায়দরাবাদ। আশঙ্কা যে, আগামী দু’মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই ভারতে আইপিএলের আশা কার্যত নেই।
অগত্যা বিদেশই ভরসা। কিন্তু সেখানেও তাৎপর্যপূর্ণ হবে, ভারতে করোনা পরিস্থিতি কী রকম থাকে। বিরাট কোহালিদের বাড়ি থেকে বেরোনোই যদি নিরাপদ না হয়, তা হলে আইপিএল কে খেলবে?
আরও পড়ুন:খেলরত্নের যোগ্য নন, বললেন হরভজন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy