সাক্ষাৎ: নিভৃতবাস শেষ হতেই জিমে বুমরা ও কোহালি। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
ভারতীয় দলের আর্জি মেনে শেষ পর্যন্ত পরিবার নিয়ে আসার অনুমতি দিল ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। প্রায় চার মাসের দীর্ঘ সফরে যাচ্ছেন বিরাট কোহালি, রোহিত শর্মা, অজিঙ্ক রাহানে, আর অশ্বিনরা। বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল দলের এবং ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে যাতে পরিবার সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সবুজ সঙ্কেত এসে গিয়েছে। আগামী ২ জুন ভারতীয় দলের রওনা হওয়ার কথা ইংল্যান্ডের উদ্দেশে।
মুম্বইয়ে নিভৃতবাস পর্ব কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে দলের। যদিও আগের মতো মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে কোথাও নৈশভোজ সারতে বেরিয়ে পড়ার উপায় নেই। দেশের করোনা পরিস্থিতি এখনও রীতিমতো উদ্বেগজনক, তাই মুক্তি বলতে ক্রিকেটারেরা হোটেলের মধ্যেই ঘোরাফেরা করতে পারলেন। টিম রুমে গিয়ে সময় কাটালেন। এত দিন কঠোর নিভৃতবাস পর্বে কেউ কারও মুখ দেখতে পারছিলেন না, একে অন্যের ঘরে যাওয়াও বারণ ছিল। এ বার সেই মেলামেশা তাঁরা করতে পারবেন। জিমে গিয়ে এক সঙ্গে ট্রেনিংও করলেন অনেকে। বিরাট কোহালি, যশপ্রীত বুমরাদের শারীরিক চর্চার সেই ভিডিয়ো তুলে দিয়ে ভারতীয় বোর্ডও টুইটারে লিখেছে, প্রস্তুতি তুঙ্গে। ভারতীয় দলের ‘স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং’ কোচ সোহম দেশাই বোর্ডের ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘‘গত বারের আইপিএল থেকে ধরলে দীর্ঘ মরসুম কাটিয়েছে ক্রিকেটারেরা। আমরা তাই ভাল করে বিশ্রাম নিতে বলেছিলাম সকলকে। নিভৃতবাসে এসে ধীরে ধীরে ট্রেনিং করানো শুরু করেছি। হোটেলে ঘরের মধ্যে ওজন ব্যবহার করতেও বলা হয়েছিল। সপ্তম দিন থেকে আলাদা ভাবে জিমে গিয়ে ব্যক্তিগত ট্রেনিং শুরু করে ক্রিকেটারেরা। প্রত্যেকে এখন ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি।’’ এক দিনের মধ্যেই তাঁদের ইংল্যান্ডের উড়ানে উঠে পড়ার কথা।তার আগে দেশে ১৪ দিনের কঠোর নিভৃতবাস পর্ব সারতে হয়েছে, নিয়মিত ভাবে করোনা পরীক্ষাও করানো হয়েছে। ইংল্যান্ডে নামতে হবে ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট নিয়ে। প্রথমে কেন উইলিয়ামসনের নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলবেন কোহালিরা। তার পরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ। দীর্ঘ সফরে পরিবার নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন সকলে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয়, ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করায় প্রায় প্রত্যেক দেশেই এখান থেকে যাত্রী যাওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সেই অবস্থায় পরিবার-সহ ভারতীয় দলের আসার অনুমতি দেওয়া সহজ হচ্ছিল না। পরিবার তাঁদের সঙ্গে মুম্বইয়ে নিভৃতবাস পর্ব শুরু করলেও ক্রিকেটারদের অনেকে নিশ্চিত ছিলেন না, শেষ পর্যন্ত অনুমতি আসবে কি না। যদিও দীর্ঘ সফরে জৈব সুরক্ষিত বলয়ে থাকার মানসিক চাপের কথা ভেবে তাদের দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলে ইংল্যান্ড বোর্ড বিশেষ অনুমতি দিতে পেরেছে। মূলত দু’টি কারণে পরিবার সঙ্গে যাওয়ার আর্জি পাশ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক) এটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। ভারত খেলবে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। তার পরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ। বহুদেশীয় টুর্নামেন্ট হলে আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। এমনও শোনা গেল যে, উইম্বলডনের আগে লন্ডনে যে কুইন্স ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ হয়, সেখানে টেনিস তারকাদেরও পরিবার নিয়ে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে খেলোয়াড়েরা আসবেন। ক্রিকেটের ক্ষেত্রে শুধু একটি দেশ থেকেই সব খেলোয়াড় আসছেন বলে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি সামলানো অপেক্ষাকৃত সহজ। দুই) দীর্ঘ সফরে জৈব সুরক্ষিত বলয়ে থাকার কারণে যে মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে, সেটাও ভেবে দেখা হয়েছে।
উইলিয়ামসনের নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সেরার মুকুটের লড়াই সাউদাম্পটনে। সেখানে সোজাসুজি পৌঁছে মাঠের মধ্যে থাকা হোটেলে থাকবে ভারতীয় দল। সেখানেও চলবে নিভৃতবাস পর্ব এবং নিয়মিত করোনা পরীক্ষা। আলাদা আলাদা ট্রেনিং করার সুযোগ পেলেও শুরুতে এক সঙ্গে বেশি সদস্য জড়ো হতে পারবেন না। ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হবে। নিউজ়িল্যান্ড অবশ্য অনেক আগেই ইংল্যান্ড পৌঁছে গিয়েছে এবং লর্ডসে পুরোমাত্রায় অনুশীলনেও নেমে পড়েছে এ দিন। কেন উইলিয়ামসনেরা আগে দু’টেস্টের সিরিজ খেলছেন জো রুটের ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সন্দেহ নেই, ইংল্যান্ডের পরিবেশে প্রস্তুতির দিক থেকে তাঁরা কোহালিদের
চেয়ে এগিয়ে থাকছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy