Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
কুম্বলে ফর্মুলা: শৃঙ্খলার পাশে টিম বন্ডিং

কোহালি-রাহানেরা মজেছেন কোচের সমুদ্র-দাওয়াইয়ে

ক্রিকেট জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস তিনটে চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে নামছেন অনিল কুম্বলে।কোচ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। দুই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতা। তিন, ভারতকে আবার টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে নিয়ে আসা।

টিমের থিঙ্কট্যাঙ্ক। বাঙ্গার ও কুম্বলে।

টিমের থিঙ্কট্যাঙ্ক। বাঙ্গার ও কুম্বলে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০৪:৩১
Share: Save:

ক্রিকেট জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস তিনটে চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে নামছেন অনিল কুম্বলে।

এক, কোচ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। দুই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতা। তিন, ভারতকে আবার টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে নিয়ে আসা।

আর এই ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ সফল করার জন্য কুম্বলের স্পেশ্যাল দাওয়াই হল, শৃঙ্খলার পাশাপাশি টিম বন্ডিং। কড়া রুটিনের সঙ্গে চুটিয়ে আউটডোর পিকনিক।

মঙ্গলবারই প্রকাশ পেয়েছে আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিং। যেখানে ভারত রয়েছে দু’নম্বরে। চার টেস্টের ক্যারিবিয়ান সফরে যদি ৪-০ জিতে ফেরে ভারতীয় দল তা হলে এক নম্বরে যাওয়ার রাস্তা উজ্জ্বল হবে টিম ইন্ডিয়ার।

এই পরিস্থিতিতে কুম্বলের কড়া দাওয়াই— শৃঙ্খলার সঙ্গে কোনও আপস নয়। শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটালেই যখন তখন শিখর ধবন, ভুবনেশ্বর কুমারদের ঘাড়ে নেমে আসতে পারে আর্থিক জরিমানার খাঁড়া। এই ফতোয়ার পাশাপাশি আবার চলছে টিম বন্ডিং সেশনও।

ক্যারিবিয়ান সাগরে ডুব দেওয়ার আগে বিরাট কোহালি।

তাই সফরের দ্বিতীয় ওয়ার্ম আপ ম্যাচের আগে অজিঙ্ক রাহানে, স্টুয়ার্ট বিনি-সহ পুরো টিম নিয়ে ভারতীয় কোচ ছুটলেন সেন্ট নেভিসের সমুদ্র সৈকতে। যেখানে ডাইভিং, স্নরকেলিংয়ের পর রাহানের মতো কারও কারও প্রতিক্রিয়া, ‘‘দীর্ঘ বিদেশ সফরে গোটা টিমকে এককাট্টা করতে এ রকম মজাদার অভিজ্ঞতার কোনও জবাব নেই। শুনছি এর পর স্কুবা ডাইভিংয়েও নিয়ে যাওয়া হবে।’’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিরুদ্ধে দু’দিনের প্রথম ওয়ার্ম আপ ম্যাচে রান পেয়েছেন রোহিত শর্মা। বৃহস্পতিবারই শুরু হচ্ছে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। তিন দিনের সেই ম্যাচের পরই শুরু টেস্ট সিরিজ। তার আগে টিম ইন্ডিয়ার সদস্যদের কাছে কুম্বলের বার্তা— ‘নিজেদের যতটা পারো টেনশন মুক্ত রাখো। মাঠে গিয়ে খেলাটাকে উপভোগ করো।’ আর তা করতে গিয়েই রোহিত আপাতত মজেছেন যোগাভ্যাসে। মঙ্গলবার সেন্ট নেভিসের সৈকতে একটা বড় সময় যোগ ট্রেনারের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে রোহিতকে। মুম্বইকরের প্রতিক্রিয়া, রিকভারি প্রক্রিয়া চলাকালীন মনোসংযোগ বজায় রাখাটা খুব জরুরি। যা একমাত্র সম্ভব যোগ অনুশীলনের মাধ্যমে। তাঁর কথায়, ‘‘যোগ আর প্রয়োজনীয় স্ট্রেচিং প্রয়োজনের সময় মনে ফুরফুরে ভাবটা এনে দেয়। আর তার পর আইস বাথ নিয়ে নিজেকে আরও চাঙ্গা লাগে। বিদেশের মাঠে টেস্ট খেলতে নামার আগে যেটা খুব জরুরি যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই।’’

তবে কেবল যোগ ব্যায়ামই নয়, টিম বন্ডিং ও চনমনে ভাব বাড়াতে মঙ্গলবার সমুদ্রে গোটা টিমকে নামিয়ে প্রথমে ওয়াটার ভলি আর তার পর ডাইভিং, স্নরকেলিংও ছিল পুরো মাত্রায়। যেখানে চুটিয়ে মজা করার পর রাহানে বলছেন, ‘‘বিদেশ সফরে মাঠের মধ্যে টিম বন্ডিংটা যেমন জরুরি, তেমনই তা দরকার মাঠের বাইরেও। যা এ ধরনের মজাদার অভিজ্ঞতা থেকেই তৈরি হয়।’’

সেন্ট নেভিসের সৈকতে রোহিত শর্মার যোগাভ্যাস। ছবি: টুইটার

তবে আসল মজাটা ছিল ডাইভিং সেশনে। বিসিসিআই ওয়েবসাইটে পোস্ট করা ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, পাকা ডাইভারের মতো শিখর ধবন ইয়টের দিকে মুখ করে সমুদ্রে ঝাঁপ দিলেন। যা দেখে অধিনায়ক বিরাট আবার নিজে ঝাঁপ দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় টিপস নিয়ে নেন তাঁর দিল্লিওয়ালা সতীর্থের কাছে। যা দেখে পাশে চলে আসেন স্বয়ং কোচ। হাসতে হাসতে কুম্বলেকেও দেখা যায়, বিরাটকে টিপস বিলোতে। লাইফ জ্যাকেট, পায়ে ফিন আর চোখে ডুবুরিদের মতো গ্লাস লাগিয়ে সোজা সমুদ্রে ঝাঁপ। তার পর ডুব সাঁতার। স্টুয়ার্ট বিনি আবার শিশুর মতো বলছিলেন, ‘‘কাঁচের মতো স্বচ্ছ জল। চারপাশে কত মাছ! একদম অন্য জগতে চলে গিয়েছিলাম আমরা সবাই।’’

যদিও সবাই অজিঙ্ক, শিখর নয়। ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামি, চেতেশ্বর পূজারাদের মতোও কেউ কেউ রয়েছেন, যাঁরা সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার আগে কিন্তু কিন্তু করছিলেন। টিম বন্ডিং সেশন সেরে হোটেলে ফেরার পথে চেতেশ্বর পূজারা বলছিলেন, ‘‘প্রথমে ডাইভ দিয়ে সমুদ্রে পড়তে ভয় করছিল। কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না স্নরকেলিংয়ের। জলে ঝাঁপ দেওয়ার পর সাঁতরে চলে গিয়েছিলাম টিমের সবাই যেখানে ভাসছিল সেখানে। তখন মজাটাই আলাদা। টিম বন্ডিংয়ে খুব কাজ করবে এই অভিজ্ঞতা।’’

তবে যোগ, ডাইভিং, স্নরকেলিং ছাড়াও শৃঙ্খলাকেও বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন কুম্বলে। শোনা যাচ্ছে, যে ব্যাপারে এক দফা নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে মহম্মদ শামিদের ঘরে ঘরে। প্রচারমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সেখানে নাকি কুম্বলে বলে দিয়েছেন, টিম বাসে উঠতে দেরি করলেই পকেট থেকে খসবে ৫০ ডলার। এমনকী ম্যাসাজ সেশনেও প্রত্যেককে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকবে। যখন তখন ম্যাসাজ রুমে চলে যাওয়া যাবে না আগের মতো। প্রতি চার দিন অন্তর টিম মিটিং। কিন্তু তার পরেও যদি টিমের কোনও সদস্যের পরামর্শের প্রয়োজন পড়ে, তা হলে কোচের ঘর খোলা চব্বিশ ঘণ্টা।

অন্য বিষয়গুলি:

Virat Kohli Team India deep blue waters
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy