নিউ ইয়র্কে অনুশীলনে ভারতীয় দল। ছবি: পিটিআই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে রবিবার থেকে। তার আগে শনিবার ভারত একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে। দু’মাস আইপিএল খেলার পর আমেরিকায় বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। আইপিএল শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে নামতে হবে ভারতকে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি নিয়ে সংশয় না থাকলেও একটি বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। তা হল, অতিরিক্ত ক্রিকেটের ধকল। ক্লান্তি।
আইপিএলের পর মাত্র কয়েক দিন বিশ্রামের সুযোগ পেয়েছেন রোহিত, কোহলিরা। তার পরই চলে যেতে হয়েছে আমেরিকায়। দু’মাসের দীর্ঘ প্রতিযোগিতার পর আবার প্রায় এক মাসের বিশ্বকাপ। টানা ক্রিকেট খেলতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। অন্য দেশগুলির এই সমস্যা নেই। কারণ, তাদের বিশ্বকাপের দলের সব সদস্য আইপিএল খেলেননি। একটি ম্যাচ খেলার পর ‘রিকভারি টাইম’ ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা। অর্থাৎ, ক্লান্তি কাটিয়ে শরীর আবার আগের অবস্থায় ফিরতে এই সময় প্রয়োজন। টানা ম্যাচ এবং সফর এই ‘রিকভারি টাইম’ বৃদ্ধি করে। শরীর সম্পূর্ণ তরতাজা হতে আরও বেশি সময় লাগে। সাধারণত বড় কোনও প্রতিযোগিতার পর দু’সপ্তাহের বিশ্রাম প্রয়োজন বলে মনে করেন ক্রীড়াবিজ্ঞানীরা। ভারতীয় ক্রিকেটারেরা এ বার সেই সময় পাচ্ছেন না। ফলে রোহিত, কোহলিরা কতটা তরতাজা ভাবে বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় দলের পারফরম্যান্সে ক্রিকেটারদের ক্লান্তি প্রভাব ফেলবে কি না, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আইপিএল খেলা ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপে তরতাজা ভাবে পেতে বিভিন্ন দেশ নানা পদ্ধতি নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্কদের দেশে ফিরে দু’তিন দিন পরিবারের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও সেই সুযোগ দিয়েছে ক্রিকেটারদের। দু’দফায় আমেরিকায় পাঠানো হয়েছে বিশ্বকাপের দলে থাকা ক্রিকেটারদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ও তিন-চার দিন ছুটি দিয়েছে আন্দ্রে রাসেলদের। আইপিএলে প্লে-অফ পর্যন্ত খেলা ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি ম্যাচগুলি থেকে বিশ্রাম দিয়েছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাও। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, লম্বা প্রতিযোগিতা খেলার পর তিন-চার দিনের বিরতি যথেষ্ট নয়।
ভারতীয় দলের বোলিং কোচ পরশ মাম্বরে বলেছেন, ‘‘আধুনিক ক্রিকেটে এই রকম ব্যস্ততার সঙ্গে ক্রিকেটারেরা অভ্যস্ত। আন্তর্জাতিক স্তরে সব দেশের ক্রিকেটারদেরই এই চাপ মেনে নিতে হয়েছে। আমরা ক্রিকেটারদের দক্ষতা, চাপ, মানসিক স্থিতির মতো বিষয়গুলো ঠিক রাখার চেষ্টা করি। সকলের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলি। কোনও সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা, সকলের সঙ্গে কথা বলা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’’ কী ধরনের কথা হয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে? মাম্বরে বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতা থেকে তার প্রত্যাশা, সে কী করতে চায়, নিজস্ব কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না, এ সব জানার চেষ্টা করি আমরা কোচেরা। প্রত্যেকের আলাদা ভাবনা থাকে। আমরা ওদের সাহায্য করার চেষ্টা করি।’’
এই ধরনের কঠিন সফরের সময় মানসিক ভাবে ক্রিকেটারদের চাঙ্গা রাখতে পরিবারকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। মাম্বরে বলেছেন, ‘‘চাইলে সফরের প্রথম দিন থেকেই সঙ্গে পরিবারকে রাখতে পারে ক্রিকেটারেরা। দিনের শেষে স্ত্রী, সন্তানদের কাছে পেলে সকলে ফুরফুরে থাকে। অনেক দেশের বোর্ডই এখন সঙ্গে পরিবার রাখতে দেয়। তা ছাড়া এ বার দলকে দু’দফায় আমেরিকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত বেশ ভাল। এর ফলে সকলে আইপিএলের পর কয়েকটা দিন বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছে। মানসিক ক্লান্তি কাটিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারবে ছেলেরা। মানসিক স্বস্তি শারীরিক ক্লান্তি কাটাতেও সাহায্য করে।’’
ক্রিকেটারেরা শারীরিক ভাবে খুব বেশি ক্লান্ত থাকবেন বলে মনে করেন না ভারতীয় দলের বোলিং কোচ। মাম্বরের যুক্তি, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শারীরিক ধকল খুব বেশি নয়। টেস্ট ক্রিকেটে এই ধকল খুব বেশি। গরম এবং আর্দ্রতায় খেলা এখন ক্রিকেটারদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। ভারতের থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ় বা আমেরিকার তাপমাত্রা কিছুটা ঠান্ডা। খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়। পেশাদার ক্রিকেটারদের এ সব নিয়েই চলতে হয়। সেই মানসিক প্রস্তুতি তাদের থাকে।’’
সারা বছরের সূচি আগে থেকে জানা থাকে ক্রিকেটারদের। সেই মতো তাঁরা পরিকল্পনা করে রাখেন। তাই ব্যস্ত সূচির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না তেমন। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও রোহিত, কোহলিদের অসুবিধা হবে না বলে মনে করছেন ভারতীয় দলের বোলিং কোচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy