সৌরভ নেত্রাভলকর। —ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে আমেরিকা। আর সেই জয় এসেছে সৌরভ নেত্রাভলকরের হাত ধরে। তাঁর জন্ম মুম্বইয়ে। ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও খেলেছেন। কিন্তু মুম্বইয়ের রঞ্জি দলে জায়গা না পেয়ে দেশ ছেড়েছিলেন সৌরভ। আমেরিকা গিয়েছিলেন পড়াশোনা করতে। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়েনি সৌরভকে। তাই বিশ্বকাপের মঞ্চে তিনি খেললেন এবং হারিয়ে দিলেন পাকিস্তানকে।
বৃহস্পতিবার সুপার ওভারে সৌরভের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মোনাঙ্ক পটেল। পাকিস্তানকে ১৩ রানে আটকে রেখে দলকে জয় এনে দেন সৌরভ। ২০১০ সালে তরুণ সৌরভ ছিলেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। নিউ জ়িল্যান্ডে হয়েছিল সে বারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন তিনিই।
বাঁহাতি সৌরভ অনেক কম বয়সেই নিজের প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন। কুচবিহার ট্রফিতে ছ’ম্যাচে ৩০টি উইকেট নিয়েছিলেন ২০০৮-০৯ মরসুমে। এর পর অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলে খেলেও সাফল্য পেয়েছিলেন। ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিলেন সৌরভেরা। মনে করা হয়েছিল মুম্বইয়ের রঞ্জি দলে জায়গা করে নেবেন বাঁহাতি পেসার। কিন্তু সেই সময় মুম্বই দলে তখন অজিত আগরকর, জাহির খান, আবিষ্কার সালভি, ধবল কুলকর্নির মতো পেসার ছিলেন। ফলে নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছিলেন না সৌরভ।
মুম্বই দলে সুযোগ না পাওয়া সৌরভ সেই সময় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারে স্নাতক। নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। ২০১৫ সালে তাই ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন ত্যাগ করে সৌরভ পাড়ি দিলেন আমেরিকায়। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়েননি তিনি। পড়াশোনা শেষ করে আমেরিকাতেই কাজের সুযোগ পান। সপ্তাহান্তে ক্রিকেট খেলেন সৌরভ। এর মাঝেই আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে নাম লেখান ঘরোয়া ক্রিকেটে। ধীরে ধীরে জায়গা করে নেন আমেরিকার মূল দলে। ৩২ বছরের সৌরভ এখন সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
মুম্বই থেকে নিউ ইয়র্কের রাস্তাটা খুব সহজ ছিল না সৌরভের জন্য। ক্রিকেট তাঁর কাছে আবেগের জায়গা। ভালবাসেন ক্রিকেট খেলতে। এক সময় স্বপ্ন দেখতেন ভারতের হয়ে খেলার। কিন্তু এক সময় পেশাদার ক্রিকেট থেকে সরে গিয়েছিলেন সৌরভ। পড়াশোনা করে যোগ দেন আমেরিকার এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। সৌরভ পড়াশোনা, চাকরির সঙ্গেই তাঁর ভালবাসার জায়গা ক্রিকেটকে লালন করেছেন। দলের বাসে করে আসার সময় পড়াশোনা করে নিয়েছেন। আবার অনুশীলনের মাঝে ফাঁক পেলেই বসে পড়েছেন ল্যাপটপ নিয়ে।
এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম মাচে কানাডার বিরুদ্ধে উইকেট পাননি সৌরভ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি ২ উইকেট তুলে নেন। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সুপার ওভার। সেখানে দলকে জেতান সৌরভ। তবে শুধু ক্রিকেট আর ইঞ্জিনিয়ার বললেই তাঁর গুণের তালিকা শেষ হয় না। সৌরভ উকুলেলে বাজাতে পারেন। গান গাইতে পারেন। সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন সৌরভ নিজেই। তবে আপাতত সব কিছুকে ছাপিয়ে এই এক মাস সৌরভের ধ্যান-জ্ঞান ক্রিকেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy