রোহিত শর্মা। ছবি: এক্স (টুইটার)।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেন না রোহিত শর্মা। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তাঁর মুখে কোচ রাহুল দ্রাবিড়-সহ সতীর্থদের কথা। বিশ্বজয়ী নেতা বললেন, তিনি অধিনায়ক হিসাবে ভাগ্যবান একঝাঁক দুর্দান্ত সতীর্থকে পেয়ে।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলেন, এক জন অধিনায়ক ততটাই ভাল, যতটা ভাল তাঁর দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর রোহিতের গলাতেও এক সুর। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে বললেন, ‘‘কী বলব! ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বিরাট কোহলি দুর্দান্ত ব্যাট করল। অক্ষর পটেলও ব্যাট হাতে পারফর্ম করল। আমরা লড়াই করার মতো রান করতে পেরেছিলাম ওদের জন্যই। পরে বল হাতে যশপ্রীত বুমরা, আরশদীপ সিংহ, হার্দিক পাণ্ড্যরা অসাধারণ লড়াই করল। ওদের কথা নতুন করে কী আর বলব! বিশেষ করে বুমরা। ওর হাতে যখনই বল তুলে দিই, তখনই জাদু দেখায়। কী সব ক্রিকেটার রয়েছে এই দলে! সত্যি আমি অধিনায়ক হিসাবে ভাগ্যবান।’’
রোহিত প্রশংসা করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াইয়ের। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, কখনও হাল ছাড়েননি তাঁরা। রোহিত বলেছেন, ‘’১৫ ওভারের পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় প্রতি বলে রান দরকার ছিল। হাতে ৬ উইকেট ছিল। আমরা একটু কোণঠাসা পরিস্থিতিতে ছিলাম। তাও আমরা কেউই হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবিনি। একটা কথা আমি বিশ্বাস করি। শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত খেলা শেষ হয় না। অধিনায়ক হিসাবে আমার দায়িত্ব, দলের সবাইকে এই কথাটা বিশ্বাস করানো। ক্রিকেটে যে কোনও সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। তাই আমরা পিছিয়ে থাকি বা এগিয়ে থাকি, প্রতিটি বলে লড়াই করতে চাই। এটা বিশ্বকাপ। দলের সকলে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে নিজেদের সবটা উজাড় করে দিতে মরিয়া ছিল। তাই কখনও বিশ্বাস হারাইনি। বিশ্বাস ছিল আমরা পারব।’’
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত কি ঠিক ছিল? পরের দিকে পিচ তো বেশ সহজ দেখাচ্ছিল? রোহিত বলেছেন, ‘‘দলের কে কী রকম ভাবে জানি না। আমি আমার মতো করে ভাবি। অধিনায়ক হিসাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার দায়িত্ব। বিশ্বাস করি লড়াই করার মতো রান তুলতে পারলে সমস্যা হয় না। পিচ যেমনই হোক। দলের বোলারদের উপর আমার যথেষ্ট আস্থা আছে। ওরা বার বার প্রমাণ করেছে নিজেদের। আমরা খুব কম রান তুলিনি। ম্যাচটা হেরে গেলেও আমি প্রথমে ব্যাট করে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষেই থাকতাম।’’
বিশ্বকাপ ফাইনালে সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার নিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন বিরাট কোহলি। দীর্ঘ দিনের সতীর্থের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রোহিত বলেছেন, ‘‘বিরাট চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। ফাইনালে নিজের মতো করে ব্যাট করল। ও সব সময় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়। ওর প্রতি আমার সব সময় আস্থা রয়েছে। বিরাটের জন্য খুব ভাল লাগছে। অনেক স্মৃতি রয়েছে একসঙ্গে খেলার। ক্রিকেটকে ও কী দিয়েছে, তা সবাই জানেন। পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে কত বড় মাপের খেলোয়াড় বিরাট। এর থেকে ভাল ভাবে বোধহয় শেষ করা যায় না।’’
শেষ ওভারের আগে হার্দিক পাণ্ড্যকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন? রোহিত বলেছেন, ‘‘হার্দিক খুব ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলেছে। যেমন বল করা দরকার ছিল তেমনই করেছে। ওকে বলেছিলাম, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা যাতে সোজা বল না মারতে পারে। বাকিটা ও দারুণ সামলেছে। ১৮তম ওভারে বুমরা আমাদের লড়াইয়ে ফিরিয়ে এনেছিল দারুণ ভাবে। তখন আমাদের উইকেট নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। দরকার ছিল যত বেশি সম্ভব ডট বল করার। বুমরা দক্ষিণ আফ্রিকার উপর পাল্টা চাপ তৈরির কাজটা করে দেয়। পরের ওভারে আরশদীপও দারুণ বল করল। সূর্যকুমারের দুর্দান্ত ক্যাচটার কথাও বলতে হবে। সবাই চেষ্টা করেছে। এটা সম্মিলিত লড়াইয়ের ফল।’’
এর পরেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেন রোহিত। সাংবাদিক বৈঠকে এসে বার বার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। অবসরের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়েও কথা আটকে গিয়েছে তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy