বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মারমুখী মেজাজে ঋষভ পন্থ। ছবি: এক্স।
আইপিএলের মেজাজ নিয়ে যাঁরা ভারত ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে বসেছিলেন তাঁদের হতাশ হতে হল। কারণ, নিউ ইয়র্কের মাঠ ও উইকেট। নতুন তৈরি মাঠের আউটফিল্ড ও ড্রপইন পিচ অবাক করল। অবশ্য হাসি চওড়া হল বোলারদের। আমেরিকার পিচে ভারতকে হারানো যে বাকি দলগুলির পক্ষে কঠিন হবে তা বুঝিয়ে দিল এই ম্যাচ। বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরাও বুঝে গেলেন, দক্ষতার বিচারে দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তফাত কতটা। ব্যাট-বলের খেলায় বাংলাদেশকে সহজেই হারাল ভারত।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি জানিয়ে দেন, শুক্রবার দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে খেলবেন না বিরাট কোহলি। সবাই ভেবেছিলেন, বিরাট না থাকায় রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নামবেন যশস্বী জয়সওয়াল। কিন্তু সবাইকে অবাক করে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নামলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু আরও একটি সুযোগ জলে ফেললেন তিনি। আবার বুঝিয়ে দিলেন, বন্যেরা বনে সুন্দর, সঞ্জু আইপিএলে।
প্রথম ওভার থেকেই বোঝা গেল, এই পিচে চোখ বন্ধ করে বড় শট খেলা সহজ হবে না। রান করার জন্য দক্ষতা প্রয়োজন। বাঁহাতি শরিফুল ইসলামের কিছু বল পিচে পড়ে লাফাচ্ছিল। কিছু বল আবার থমকে আসছিল। স্পঞ্জি বাউন্স দেখা যাচ্ছিল। অ্যাডিলেডে তৈরি পিচ বক্সে করে এনে বসানো হয়েছে নিউ ইয়র্কের নাসাই কাউন্টি স্টেডিয়ামে। বক্সগুলি আলাদা থাকায় বসানোর পরেও কিছু জায়গায় উঁচু-নিচু থাকে। সেখানে বল পড়লে অন্য রকমের ছবি দেখা যাচ্ছিল। ফলে শট খেলা সহজ হচ্ছিল না। বোলারদের সাহায্য করছিল আউটফিল্ডও। বল পড়ে গড়াচ্ছিল না। বোঝা যাচ্ছিল, এই বিশ্বকাপে রান করার জন্য বড় শটের পাশাপাশি দৌড়েও রান করতে হবে ব্যাটারদের।
শরিফুলের বলে ১ রান করে আউট হন সঞ্জু। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন ঋষভ পন্থ। রোহিত ও পন্থের জুটি ভারতের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। কয়েকটি বড় শট খেলে ২৩ রান করে আউট হন রোহিত। গাড়ি দুর্ঘটনার পরে চোট সারিয়ে ফিরে এই প্রথম দেশের জার্সিতে নামলেন পন্থ। প্রথম ম্যাচেই বুঝিয়ে দিলেন, এই দলে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তিনি। যে পিচে বাকিরা শট খেলতে সমস্যায় পড়লেন সেই পিচে পন্থ ২০০-র বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করলেন। উইকেটের চার দিকে শট খেললেন। ৩২ বলে ৫৩ রান করে অবসর আউট হন তিনি।
সঞ্জুর মতো আইপিএলে নজর কাড়া আর এক ব্যাটার ব্যর্থ হলেন এই ম্যাচ। শিবম দুবে। পাঁচ নম্বরে নেমে ১৬ বলে ১৪ রান করে ফিরলেন। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ব্যাটে-বলে লাগাতে সমস্যা হচ্ছে তাঁর। সূর্যকুমার যাদব বেশ কয়েকটি ভাল শট খেলেন। ১৮ বলে ৩১ রান করে আউট হন তিনি।
আইপিএলে সে রকম খেলতে না পারলেও ভারতীয় জার্সিতে ফিরে ভাল দেখাল হার্দিক পাণ্ড্যকে। তনবীর ইসলামের এক ওভারে পর পর তিন বলে তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। ২৩ বলে ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক। রবীন্দ্র জাডেজা ৪ রান করেন। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করে ভারত। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ শাকিব আল হাসানও ৪ ওভারে দেন ৪৭ রান। তবে নজর কাড়লেন শরিফুল। তাঁর পেস ও বাউন্স সমস্যায় ফেলল ভারতীয় ব্যাটারদের।
১৮৩ রান তাড়া করা যে বাংলাদেশের পক্ষে সহজ হবে না তা প্রথম ওভারেই বুঝিয়ে দিলেন আরশদীপ সিংহ। শূন্য রানে সৌম্য সরকারকে আউট করেন তিনি। আরশদীপের দ্বিতীয় ওভারে আউট হন লিটন দাস। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও শূন্য রানে আউট হন। তাঁর উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ়।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলছেন না। ভারতীয় ব্যাটারদের দেখে কোনও শিক্ষা নেননি। নইলে যে পিচে অসমান বাউন্স, সেই পিচে একের পর এক বাজে শট খেলে আউট হতেন না তাঁরা। তানজিদ হাসান ও তৌহিদ হৃদয় কিছুটা ইনিংস গড়ার চেষ্টা করলেও বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। ৪১ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের।
রানের গতি খুব কম ছিল বাংলাদেশের। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার শাকিব ও মাহমুদুল্লা ইনিংস গড়ার চেষ্টা করলেও দ্রুত রান তুলতে পারছিলেন না তাঁরা। হার্দিকের ওভারে হাত খোলেন মাহমুদুল্লা। কয়েকটি বড় শট মারেন তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে জরুরি রানরেট অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ৫০ রানের জুটি বাঁধেন দুই ব্যাটার।
বাকি সময়টা প্রস্তুতি সারলেন শাকিব ও মাহমুদুল্লা। তাঁদের দেখে এক বারও মনে হয়নি জেতার চেষ্টা করছেন। বুমরার বলে ২৮ রান করে আউট হন শাকিব। মাহমুদুল্লা ৪০ রানে অবসর আউট হন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২০ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ৬২ রানে ম্যাচ জেতে ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy