Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
T20 World Cup Celebration

খলনায়ক থেকে নায়ক! জাতীয় দলের জার্সিতে সেই ওয়াংখেড়েতেই শাপমোচন হার্দিকের

আইপিএলের অধিনায়ক হিসাবে ওয়াংখেড়েতে নেমে সমর্থকদের টিপ্পনী, টিটকিরি, কটাক্ষ শুনেছিলেন। বিশ্বকাপ জিততেই সব বদলে গেল। যে ওয়াংখেড়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যের থেকে, তারাই আপন করে নিল তাঁকে।

cricket

বিশ্বকাপ হাতে হার্দিক। ছবি: এক্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৭
Share: Save:

মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে অদ্ভুত পটপরিবর্তন।

আইপিএলের অধিনায়ক হিসাবে ওয়াংখেড়েতে নেমে সমর্থকদের টিপ্পনী, টিটকিরি, কটাক্ষ শুনেছিলেন। গোটা আইপিএলে দেশ জুড়ে যেখানেই গিয়েছেন, সেখানেই একই রকম ‘অভ্যর্থনা’ পেয়েছেন। বিশ্বকাপ জিততেই সব বদলে গেল। যে ওয়াংখেড়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যের থেকে, তারাই আপন করে নিল তাঁকে।

গত বছর বিশ্বকাপের পর গুজরাত টাইটান্স ছেড়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে হার্দিকের যোগ দেওয়ার খবর প্রথম বার জানানো হয়। তার পরেই ঘোষণা করা হয়, রোহিতকে সরিয়ে হার্দিকই হবেন মুম্বইয়ের অধিনায়ক। পাঁচ বার আইপিএল জেতানো অধিনায়ককে এ ভাবে সরিয়ে দেওয়া মানতে পারেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা।

যেখানেই হার্দিক খেলতে গিয়েছেন, সেখানেই কটাক্ষের শিকার হয়েছেন। ওয়াংখেড়েতে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। মুম্বইয়ের ছেলে হওয়ার সুবাদে রোহিতের সঙ্গে সেই শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের আত্মিক যোগ অনেক বেশি। সেখানে যতই মুম্বই তাঁর ঘরবাড়ি হোক না কেন, আদতে গুজরাতি হার্দিকের রাতারাতি নেতা বনে যাওয়া কেউই ভাল চোখে নেননি। ওয়াংখেড়ের দর্শকদের কটাক্ষ দেখে এক সময় সঞ্চালক সঞ্জয় মঞ্জরেকরকে পর্যন্ত বলতে হয়েছিল, ‘বিহেভ’। অর্থাৎ, নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করুন।

হার্দিক কখনওই প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। কটাক্ষ, টিটকিরির সামনেও হাসিমুখে থেকেছেন। দলের পতনেও ভরসা হারাননি। নিজের দোষ মেনে নিয়েছেন। দলের খেলার উন্নতি করার কথা বলেছেন। কোনও ব্যক্তিবিশেষের উপর দোষ চাপাননি। হয়তো তখন থেকেই অপেক্ষা করছিলেন জবাব দেওয়ার।

সেই জবাব দেওয়ার দিন এল জাতীয় দলের জার্সিতেই। ২৯ জুন বার্বাডোজ়ে হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলারকে আউট করার কথা কেউ এখনও ভোলেননি। হার্দিকের কান্না দেখে অতি বড় সমালোচকও কিছুটা অনুতপ্ত হয়েছিলেন। তাই ভালবাসা দেওয়ার দিনে কেউ কোনও খামতি রাখতে চাননি।

দিল্লি পর্যন্ত তবু সব নজর ছিল রোহিত, কোহলির দিকে। মুম্বই পৌঁছতেই সব আলোচনার কেন্দ্রে চলে এলেন হার্দিক। কালো রোদচশমা পরে, চুইংগাম চিবোতে চিবোতে হাতে বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁকেই সবার আগে বেরোতে দেখা গেল। হাসিমুখে ট্রফি তুলে ধরলেন। সবার আগে বাসে উঠে সামনের আসনে নিজেই ট্রফি নিয়ে বসলেন। দলের কেউ আপত্তি জানাননি।

তার আগেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ওয়াংখেড়ের একাধিক ভিডিয়ো। সেখানে মাঠ জুড়ে শুধুই ‘হার্দিক, হার্দিক’ চিৎকার। মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় দাঁড়িয়ে যে সমর্থক ‘মুম্বইচা রাজা কৌন, রোহিত শর্মা’ বলে চেঁচাচ্ছেন, তাঁকেও দেখা গেল হার্দিক-বন্দনায় মাতোয়ারা হতে।

বাসে উঠেই হার্দিক ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘ওয়াংখেড়েতে আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।” তাতে উন্মাদনা আরও বেড়ে যায়। তার পরে হুডখোলা বাসে তাঁকে দেখে আরও উদ্বেল হয়ে পড়ে জনতা।

তবে সেরাটা তোলা ছিল একদম শেষের জন্য। মঞ্চে ভাষণ দিতে এসে রোহিত দরাজ গলায় প্রশংসা করে যান হার্দিকের। তাই শুনে ওয়াংখেড়ের চিৎকার ‘রোহিত, রোহিত’ থেকে মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে হয়ে যায় ‘হার্দিক, হার্দিক’। ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের সম্ভাব্য অধিনায়ক উঠে দাঁড়িয়ে সেই অভিবাদন গ্রহণ করেন।

মাত্র কয়েক মাস আগে যে মাঠ তাঁকে খলনায়ক বানিয়েছিল, বিশ্বজয়ের পর সেখানেই আবার ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা পেয়ে গেলেন হার্দিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Hardik Pandya BCCI Wankhede Stadium
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy