অকপট: অল্প বয়সে খেলা ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন নারাইন। ফাইল চিত্র।
ত্রিনিদাদ দলে সুযোগ না পাওয়ার দুঃখে ক্রিকেট ছাড়তে বসেছিলেন সুনীল নারাইন। ভেবেছিলেন, তাঁর দ্বারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হবে না। নারাইনকে তখন বুঝিয়েছিলেন তাঁর বাবা শহীদ নারাইন। ছেলে ক্রিকেট ছেড়ে দিক, কখনওই চাইতেন না। ছোট্ট নারাইনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ছোটবেলা থেকে যার জন্য এত পরিশ্রম করেছে তাঁর ছেলে, সামান্য সুযোগের অভাবে সেই সাধনা হেলায় নষ্ট হবে? বাবার কথা শুনে ক্রিকেট ছাড়তে পারেননি নারাইন। তাই বর্তমান ক্রিকেটবিশ্ব পেয়েছে এক
বিস্ময় স্পিনারকে।
বুধবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের অনুষ্ঠান ‘আই অ্যাম আ নাইট’-এ ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করেন নারাইন। তিনি বলেছেন, “ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতাম ঠিকই। কিন্তু ধৈর্য ধরে ম্যাচ দেখতে ভাল লাগত না। তখনও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করিনি। প্রত্যেক দিন স্কুল শেষ হওয়ার পরে ক্রিকেট খেলতাম। ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফিরতে রাত নটাও বেজে যেত। পরের দিন আবার একই রকম ভাবে দিন
শুরু করতাম।”
বিস্ময় স্পিনার হিসেবে পরিচিত হলেও ছোট থেকেই ব্যাট করতে পছন্দ করতেন নারাইন। বলেছেন, “ওয়েস্ট ইন্ডিজে থাকলে লারার ভক্ত হওয়াই স্বাভাবিক। আমিও ওর মতো ব্যাট করার স্বপ্ন দেখতাম। ছোট থেকেই ব্যাট করতে পছন্দ করতাম। এখনও করি। বোলিং তখন দ্বিতীয় পছন্দ ছিল। ১৮-১৯ বছর বয়স হওয়ার পর থেকেই বোলিংকে গুরুত্ব দিতে শুরু করি। ব্যাটিং হয়ে ওঠে দ্বিতীয় পছন্দ।”
ক্রিকেটবিশ্ব এক নতুন বিস্ময় স্পিনার পাওয়ার আগেই খেলা ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল নারাইনের। প্রায় ঠিক করে ফেলেছিলেন, তিনি আর খেলবেন না। পরিশ্রম করার পরেও ত্রিনিদাদ দলে সুযোগ আসছিল না তাঁর। হতাশ নারাইনের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর চেষ্টা করেন তাঁর বাবা। নারাইনের কথায়, “২০০৯-›১০ নাগাদ ঠিক করি, আমি আর ক্রিকেট খেলব না। বহু চেষ্টা করেও ত্রিনিদাদ দলে সুযোগ পাইনি। আর কোনও উপায়ও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন বাবা আমাকে অনেক বোঝান। বলেছিলেন, ‘এত দ্রুত ক্রিকেট ছেড়ে দিয়ো না। তোমাকে দেখলেই মনে পড়ে, ছোটবেলা থেকে কত পরিশ্রম করেছ। দু›জনে মিলে মাঠে গিয়েছি ট্রেনিং করতে। সে সব স্মৃতি এ ভাবে ছেড়ে আসা যায় নাকি! এত চিন্তা করছ কেন? মাথা ঠান্ডা রাখো। সুযোগ ঠিক আসবে।’ বাবার কথাগুলো শুনে আর কখনও ক্রিকেট ছাড়ার কথা চিন্তা করিনি। কারণ আমি হাল ছেড়ে দিলেও বাবা ছাড়েনি। বাবা সব সময় চাইত ব্যাট হাতেও যেন নিজেকে প্রমাণ করতে পারি আমি। এখনও সেই চেষ্টা করে চলেছি।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয় ভারতের মাটিতেই। তবে সুনীল নারাইন যদিও বেশি জনপ্রিয় হন কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে। ২০১২ সালে নারাইনকে নেয় কেকেআর। তৎকালীন অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের অনুরোধে নারাইনকে সাড়ে তিন কোটি টাকায় নেয় শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজি। তারপর থেকে নারাইন হয়ে ওঠেন নাইটদের ঘরের ছেলে। প্রথম বার আইপিএলে দল পাওয়ার খবর তাঁকে দেন ডোয়েন ব্র্যাভো। নারাইন বলেছেন, “আমরা তখন একটা পার্টি থেকে ফিরছি বেশ রাত করে। ব্র্যাভো আমাকে বলে এ বারের আইপিএলে আমি দল পেয়েছি। ব্র্যাভোর কথা শুনে বুঝিনি আমাকে সাড়ে তিন কোটি টাকায় নিয়েছে কেকেআর। পোলার্ড আমার ফোনে স্ক্রিনশট পাঠানোর পরেই বিশ্বাস করি, এতটা অর্থ দিয়ে আমাকে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবাকে ফোন করে খবর দিই।” নারাইন জানিয়েছেন, আইপিএলে শুরুর কয়েকটি বছর ভারতের উইকেটে বেশি সাহায্য পেতেন স্পিনাররা। যত দিন যাচ্ছে, উইকেট থেকে স্পিনারদের সহায়তা কমতে শুরু করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy