Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sunil Chetri

ভাইচুং, বিজয়নের চেয়ে পিছিয়ে রাখা যাবে না সুনীলকে

বিজয়নের মস্তিষ্ক, ভাইচুংয়ের সাহস আর সুনীলের শৃঙ্খলা সকলের কাছে শিক্ষণীয়।

নজরে: দেশের জার্সিতে নতুন কীর্তি সুনীলের। এআইএফএফ।

নজরে: দেশের জার্সিতে নতুন কীর্তি সুনীলের। এআইএফএফ।

শ্যাম থাপা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২১ ০৬:৪১
Share: Save:

অল্প বয়সে আমার বাবা একদিন প্রশ্ন করেছিলেন, ‍‘‍‘একজন ফরোয়ার্ডের সব চেয়ে বড় কৃতিত্ব কী?’’ স্পষ্ট উত্তর দিতে পারিনি। বাবা বলেছিলেন, ‍‘‍‘দেশের হয়ে খেলা এবং গোল করে দলকে জেতানো। এটাই করতে হবে তোমাকে।’’

সোমবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সুনীল ছেত্রী যখন জোড়া গোল করে দেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ছিল, মনে পড়ছিল সেই কথাগুলো। যে ছেলেটাকে চোখের সামনে ধীরে ধীরে জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠতে দেখলাম, সেই সুনীল আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেশের জার্সিতে গোল সংখ্যায় পিছনে ফেলে দিয়েছে কিংবদন্তি লিয়োনেল মেসিকেও।

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীরা দেশের হয়ে অনেক বেশি দাপট দেখিয়েছেন অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমসে। আমাদের সময়ে এশিয়ান গেমস, মারডেকা, প্রাক-অলিম্পিক্স, প্রাক-বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতা থাকলেও এত ফ্রেন্ডলি ম্যাচ, এশিয়া কাপের মতো প্রতিযোগিতা ছিল না। সে দিক দিয়ে সুনীল ভাগ্যবান।

আমাদের পরবর্তী সময়ে ভারতীয় ফুটবলে তিন স্ট্রাইকার একচ্ছত্র শাসন করে গিয়েছে, এবং করছেও। এই তিন ফুটবলার আই এম বিজয়ন, ভাইচুং ভুটিয়া ও সুনীল ছেত্রী।

এই তিন জনের মধ্যে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে তা বিচার করব না। তিন জনেই নিজেদের. সময়ে সেরা। বিজয়নের মস্তিষ্ক, ভাইচুংয়ের সাহস আর সুনীলের শৃঙ্খলা সকলের কাছে শিক্ষণীয়।

আবেগপ্রবণ বিজয়ন কলকাতায় দুই প্রধানের হয়ে খুব বেশি দিন খেলেনি। সুনীলের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু ভাইচুং দীর্ঘদিন কলকাতার দুই বড় দলে খেলে মন জয় করেছে ফুটবলপ্রেমীদের।

ফুটবলে স্ট্রাইকাররা মূলত দু’ধরনের হয়। এক) ফার্স্ট স্ট্রাইকার, যে বক্সে বা তার সামনে দুই স্টপারের মাঝে দাঁড়ায়। বল পেলেই গোল করে। দুই) সেকেন্ড স্ট্রাইকার, যে বল ধরে কিছুটা নীচ থেকে খেলা তৈরি করে, গোল করায় ও করে।

বিজয়ন দুই ভূমিকাতেই খেলতে পারত। দু’তিন জনকে কাটানোর সঙ্গে বক্সের মধ্যে যে কোনও জায়গা থেকে ব্যাক ভলিতে গোল করায় ছিল সিদ্ধহস্ত। দক্ষ ছিল সেট-পিসে। ছিল ক্ষুরধার বুদ্ধি।

ভাইচুং আবেগের ধারকাছ দিয়ে যায়নি। ও প্রকৃত প্রথম স্ট্রাইকার। সাহস আর গোলের জন্য মরিয়া ভাব ছিল অসাধারণ। অনুমান ক্ষমতা, পাঁচ গজের মধ্যে গতি বাড়িয়ে বল দখলে নেওয়া, ফাঁকা জায়গা তৈরি করার সহজাত দক্ষতা ছিল ভাইচুংয়ের।

বিজয়ন, ভাইচুয়ের থেকে সুনীলকে পিছিয়ে রাখব না। মূলত বাঁ প্রান্ত দিয়ে খেলে ভিতরে ঢুকে আসে ও। সেখান থেকেই গোল করে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ পেয়ে তা দারুণ কাজে লাগিয়েছে।

ওর খেলার ধরন অনেকটাই প্রথম স্ট্রাইকারের মতো। বল ধরা, চকিতে ঘোরা, বলকে বিপক্ষ ডিফেন্ডারের থেকে আড়াল করাও দৃষ্টিনন্দন। সঙ্গে শুটিং ও হেডিংটাও কাজ চালানোর মতো। প্রদীপদা, চুনীদা, বলরামদা আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভারতের সম্মান বৃদ্ধি করেছিলেন। আমাদের পরে বিজয়ন, ভাইচুং, সুনীল সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sunil Chetri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy