Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
ISL

ডার্বি নিয়ে উদ্বেগে সুব্রত, ভাইচুংরাও

এটিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আগামী মরসুমে আইএসএলে খেলা নিশ্চিত মোহনবাগানের।

ভাইচুং ভুটিয়া। ফাইল চিত্র

ভাইচুং ভুটিয়া। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

অনেক আগেই তাঁরা অবসর নিয়েছেন। কিন্তু এখনও সুব্রত ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, আই এম বিজয়ন, ভাইচুং ভুটিয়ার কানে বাজে ডার্বিতে দর্শকদের গগনভেদী গর্জন। অথচ ভারতীয় ফুটবলের সেই ঐতিহ্যের দ্বৈরথের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এটিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আগামী মরসুমে আইএসএলে খেলা নিশ্চিত মোহনবাগানের। কলকাতা ময়দানের আর এক প্রধান ইস্টবেঙ্গল কী করবে, তা নিয়েই বাড়ছে ধোঁয়াশা। শুধু ফুটবলপ্রেমীরা নন, উদ্বিগ্ন প্রাক্তন তারকারাও।

মোহনবাগানের ‘ঘরের ছেলে’ সুব্রত বলছিলেন, ‘‘ভারতের যে প্রান্তেই ইস্টবেঙ্গেল-মোহনবাগান মুখোমুখি হোক, তা নিয়ে সকলের আগ্রহ থাকে। দুই প্রধানের ধুন্ধুমার লড়াই ভারতীয় ফুটবলের সম্পদ। ডার্বি না-হলে ভারতীয় ফুটবলকে বাঁচানো কঠিন। অথচ সেই দ্বৈরথের ভবিষ্যৎই এখন অনিশ্চিত।’’ হতাশ সুব্রত যোগ করছেন, ‘‘ডার্বি ফুটবলারদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মঞ্চ। ফুটবল খেলা শুরু করার পর থেকেই স্বপ্ন দেখতাম ডার্বিতে খেলার। এই লড়াই থেমে গেলে ফুটবলার হওয়ার আগ্রহও অনেকে হারিয়ে ফেলবে বলে আমি মনে করি। ডার্বি শুধু একটা ম্যাচ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু মানুষের আবেগও।’’

সুব্রতর মতোই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন আমপানের তাণ্ডবে দু’দিন বাড়িতে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটানো শ্যাম থাপা। বললেন, ‘‘ডার্বিতে গোল করতে পেরেছিলাম বলেই আমাকে এখনও ফুটবলপ্রেমীরা মনে রেখেছেন। কোনও ফুটবলার সারা বছর দুর্দান্ত খেলা সত্ত্বেও যদি ডার্বিতে গোল করতে না-পারে, কেউ তাকে মনে রাখে না।’’ বাইসাইকেল ভলির নায়ক যোগ করেন, ‘‘আমার সব চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে ফুটবলপ্রেমীদের কথা ভেবে। ওঁরা তো ডার্বি দেখার অপেক্ষাতেই থাকেন।’’

ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দ্বৈরথের ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত, ভাবতেই পারছেন না বিজয়ন। কেরলের ত্রিশূর থেকে ফোনে বললেন, ‘‘ডার্বির আকর্ষণেই কেরল থেকে কলকাতা ময়দানে খেলতে গিয়েছিলাম। শুনেছিলাম, ডার্বিই ফুটবলারদের নায়ক হয়ে ওঠার মঞ্চ। ডার্বির উন্মাদনার কথা মনে পড়লে এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের দ্বৈরথ বন্ধ হয়ে গেলে ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে বিরাট ক্ষতি বলে আমি মনে করি।’’ বিজয়ন অবশ্য আশাবাদী আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের খেলার ব্যাপারে। বললেন, ‘‘ডার্বি না-হলে আইএসএলেরও আকর্ষণ কমবে। আশা করছি, ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে। ডার্বি দেখা থেকেও ফুটবলপ্রেমীরা বঞ্চিত হবেন না।’’

১৯৯৭ সালে যুবভারতীতে সেই ঐতিহাসিক ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মোহনবাগানের ‘ডায়মন্ড সিস্টেম’ গুঁড়িয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। দীর্ঘ ফুটবল জীবনের সেরা ম্যাচ বাছতে বললে ওই ডার্বির কথাই উল্লেখ করেন তিনি। শিলিগুড়ি থেকে ফোনে ভাইচুং বললেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের সেরা আকর্ষণ ডার্বি। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দ্বৈরথ না হলে কিন্তু বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’’ ভাইচুংয়ের ব্যাখ্যা, ‘‘ডার্বির আবহ অন্যান্য ম্যাচের মতো নয়। ফুটবলারদের মধ্যে বাড়তি তাগিদ থাকে নিজেকে উজা়ড় করে দেওয়ার। প্রবল চাপের মধ্যে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলাটাও ফুটবলারদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। আমি নিজেও প্রচণ্ড উত্তেজিত থাকতাম ডার্বি নিয়ে।’’ প্রাক্তন সতীর্থ বিজয়নের মতো ভাইচুংও আশাবাদী ডার্বি ফের দেখার ব্যাপারে। বললেন, ‘‘ডার্বি না হলে তা দুই ক্লাবের সমর্থকদের কাছেই বড় ধাক্কা। তবে আমি মনে করি, ইস্টবেঙ্গলও এক দিন আইএসএলে খেলবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy