Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সেই চোটের পরে হিউজের কথা মনে পড়েছিল স্মিথের

মাটিতে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় স্মিথের মনে ভেসে উঠেছিল একটা মুখ। সেই মুখ ছিল প্রয়াত ফিল হিউজের।

নির্ভীক: আর্চারের বিরুদ্ধে খেলার ধরনে বদল চান না স্মিথ। ফাইল চিত্র

নির্ভীক: আর্চারের বিরুদ্ধে খেলার ধরনে বদল চান না স্মিথ। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৫
Share: Save:

ঠিক কী মনে হয়েছিল স্টিভ স্মিথের যখন জোফ্রা আর্চারের বাউন্সার তাঁর ঘাড়ে এসে লাগে?

মাটিতে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় স্মিথের মনে ভেসে উঠেছিল একটা মুখ। সেই মুখ ছিল প্রয়াত ফিল হিউজের। পাঁচ বছর আগে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে একই ভাবে বাউন্সারে ঘাড়ে চোট পেয়ে মৃত্যু হয়েছিল অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান হিউজের।

লর্ডসে, দ্বিতীয় টেস্টে চোট পেয়েছিলেন স্মিথ। এ বার হেডিংলে টেস্টের পরে সাংবাদিকদের সামনে সেই ঘটনার কথা বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যান। ‘‘আমার ঘাড়ের নীচে যখন বলটা লাগল, তখন কয়েক বছর আগের একটা ঘটনার স্মৃতি ভেসে উঠেছিল। বুঝতেই পারছেন আমি কী বলতে চাইছি,’’ বলেছেন স্মিথ। এর পরে আস্তে আস্তে ধাতস্থ হন তিনি। তবে মানসিক ভাবে যে ভেঙে পড়েননি, তা বলেছেন স্মিথ।

প্রাথমিক ভাবে ‘কংকাশন টেস্ট’ পাশ করে যান অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক। ব্যাট করতেও নেমে পড়েন। কিন্তু পরে আবার ‘কংকাশন’-এর লক্ষণ দেখা যায় তাঁর মধ্যে। কী রকম ছিল সেই অনুভূতি? স্মিথ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মদ্যপান করলে যে রকম হয়, অনেকটা সে রকম। স্মিথের মন্তব্য, ‘‘সে দিন সন্ধ্যা থেকে মাথাটা ঝিমঝিম করতে শুরু করে। ডাক্তার আমার কাছে জানতে চান, কী রকম লাগছে? আমি বলি, মনে হচ্ছে গত কাল রাতে ছ’টা বিয়ার খেয়েছি আর এখনও ঘোর কাটেনি। এই ঝিমঝিম ভাবটা আরও দু’দিন ছিল। দুর্ভাগ্য, তবে কী আর করা যাবে। একটা দারুণ টেস্ট (হেডিংলে) ম্যাচ আমাকে বাইরে বসে থাকতে হল।’’

একের পর এক পরীক্ষায় পাশ করে, নেটে মিচেল স্টার্কদের বলে খেলে এখন ফের মাঠে নামার জন্য তৈরি স্মিথ। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ডার্বিশায়ারের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামবেন তিনি। সেখানে যদি কোনও সমস্যা না হয়, তা হলে চতুর্থ টেস্টের জন্য আবার অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরবেন স্মিথ।

এই ভাবে চোট পাওয়া সত্ত্বেও আর্চারের বিরুদ্ধে খেলার ধরন বদলাবেন না চলতি অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির মালিক। স্মিথ পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমার ব্যাটিং স্টাইল বদলানোর কোনও প্রশ্নই নেই। অনেকেই বলছেন, আর্চার নাকি আমাকে চাপে ফেলে দেবে। কিন্তু ভুলবেন না, ও আমাকে আউট করতে পারেনি। লর্ডসের উইকেটে একটু অসমান বাউন্স ছিল। যেখানে ওর বলটা আমার মাথায় লাগে। অন্যান্য বোলারকে আমি বেশি খেলেছি। ওরা আমাকে বেশি আউটও করেছে। কিন্তু আর্চার আউট করতে পারেনি।’’

স্মিথ অবশ্য ভালই জানেন, তাঁকে এ বার আরও বেশি শর্ট পিচ বোলিংয়ের মুখে পড়তে হবে। তবে তা নিয়ে আদৌ চিন্তিত তিনি। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক বলে দিচ্ছেন, ‘‘ওরা যদি শর্ট বল করতে থাকে, তা হলে আমার প্যাডে বা উইকেটে লাগাতে পারবে না। আবার আমার খোঁচা দেওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে। এখন ডিউকস বলে ওরা কী কৌশল নেয়, সেটাই দেখার।’’

স্মিথকে ও রকম ভাবে আঘাত পেতে দেখে ইতিমধ্যেই দাবি উঠেছে, ব্যাটসম্যানরা যেন ‘নেক প্রোটেক্টর’ ব্যবহার করেন। যেখানে হেলমেটের পাশাপাশি ঘাড়ের সুরক্ষার জন্য বাড়তি আস্তরণ ব্যবহার করতে হয়। তবে এই ‘নেক প্রোটেক্টর’ পরলে যে তিনি খুবই অস্বস্তি বোধ করেন, সেটা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যান। স্মিথ বলেছেন, ‘‘আমিও আগে ওটা ব্যবহার করেছি। দিন কয়েক আগেই ব্যাট করার সময় আবার করলাম। কিন্তু রীতিমতো অস্বস্তি হয়েছে। আমার হৃদস্পন্দনও দুম করে বেড়ে যায়। দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল।’’ যে কারণে স্মিথ এখন হেলমেটে স্টেম গার্ড ব্যবহার করার কথা ভাবছেন। যেটা ‘নেক প্রোটেক্টর’-এর তুলনায় মাপে ছোট।

স্মিথ অবশ্য মানছেন না যে, সে দিন হেলমেটে স্টেম গার্ড থাকলে তাঁর চোট লাগত না। উল্টে বলছেন, ‘‘স্টেম গার্ড থাকলেই যে আঘাতের হাত থেকে বেঁচে যেতাম, এমনটা বলা যায় না। আমার মাথাটা যে ভাবে পিছনে চলে গিয়েছিল, আর যেখানে বল লেগেছিল, তাতে স্টেম গার্ড কোনও কাজে আসত বলে মনে হয় না।’’ তবে স্মিথ স্বীকার করেছেন, সুরক্ষার কথা মাথায় রাখতেই হবে। এবং সে কারণে তাঁকে এই সব সরঞ্জামের সঙ্গেও মানিয়ে নিতে হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy