স্টিভ স্মিথ। ফাইল চিত্র।
বল-বিকৃতি কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার পরে এক বছরের নির্বাসন কাটিয়ে বিশ্বকাপেই অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরেছিলেন স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ হওয়ায় দর্শকাসন থেকে ধেয়ে আসা বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হয় দু’জনকেই। ভারতের বিরুদ্ধে ওভালেও সেই দৃশ্য ফিরে আসে। ফিল্ডিংয়ের সময় লং-অন বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সমর্থকদের বিদ্রুপের শিকার হন স্মিথ। সে সময় ক্রিজে ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি। দর্শকদের উদ্দেশ্য করে সেই বিদ্রুপ থামানোর অনুরোধ করেন কোহালি। স্মিথকে উৎসাহ দেওয়ার ইঙ্গিতও করেন ভারতীয় অধিনায়ক। কোহালির সেই আচরণে মুগ্ধ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী স্মিথ।
২০১৭ সালে টেস্ট সিরিজে কোহালির সঙ্গে বেশ কয়েক বার বাক্যবিনিময় হয় স্মিথের। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কটাও সে সময় তলানিতে এসে ঠেকেছিল। আইসিসি-র র্যাঙ্কিংয়ে সেরা ব্যাটসম্যানের জায়গা কে দখল করবেন, তা নিয়েও দু’জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুঙ্গে। টেস্টে কোহালিকে পিছনে ফেলে শীর্ষে স্মিথ। আবার ওয়ান ডে-তে প্রথম দশে জায়গা হয়নি স্মিথের। শীর্ষে ভারতীয় অধিনায়ক। বিশ্বকাপে কোহালি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর পাশে দাঁড়ানোর পর থেকেই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক অনেক ভাল হয়েছে। করোনা আতঙ্কের মাঝে আরও মজবুত হয়ে ওঠে সেই বন্ধুত্ব। দু’জনেই যোগাযোগ রাখেন টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে। ভারতের পরিস্থিতির খবর নিতে কোহালিকে টেক্সট করেন স্মিথ। আবার অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে স্মিথের কাছে জানতে চান কোহালিও।
শনিবার এক ক্রিকেট সম্প্রচারকারী চ্যানেলের চ্যাট শোয়ে এসে ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ তোলেন স্মিথ। জানান, লং-অন বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করার সময় ভারতীয় সমর্থকেরা তাঁকে ‘প্রতারক’ বলে বিদ্রুপ করছিলেন। সে সময় কী ভাবে কোহালি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। স্মিথ বলেন, ‘‘বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে আমাকে আর ওয়ার্নারকে সমর্থকদের বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়। কোহালি নিজে এগিয়ে এসে সেই বিদ্রুপ থামানোর চেষ্টা করে। ওর সেই আচরণ সত্যি প্রশংসনীয়। আমি নিজে গিয়ে কোহালিকে বলেছিলাম, ওর এই আচরণকে আমি সমর্থন করি।’’ যোগ করেন, ‘‘ও খুবই ভাল ছেলে। ভারতীয় দলকে যে ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তা সত্যি অসাধারণ।’’ বিশ্বকাপে কোহালির ওই আচরণে মুগ্ধ আইসিসি ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কারও দেয় ভারত অধিনায়ককে।
দু’জনের মধ্যে কি নিয়মিত যোগাযোগ আছে? স্মিথের উত্তর, ‘‘মাঠের বাইরে বেশ কয়েক বার কথা হয়েছে। সম্প্রতি দু’দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি মেসেজের মাধ্যমে। মাঠের মধ্যে আমরা হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বী। ম্যাচ জেতার জন্য নিজেদের উজাড় করে দিই। মাঠের বাইরে কিন্তু সম্পর্ক অন্য রকম।’’
অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সেই সিরিজ আদৌ হবে কি না, জানা নেই। তবে ডিসেম্বরে টেস্ট সিরিজ আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সেখানেই ফুটে উঠবে বিরাট-স্মিথ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। যে সিরিজই এখন পাখির চোখ স্মিথের কাছে। ২০১৮ সালে এশিয়ার প্রথম দল হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতে ফেরে ভারত। কোহালির নেতৃত্বে। সেই সিরিজে যদিও স্মিথ ও ওয়ার্নারকে পায়নি অস্ট্রেলিয়া। বল-বিকৃতি কাণ্ডে জড়িয়ে তাঁরা তখন নির্বাসিত। এ বার ভারতের সামনে পরীক্ষা আরও কঠিন। দলের দুই স্তম্ভকে ফিরে পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
ভারতের বিরুদ্ধে এই কঠিন পরীক্ষা দিতে তৈরি স্মিথ। মনে করেন, বিশেষ দ্বৈরথ অপেক্ষা করছে ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য। স্মিথ বলেন, ‘‘ভারত খুব ভাল দল। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওদের বিরুদ্ধে খেলতে তর সইছে না। আশা করছি, একটি বিশেষ সিরিজ হতে চলেছে।’’ ৩ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে শুরু প্রথম টেস্ট। ১১ ডিসেম্বর থেকে অ্যাডিলেডে দিনরাতের টেস্ট। ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে টেস্ট মেলবোর্নে। ৩ জানুয়ারি থেকে শেষ টেস্ট শুরু সিডনিতে। তার পরে জানুয়ারিতেই শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy