Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

আর পাঁচটা দিন, একশো কুড়ি ঘণ্টা আমাকে ডুবে থাকতে দিন

গুডবাই বলা কখনওই সহজ নয়। জানি আমার শেষ টেস্টটা আবেগের হবে। এই পনেরো বছর শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলা আমার কাছে সম্মান আর সৌভাগ্যের ব্যাপার। নিজেকে পরম ভাগ্যবান মনে করি। কেরিয়ারে যে সাফল্য আর সুযোগ উপভোগ করেছি তার জন্য আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

কুমার সঙ্গকারা
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

গুডবাই বলা কখনওই সহজ নয়। জানি আমার শেষ টেস্টটা আবেগের হবে। এই পনেরো বছর শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলা আমার কাছে সম্মান আর সৌভাগ্যের ব্যাপার। নিজেকে পরম ভাগ্যবান মনে করি। কেরিয়ারে যে সাফল্য আর সুযোগ উপভোগ করেছি তার জন্য আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।

কথাটা কিন্তু হালকা ভাবে বলছি না। কারণ আমি জানি শ্রীলঙ্কা, ভারত বা এশিয়ার অন্যান্য দেশে এমন অনেক ক্রিকেটার আছে যারা আমার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিভাবান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যারা জাতীয় নির্বাচকদের নজরে পড়তে পারেনি।

আমি ভাগ্যবান কারণ আমার আবির্ভাব এমন একটা সময়ে, যখন কোচ ডাভ হোয়াটমোর আর ক্যাপ্টেন সনৎ জয়সূর্যের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের পুনর্গঠন চলছিল। টিমে তাই তরুণদের জন্য জায়গা ফাঁকা ছিল। উইকেটকিপিং-ব্যাটসম্যান হিসেবে ‘এ’ টিমের কয়েকটা ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পেরেছিলাম। সেখান থেকে ওয়ান ডে স্কোয়াডে ঢুকে পড়া আর নিজের জায়গাটা ধরে রাখতে পারা।

যাক, গত সপ্তাহের কথায় আসি। এই ক’টা দিন প্রচুর শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছি। বন্ধুবান্ধব, ফ্যান, সতীর্থ, মিডিয়া, প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রচুর ভালবাসা আর সম্মান পেয়েছি। ওঁরা যে গত কয়েক বছর ধরে আমার খেলা উপভোগ করেছেন আর আমার পাশে থেকেছেন, তার জন্য আমি আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ। দিনের শেষে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের কাজই তো লোকের বিনোদন করা।

এই ম্যাচের আগের কয়েকটা দিন আবেগ-ভালবাসা-সম্মানের তোড়ে মাঝে মধ্যে অভিভূত লাগছে। তবু চেষ্টা করছি যত বেশি সম্ভব ফোকাস ধরে রাখার। আমার ম্যানেজমেন্ট টিমকে বলে রেখেছিলাম, এই ক’টা দিন আমার ডায়রিতে যেন কোনও মিটিং বা ইন্টারভিউ না রাখে। ওরা কথামতো আমার ডায়রি সম্পূর্ণ ফাঁকা রেখেছে। এই কয়েকটা দিন ট্রেনিংয়ে প্রচুর খেটেছি আর পরিবারের সঙ্গে রিল্যাক্স করেছি।

পরের পাঁচটা দিন আমার প্রধান লক্ষ্য হল প্রতি মিনিট উপভোগ করা। আর শ্রীলঙ্কাকে সিরিজ জিততে যতটা সম্ভব সাহায্য করা। নিজের সামনে কোনও টার্গেট বা সেঞ্চুরি করার চাপ রাখছি না। প্রথম টেস্টে অপ্রত্যাশিত হারের পর পাল্টা লড়তে মুখিয়ে থাকা ভারতীয় টিমের মোকাবিলা করার প্রস্তুতিই আমার একমাত্র ফোকাস।

গল ম্যাচটা দুর্দান্ত ছিল, তাই না? টেস্ট ক্রিকেট যে কেন চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ, সেটা আবার দেখিয়ে দিল ম্যাচটা। দ্বিতীয় দিন শেষের দিকে আমাদের বোলারদের লড়াই বাদ দিলে প্রথম দু’দিন ভারত আমাদের ওপর পুরো কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিল। তবে এই ফর্ম্যাটে নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। তাই চণ্ডীমলের অসাধারণ ইনিংসের সৌজন্যে আমরাও খাদের ধার থেকে নিজেদের টেনে তুলতে পেরেছিলাম।

জিতে গল ছাড়তে পারলেও টিম জানে, কলম্বোয় আরও অনেক উন্নতি চাই। প্রথম ইনিংসে আমাদের ব্যাটিং খুব খারাপ হয়েছে। সাধারণত যার ধাক্কায় লজ্জাজনক ভাবে হারতে হত। ভারতের প্রথম ইনিংসের শুরুতেও আমাদের বোলিংয়ে শৃঙ্খলা ছিল না।

পি সারা ওভালে ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে একটা ঘনিষ্ঠ ভাবও টের পাই। এ মাঠের পিচে এমনিতে বিনোদনের ক্রিকেট হয়। মনে হয় আগামী কয়েক দিনও তাই হবে। ফাস্ট বোলাররা এখানে সাহায্য আর বাউন্স পাবে। স্পিনাররা বল টার্ন করাবে। বল ভাল ব্যাটে আসবে আর আউটফিল্ড বেশ দ্রুত, তাই ব্যাটসম্যানরাও স্বচ্ছন্দে রান করবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy