স্পেনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মোহনবাগানের তারকা হোসেবা বেইতিয়া, ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়ো রিভেরা ও এটিকে কোচ হাবাস। —ফাইল চিত্র।
করোনা-আতঙ্কে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্কের আবহ। চিন থেকে ছড়িয়ে সেই মারণ ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল এখন ইউরোপ। তালাবন্ধ রয়েছে ফ্রান্স। ইটালিতে মৃত কয়েকশো। মারাত্মক খারাপ অবস্থা স্পেনেরও। সে দেশের বেশির ভাগ শহর স্তব্ধ। আক্রান্ত কয়েক হাজার। বুলফাইটিংয়ের দেশ থেকে দুশ্চিন্তার ঢেউ এসে পড়েছে কলকাতা ময়দানেও।
দুই প্রধান তো বটেই, এ বার আইএসএল জেতা এটিকে-র স্পেনীয় কোচও দেশ ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্বেগ চেপে রাখতে পারছেন না। দেশে ফেরার পথ আপাতত বন্ধ। তাই কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর থেকে দুশ্চিন্তা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই হোসেবা বেইতিয়া-ফ্রান গনজালেজ-মারিয়ো রিভেরাদের।
ইস্টবেঙ্গল কোচ মারিয়ো তাঁর বন্ধুকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে লাল-হলুদ কোচের বন্ধুকে। লাল-হলুদ কোচ বলছেন, ‘‘হাসপাতালে ওর পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনও পরীক্ষার ফলাফল আসেনি। তবে যা খবরাখবর পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে ও আক্রান্ত হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘আমার অধিনায়কত্বের সবচেয়ে খারাপ অধ্যায়’, মাঙ্কিগেট বিতর্কে মুখ খুললেন পন্টিং
গোটা স্পেনে যেন আপৎকালীন পরিস্থিতি। বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সুপার মার্কেট আর ওষুধের দোকান ছাড়া সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সে দেশে। স্পেনের পরিস্থিতি চিন্তায় রাখছে মোহনবাগানের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম স্থপতি বেইতিয়াকে। তিনি বলছিলেন, ‘‘স্পেনের পরিস্থিতি এখানের থেকে বহু গুণে খারাপ। আমার অনেক বন্ধুকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেই দিকেই আমাদের নজর রাখতে হবে।’’
এতদিন কলকাতা থেকে করোনা-আক্রান্তের খবর আসেনি। গতকাল এ রাজ্যেও মারণ ভাইরাসের থাবা বসানোর খবর এসেছে। চারদিকে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বেইতিয়া বলছেন, ‘‘কলকাতায় তো এক জন মাত্র আক্রান্তের খবর মিলেছে। স্পেনে খোঁজ নিয়ে দেখুন কী পরিস্থিতি। দেশে মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে গিয়েছে এই ভাইরাস। কলকাতা তো তুলনায় অনেক নিরাপদ জায়গা।’’
এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। অসুস্থ এবং বয়স্কদের নিয়েই যত চিন্তা। বেইতিয়া বলছিলেন, ‘‘নিজেকে নিয়ে আমি মোটেও ভয় পাচ্ছি না। তবে বয়স্ক মানুষ এবং অসুস্থদের জন্যই আমার চিন্তা বাড়ছে। আমার ঠাকুমার বয়স এখন ৮৬। ঠাকুমা যদিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। কিন্তু যা খবর পাচ্ছি, তাতে বয়স্করাই তো এই রোগে বেশি কাবু হচ্ছেন। তাই দুশ্চিন্তা হচ্ছেই। আমার মা-বাবা ঠাকুমার দেখভাল করছেন। তবে দেশের পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।’’
করোনার থাবায় খেলাই এখন ‘আউট’ হয়ে গিয়েছে। আইপিএল পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক বছরের জন্য ইউরো কাপ পিছিয়ে গিয়েছে। আই লিগও ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে গিয়েছে। মোহনবাগান ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় স্থান নিয়েই যত লড়াই এখন। বেইতিয়া বলছেন, “এই মুহূর্তে ফুটবল আমার কাছে প্রধান নয়। এই সমস্যার সমাধান আগে করতে হবে।”
অনুশীলন বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুই প্রধানের। এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করে আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাস ফিরে গিয়েছেন স্পেনে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে তালাবন্দি করে দেওয়া হয়েছে। করোনা-ঠেকাতে স্পেনের সরকার কড়া পদক্ষেপ করেছে। হাবাস বলছিলেন, “এই মারণ ভাইরাস যাতে আর ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করেছে স্পেনের সরকার। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সীমানায় কড়াকড়ি বাড়িয়ে দিয়েছে।”
আরও পড়ুন: ‘সৌরভ-গ্রেম স্মিথ বোর্ড প্রধান, আর আমায় ব্যবহারই করছে না পাকিস্তান বোর্ড’
মোহনবাগানের তারকা ফ্রান গনজালেজের দেশ স্পেনের কর্ডোবা। সেখানকার মানুষ ঘরবন্দি। বাগান-সমর্থকদের প্রিয় ‘দ্য বস’ বলছেন, ‘‘সব জায়গার যা পরিস্থিতি কর্ডোবাতেও তাই।’’ করোনা-আতঙ্কে অনুশীলন বন্ধ। খেলা স্থগিত। তা হলে দিন কাটছে কী ভাবে? গনজালেজ বলছেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে খেলে সময় কেটে যাচ্ছে। আর অবসর সময় পেলেই আমি পড়াশোনা করি।’’
হাবাস পরিবারের কাছে ফিরতে পারলেও বাকিরা অনেকেই ফিরতে পারেননি। তাই তাঁদের চিন্তা বেড়েই চলেছে। সবার এখন একটাই প্রার্থনা, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy