দুই-প্রজন্ম: পিকের জীবনাবসানে শোকার্ত সৌরভ ও সচিন। ফাইল চিত্র
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক তাঁর। অনূর্ধ্ব-১৫ বিভাগে খেলার সময় তাঁর ফিটনেস বাড়ানোর জন্য প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ট্রেনিং করতে পাঠান বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়। ফিটনেস বৃদ্ধি তো হয়েইছে, সঙ্গে কঠোর হয়েছে মানসিকতা। ভবিষ্যতে তিনিই হয়ে উঠেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিংবদন্তি ফুটবলারের মৃত্যুতে তিনি মর্মাহত।
প্রদীপবাবুর মৃত্যুসংবাদ পেয়েই টুইটারে শোক জানান সৌরভ। করোনা আতঙ্কে স্বেচ্ছাবন্দি থাকা সৌরভ লিখেছেন, ‘‘খুব কাছের মানুষকে হারালাম। যাঁকে প্রচণ্ড শ্রদ্ধা ও সম্মান করতাম। আমার জীবনে তাঁর অবদান ভোলার নয়। আমি যখন ১৮, তখন থেকে উদ্বুদ্ধ করতেন। তাঁর ইতিবাচক মানসিকতা খুবই প্রভাবিত করত। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’’
সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার। তাঁর জীবনে প্রদীপবাবুর অবদান কতটা? কী করে প্রথম দেখা? প্রদীপবাবুর ‘পেপটক’ কী ভাবে উদ্বুদ্ধ করত তাঁকে? সব কিছু নিয়েই খোলামেলা সৌরভ। কথা শুরু করার সময়েই গলা ভারী হয়ে এল তাঁর। বলতে শুরু করলেন, ‘‘এই মানুষটিকে অনেক দিন ধরে চিনি। অনূর্ধ্ব-১৫ বিভাগ যখন খেলতে শুরু করি, বাবা তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন ট্রেনিং করতে। বাবা প্রদীপদাকে বলেছিলেন, ছেলেকে স্পোর্টসম্যান তৈরি করে দিতে হবে। তার পর থেকে শুরু হয় কঠোর পরিশ্রম, ট্রেনিং।’’ যোগ করেন, ‘‘তিনি কিংবদন্তি, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি আকর্ষিত হই তাঁর ইতিবাচক মানসিকতা দেখে। খেলার প্রতি তাঁর ভালবাসা অনুপ্রাণিত করেছিল। আমার পরিবারের সদস্যের চেয়ে কম ছিলেন না প্রদীপদা।’’
প্রদীপবাবুর ট্রেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী ছিলেন লিয়েন্ডার পেজ। তাঁকেও কিংবদন্তির কাছে ট্রেনিং করতে পাঠাতেন বাবা ভেস পেজ। সৌরভ বলছিলেন, ‘‘প্রদীপদার নির্দেশ অনুযায়ী দু’জনেই চুপচাপ ট্রেনিং করতাম। ফাঁকি দেওয়ার কথা মাথাতেই আসেনি। প্রচণ্ড সম্মান করতাম প্রদীপদাকে। পরিবারের এক সদস্যের কাছে ট্রেনিং করলে ফাঁকি দেবই বা কী করে।’’
ভারতীয় দলে খেলার পরেও ফোনে প্রদীপবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সৌরভের। যখনই ভেঙে পড়তেন, ফোনে কথা বলে নিতেন কিংবদন্তির সঙ্গে। সৌরভের কথায়, ‘‘যখনই সময় হত, প্রদীপদার সঙ্গে কথা বলতাম। তাঁর ধ্যান, জ্ঞান সব কিছু জুড়েই খেলা। একজন খেলোয়াড়ের উন্নতির জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতেন। তখন থেকেই পারফরম্যান্সের উপরে বিশ্বাসী। ‘পারব না’ শুনতে পছন্দ করতেন না। সব সময় বলতেন, প্রস্তুতির ফল অবশ্যই পাবি।’’
গ্রেগ চ্যাপেল কোচ হয়ে আসার পরে ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন সৌরভ। রানের খরাও তাঁকে ভাবাচ্ছিল। মনোবল ফেরাতে সাহায্য করেছিলেন পিকে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘যখনই দেখা হত, কোনও অনুষ্ঠান অথবা বাড়িতে, প্রদীপদার সঙ্গে কথা বলতে যেতাম। তাঁর সঙ্গে কথা বললেই অদ্ভুত অনুভূতি হত। যখন ভারতের হয়ে রান পাচ্ছিলাম না, প্রদীপদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আমার সমস্যা কোথায়?’ বলেছিলেন, ‘অত চিন্তা করিস না। মন দিয়ে খেলে যা। রান ঠিক আসবে।’ এ ভাবেই প্রত্যেক মুহূর্তে উদ্বুদ্ধ করতেন প্রদীপদা।’’ কিংবদন্তির মৃত্যুসংবাদ পেয়ে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন সৌরভ। বলছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে একেবারেই অন্য রকম সম্পর্ক ছিল প্রদীপদার। তিনি যে ভাবে জীবনযাপন করেছেন, তা প্রত্যেক খেলোয়াড়ের আদর্শ।’’
পিকে-র প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরও। তাঁর টুইট, ‘‘কিংবদন্তি ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমরা শোকাহত। তাঁর ইতিবাচক মনোভাব কখনও ভোলার নয়। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy