কারিগর: ২৭ বলে ৫৬। জয়ের রাস্তা তৈরি করে দিলেন রাহুল। ফিনিশার: আক্রমণাত্মক মেজাজে ম্যাচ শেষ করে এলেন শ্রেয়স (ডান দিকে)। ছবি: এএফপি।
নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছয় বল বাকি থাকতেই দু’শোর উপরে রান তাড়া করে ভারতের ছয় উইকেটে জয়! শুক্রবার বিকেলে যা দেখে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দল সম্পর্কে দু’টো ব্যাপারে আশ্বস্ত হলাম।
এক, বিশ্বকাপে ভারতের উইকেটকিপারের জায়গা পাকা হয়ে গিয়েছে কে এল রাহুলের নামে। দুই, চার নম্বরে খেলার জন্য ক্রিকেটার খোঁজার পালা শেষ। এসে গিয়েছে শ্রেয়স আইয়ার।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে রান তাড়া করায় ভারত এখন বিশ্বের সেরা দল। এ দিনও টস জিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ডকে। নিউজ়িল্যান্ডের মাঠগুলো আয়তনে কিছুটা ছোট। ইডেন পার্কের সে রকম মাঠে নির্ধারিত ২০ ওভারে রস টেলরেরা ২০৩-৫ তোলার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন নিউজ়িল্যান্ড বেশি রান করে ফেলেছে। কিন্তু আমি অবাক হইনি। কারণ, এই নিউজ়িল্যান্ডের বোলিং শক্তি সে রকম নয় যে, ভারতের ব্যাটিং শক্তিকে ছন্দে ফিরতে দেবে না। শেষ পর্যন্ত তা হয়ওনি। এক ওভার বাকি থাকতেই চার উইকেটে ২০৪ রান তুলে খেলা শেষ করে দেয় শ্রেয়স আইয়ার (২৯ বলে অপরাজিত ৫৮) ও মণীশ পাণ্ডে (১২ বলে অপরাজিত ১৪)।
আরও পড়ুন: দ্বৈত ভূমিকা উপভোগ করছেন লোকেশ রাহুল
আমাদের ক্রিকেট জীবনে নিউজ়িল্যান্ডের বাইশ গজে বল নড়াচড়া করত। কিন্তু এখন সাদা বলের ক্রিকেটে সেই উইকেট একদম পাটা। টিম সাউদি (০-৪৮), মিচেল স্যান্টনার (১-৫০)-দের পক্ষে রাহুল, শ্রেয়সদের বিপদে ফেলা সম্ভব হয়নি।
আনন্দবাজারে দিন কয়েক আগেই ভারতীয় দলের ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লিখেছিলাম, ঋষভ পন্থের জায়গায় উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে কে এল রাহুলকে খেলানো হোক। একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান বা বোলার সুযোগ পাবে। ভারতীয় দল ঠিক সেই রাস্তাতেই হেঁটেছে। দলে জায়গা হচ্ছে মণীশ পাণ্ডের মতো দক্ষ ক্রিকেটারের। অতীতে নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ে ঠিক এই সুবিধা নেওয়ার জন্যই আমরা উইকেটকিপার বানিয়েছিলাম রাহুল দ্রাবিড়কে। বাকিটা ইতিহাস।
একটা সময়ে কে এল রাহুল (২৭ বলে ৫৬ রান) দীর্ঘদিন খেলার সুযোগ পায়নি। হতাশা চলে এসেছিল ওর মধ্যে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে ছন্দ পেয়েছে। বদলেছে ওর মানসিকতাও। অস্ট্রেলিয়ার পরে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেও সুযোগ আসতেই তার সদ্ব্যবহার করছে ও। অ্যাশেজে স্টিভ স্মিথ মাথায় আঘাত পাওয়ার পরে যেমন অস্ট্রেলিয়ার মার্নাস লাবুশেন রান করেই চলেছে, ঠিক তেমনই ঋষভ পন্থ মাথায় আঘাত পাওয়ার পরে রাহুলও বুঝিয়ে দিচ্ছে ব্যাটসম্যান হিসেবে ও কারওর চেয়ে কম নয়। কর্নাটকের হয়ে উইকেটরক্ষা করায় বেশ সড়গড় উইকেটের পিছনে। যে মেজাজে এ দিন চারটে চার ও তিনটে ছক্কা সহযোগে রাহুলকে রান করতে দেখলাম, তাতে আমার মতে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঋষভ, সঞ্জু স্যামসনদের সুযোগ পাওয়ার কাজটা কঠিন হল।
শুরুতে রোহিত শর্মাকে (৭) আউট করে মিচেল স্যান্টনার ধাক্কা দিয়েছিল। কিন্তু অধিনায়ক বিরাট কোহালির (৪৫) সঙ্গে জুটি বেঁধে সেই চাপটা সরিয়ে দেয় রাহুলই। বিরাট এ দিন রান বাড়ানোর লক্ষ্যে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করছে। ওদের দু’জনের জুটিতে ৫০ বলে ৯৯ রানটাই ভারতের জয়ের ভিত তৈরি করে দেয়।
শেষ ৬০ বলে ভারতকে জিততে গেলে করতে হত ৮৯ রান। বিরাট আউট। শ্রেয়স আইয়ার বিদেশের মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নেমেছে। কিন্তু ছেলেটা অকুতোভয় মেজাজে চার নম্বরে ব্যাট করে জয় ছিনিয়ে আনল। দু’একটা ছোটখাটো ভুল বাদ দিলে দারুণ খেলেছে ও। ছেলেটার বড় গুণ, আগ্রাসী মেজাজে খেলে। বল নষ্ট না করে ইনিংস এগিয়ে নেয়। আবার পরিস্থিতি বুঝে মারতেও পারে। বলের উপরে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চোখ রাখে। ফলে চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে এই মুহূর্তে শ্রেয়স আইয়ার ছাড়া আর কাউকে ওই জায়গায় ভাবার প্রয়োজন পড়ছে না।।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy